কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ভাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

মাসুদ রেজা ফিরোজী জেলা প্রতিনিধি, মাদারীপুর
কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ভাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ
প্রতীকী ছবি

 

মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম রাস্তি গ্রামে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে থানায় এব্যাপারে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কিশোরীর ভাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়াড় অভিযোগ উঠে। ঘটনায় পর থেকে কিশোরীর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে ।

প্রতিকার চেয়ে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।

অভিযোগ ও সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম রাস্তি গ্রামের আজিজুল পেদার ছেলে প্রান্ত পেদার (২৫) সাথে প্রতিবেশী এক কিশোরীর (১৭) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তীকে কিশোরীকে ভয়ভীতি ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্ক করে। এতে কিশোরী এক সময়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। তখন ওই কিশোরী বিয়ের জন্য প্রান্তকে চাপ দিলে এতে প্রান্ত ও তার পরিবারের লোকজন ৩০ নভেম্বর কিশোরীকে মারধর করে। পরে কিশোরীর মা বাদী হয়ে গত শনিবার ধর্ষণ ও মারধরের বিষয় মাদারীপুর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দেয়াড় পর প্রান্তর পরিবারের থেকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। এই অভিযোগের বিষয় তদন্ত করার কথা বলে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে মাদারীপুর সদর থানার এসআই কামাল হোসেন বাদী ও কিশোরীকে থানায় ডেকে আনেন। পরে এসআই কামাল হোসেন বাদীকে বিষয়টি মীমাংসা কারার জন্য হুমকি দেয়। কিন্তু কিশোরীর পরিবার মিমাংসায় যেতে রাজি হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে প্রান্তের পরিবার। মঙ্গলবার রাতে মাদারীপুর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই সাগরসহ ৪ জন ধর্ষিতা কিশোরীর বাড়িতে তল্লাসী করা কথা বলে ঘরে ঢুকে। পরে ধর্ষিতা কিশোরী ও তার ভাইকে তল্লাশি করেন। এসময় ধর্ষিতা কিশোরীর ভাইয়ের কাছে ইয়াবা পাওয়া গেছে এমন অভিযোগ এনে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী কিশোরী বলেন, পাশের বাড়ির একটি নির্মাণাধীন বিল্ডিং নিয়ে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর একাধিক বার আমাকে ধর্ষণ করে। পরে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। এই ঘটনায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। উলটো আমার ভাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।

এব্যাপারে কিশোরী মা বলেন, আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে। থানায় অভিযোগ দিলে এসআই কামাল হোসেন আমাদের মিমাংসার প্রস্তাব দেন রাজি না হলে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, মীমাংসা না হলে তোমাদের ক্ষতি হতে পারে। পরে আমার ছেলেকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান সাগর বলেন, কিশোরীর পরিবারটি অত্যান্ত গরীব। কিশোরী ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে সেই ঘটনায় পুলিশ মামলা নেয়নি। উলটো কিশোরীর ভাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে। ওই কিশোরী ভাই ইয়াবার ব্যবসা করে বা ইয়াবা সেবন করে এমনটা কখনই শুনিনি।

আরেক বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, অসহায় কিশোরী বিচার তো পেলোই না উলটো হয়রানির শিকার হলো। আমরা এর প্রতিকার চাই।

এব্যাপারে মাদারীপুর পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় অবশ্যই মামলা হবে। তবে তদন্তের জন্য মামলা নিতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিশোরীর পরিবার এইসব বিষয় একটি অভিযোগ দিয়েছে। ইয়াবার ঘটনাটি তদন্তের জন্য পুলিশের একজন সিনিয়র অফিসার নিযুক্ত করা হয়েছে। কার কাছ থেকে কীভাবে পুলিশ তথ্য পেয়ে ইয়াবা উদ্ধার করেছে বিষয়টি তদন্ত হলেই রহস্য উদ্ঘাটন হয়ে যাবে। যদি কোনো পুলিশের অপেশাদার আচরণ থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ভাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ভাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ
প্রতীকী ছবি

 

মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম রাস্তি গ্রামে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে থানায় এব্যাপারে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কিশোরীর ভাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়াড় অভিযোগ উঠে। ঘটনায় পর থেকে কিশোরীর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে ।

প্রতিকার চেয়ে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।

অভিযোগ ও সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম রাস্তি গ্রামের আজিজুল পেদার ছেলে প্রান্ত পেদার (২৫) সাথে প্রতিবেশী এক কিশোরীর (১৭) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তীকে কিশোরীকে ভয়ভীতি ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্ক করে। এতে কিশোরী এক সময়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। তখন ওই কিশোরী বিয়ের জন্য প্রান্তকে চাপ দিলে এতে প্রান্ত ও তার পরিবারের লোকজন ৩০ নভেম্বর কিশোরীকে মারধর করে। পরে কিশোরীর মা বাদী হয়ে গত শনিবার ধর্ষণ ও মারধরের বিষয় মাদারীপুর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দেয়াড় পর প্রান্তর পরিবারের থেকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। এই অভিযোগের বিষয় তদন্ত করার কথা বলে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে মাদারীপুর সদর থানার এসআই কামাল হোসেন বাদী ও কিশোরীকে থানায় ডেকে আনেন। পরে এসআই কামাল হোসেন বাদীকে বিষয়টি মীমাংসা কারার জন্য হুমকি দেয়। কিন্তু কিশোরীর পরিবার মিমাংসায় যেতে রাজি হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে প্রান্তের পরিবার। মঙ্গলবার রাতে মাদারীপুর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই সাগরসহ ৪ জন ধর্ষিতা কিশোরীর বাড়িতে তল্লাসী করা কথা বলে ঘরে ঢুকে। পরে ধর্ষিতা কিশোরী ও তার ভাইকে তল্লাশি করেন। এসময় ধর্ষিতা কিশোরীর ভাইয়ের কাছে ইয়াবা পাওয়া গেছে এমন অভিযোগ এনে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী কিশোরী বলেন, পাশের বাড়ির একটি নির্মাণাধীন বিল্ডিং নিয়ে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর একাধিক বার আমাকে ধর্ষণ করে। পরে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। এই ঘটনায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। উলটো আমার ভাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।

এব্যাপারে কিশোরী মা বলেন, আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে। থানায় অভিযোগ দিলে এসআই কামাল হোসেন আমাদের মিমাংসার প্রস্তাব দেন রাজি না হলে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, মীমাংসা না হলে তোমাদের ক্ষতি হতে পারে। পরে আমার ছেলেকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান সাগর বলেন, কিশোরীর পরিবারটি অত্যান্ত গরীব। কিশোরী ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে সেই ঘটনায় পুলিশ মামলা নেয়নি। উলটো কিশোরীর ভাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে। ওই কিশোরী ভাই ইয়াবার ব্যবসা করে বা ইয়াবা সেবন করে এমনটা কখনই শুনিনি।

আরেক বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, অসহায় কিশোরী বিচার তো পেলোই না উলটো হয়রানির শিকার হলো। আমরা এর প্রতিকার চাই।

এব্যাপারে মাদারীপুর পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় অবশ্যই মামলা হবে। তবে তদন্তের জন্য মামলা নিতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিশোরীর পরিবার এইসব বিষয় একটি অভিযোগ দিয়েছে। ইয়াবার ঘটনাটি তদন্তের জন্য পুলিশের একজন সিনিয়র অফিসার নিযুক্ত করা হয়েছে। কার কাছ থেকে কীভাবে পুলিশ তথ্য পেয়ে ইয়াবা উদ্ধার করেছে বিষয়টি তদন্ত হলেই রহস্য উদ্ঘাটন হয়ে যাবে। যদি কোনো পুলিশের অপেশাদার আচরণ থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত