গর্ভাবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব ও করণীয়

ডেস্ক এডিটর এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
গর্ভাবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব ও করণীয়
ছবি: সংগৃহীত

গর্ভকালীন সময়ে আমাদের শরীরে প্রোজেস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন নামক দুইটি হরমোন বৃদ্ধি পায় – এই হরমোন গুলোর কিছুটা নেগেটিভ এফেক্ট মনের উপর পড়। আবার গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস হবু মায়ের শরীরটা একটু দুর্বল থাকে। এছাড়াও বমি বমি ভাব, জ্বর জ্বর লাগা, খাবারে গন্ধ অনুভব হয়। একই সাথে অনাগত সন্তানের নানাবিষয়ে হবু মা একটু বেশিই চিন্তায় থাকেন। তাই অনাগত সন্তান ও হবু মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে এই সময় একটু বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, হবু মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাব গর্ভস্থ শিশুর ওপর প্রভাব বিস্তার করে। পরবর্তীতে শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গড়ে ওঠার ক্ষেত্রেও এর অনেক ভূমিকা রয়েছে। তাই গর্ভকালীন সময়ে সুস্থ বাচ্চা এবং সুস্থ মায়ের জন্য মায়ের খাবার, চেকআপ এসব যেমন গুরুত্বপূর্ণ মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখাটাও তেমনি গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব ও করণীয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হল-

এই সময় মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার দায়িত্ব গর্ভবতীর স্বামীসহ পুরো পরিবার তথা সকলের। মা যদি কর্মজীবী মহিলা হন তাহলে চাকরির জায়গার পরিবেশ এবং সহকর্মীদেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। মোট কথা পারিবারিক ও সামাজিকভাবে গর্ভবতী মায়ের প্রতি সহানুভূতি, সহমর্মিতার মাধ্যমে তাকে সাহায্য করার মানসিকতা রাখা প্রয়োজন।

এই সময়টায় অল্প পরিমাণে বারবার খাবার চেষ্টা করবেন। একটু বুঝে শুনে খেতে হবে। বিশেষ করে যেসব খাবার সহজে হজম হয় এবং পুষ্টির যোগান দেয় এমন খাবার খেতে হবে। অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে ব্রেইনে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাবে এবং মেন্টাল ইরিটেশন হবে এবং এতে অল্পতেই মন খারাপ হবে।

এ সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করবেন। কেননা পানিস্বল্পতা আপনার ডিপ্রেশনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ।
প্রতিদিন অন্তত রাতে ৮ ঘন্টা এবং দিনে ২ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। এছাড়া দিনের মধ্যে যেকোন একটা সময় বেছে নিবেন রিলাক্স করে নিজের সাথে নিজেই সময় কাটানোর জন্য। এই সময় আপনি নিজের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো নিয়ে ভাববেন এবং চেষ্টা করবেন আপনার গর্ভস্থ ফুটফুটে শিশুটির মুখ চোখে ভাসানোর জন্য। তাকে নিয়ে সুন্দর সুন্দর প্ল্যান করবেন।

হালকা, ব্যায়াম , ইয়োগা আর মাঝে মাঝে কিছু হাসির নাটক সিনেমা দেখতে পারেন। কারো গান শুনতে ভালো লাগলে এটা আপনার মনকে ভালো রাখতে খুব সাহায্য করবে।

প্রতিদিন একবার খোলা আকাশের নিচে কিছু সময়ের জন্য হলেও হাটুন এবং কাটানোর চেষ্টা করবেন। হতে পারে সেটা পার্ক কিংবা আপনার বাসার ছাদ।
ডেলিভারির সময়টা নিয়ে অনেকের মধ্যেই ভীতি কাজ করে। অতিরিক্ত টেনশন কাজ করে। এটা নিয়ে আপনি আপনার সকল ভয়ের কথা এবং প্রশ্ন আপনার চিকিৎসককে খুলে বলতে দ্বিধা করবেন না। ডাক্তার অবশ্যই আপনার এই ভীতি দূর করতে সাহায্য করবেন।
সর্বোপরি সবসময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করতে হবে নিজেকে এবং নিজের গর্ভস্থ শিশুকে সুস্থ রাখার জন্য।

লেখক : ডা. শিল্পী সাহা
বন্ধাত্ব বিদ্যায় বিশেষ প্রশিক্ষন প্রাপ্ত
সহযোগী অধ্যাপক, ডিপার্টমেন্ট অব্স এন্ড গাইনী
মেডিকেল কলেজ ফর উইমেন এন্ড হসপিটাল, উত্তরা, ঢাকা।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

গর্ভাবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব ও করণীয়

গর্ভাবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব ও করণীয়
ছবি: সংগৃহীত

গর্ভকালীন সময়ে আমাদের শরীরে প্রোজেস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন নামক দুইটি হরমোন বৃদ্ধি পায় – এই হরমোন গুলোর কিছুটা নেগেটিভ এফেক্ট মনের উপর পড়। আবার গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস হবু মায়ের শরীরটা একটু দুর্বল থাকে। এছাড়াও বমি বমি ভাব, জ্বর জ্বর লাগা, খাবারে গন্ধ অনুভব হয়। একই সাথে অনাগত সন্তানের নানাবিষয়ে হবু মা একটু বেশিই চিন্তায় থাকেন। তাই অনাগত সন্তান ও হবু মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে এই সময় একটু বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, হবু মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাব গর্ভস্থ শিশুর ওপর প্রভাব বিস্তার করে। পরবর্তীতে শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গড়ে ওঠার ক্ষেত্রেও এর অনেক ভূমিকা রয়েছে। তাই গর্ভকালীন সময়ে সুস্থ বাচ্চা এবং সুস্থ মায়ের জন্য মায়ের খাবার, চেকআপ এসব যেমন গুরুত্বপূর্ণ মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখাটাও তেমনি গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব ও করণীয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হল-

এই সময় মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার দায়িত্ব গর্ভবতীর স্বামীসহ পুরো পরিবার তথা সকলের। মা যদি কর্মজীবী মহিলা হন তাহলে চাকরির জায়গার পরিবেশ এবং সহকর্মীদেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। মোট কথা পারিবারিক ও সামাজিকভাবে গর্ভবতী মায়ের প্রতি সহানুভূতি, সহমর্মিতার মাধ্যমে তাকে সাহায্য করার মানসিকতা রাখা প্রয়োজন।

এই সময়টায় অল্প পরিমাণে বারবার খাবার চেষ্টা করবেন। একটু বুঝে শুনে খেতে হবে। বিশেষ করে যেসব খাবার সহজে হজম হয় এবং পুষ্টির যোগান দেয় এমন খাবার খেতে হবে। অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে ব্রেইনে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাবে এবং মেন্টাল ইরিটেশন হবে এবং এতে অল্পতেই মন খারাপ হবে।

এ সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করবেন। কেননা পানিস্বল্পতা আপনার ডিপ্রেশনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ।
প্রতিদিন অন্তত রাতে ৮ ঘন্টা এবং দিনে ২ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। এছাড়া দিনের মধ্যে যেকোন একটা সময় বেছে নিবেন রিলাক্স করে নিজের সাথে নিজেই সময় কাটানোর জন্য। এই সময় আপনি নিজের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো নিয়ে ভাববেন এবং চেষ্টা করবেন আপনার গর্ভস্থ ফুটফুটে শিশুটির মুখ চোখে ভাসানোর জন্য। তাকে নিয়ে সুন্দর সুন্দর প্ল্যান করবেন।

হালকা, ব্যায়াম , ইয়োগা আর মাঝে মাঝে কিছু হাসির নাটক সিনেমা দেখতে পারেন। কারো গান শুনতে ভালো লাগলে এটা আপনার মনকে ভালো রাখতে খুব সাহায্য করবে।

প্রতিদিন একবার খোলা আকাশের নিচে কিছু সময়ের জন্য হলেও হাটুন এবং কাটানোর চেষ্টা করবেন। হতে পারে সেটা পার্ক কিংবা আপনার বাসার ছাদ।
ডেলিভারির সময়টা নিয়ে অনেকের মধ্যেই ভীতি কাজ করে। অতিরিক্ত টেনশন কাজ করে। এটা নিয়ে আপনি আপনার সকল ভয়ের কথা এবং প্রশ্ন আপনার চিকিৎসককে খুলে বলতে দ্বিধা করবেন না। ডাক্তার অবশ্যই আপনার এই ভীতি দূর করতে সাহায্য করবেন।
সর্বোপরি সবসময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করতে হবে নিজেকে এবং নিজের গর্ভস্থ শিশুকে সুস্থ রাখার জন্য।

লেখক : ডা. শিল্পী সাহা
বন্ধাত্ব বিদ্যায় বিশেষ প্রশিক্ষন প্রাপ্ত
সহযোগী অধ্যাপক, ডিপার্টমেন্ট অব্স এন্ড গাইনী
মেডিকেল কলেজ ফর উইমেন এন্ড হসপিটাল, উত্তরা, ঢাকা।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: মনসুরাবাদ হাউজিং, ঢাকা-১২০৭ এজেড মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।