চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে ১৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ২২ জন। গোলাগুলিতে বন্দুকধারীরও মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রাগের চার্লস ইউনিভার্সিটির ঘটে যাওয়া এ হত্যাযজ্ঞকে চেক প্রজাতন্ত্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হত্যাকাণ্ড বলে অভিহিত করা হচ্ছে।
এদিন ১৩৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত চার্লস ইউনিভার্সিটির আর্টস ফ্য়াকাল্টিতে এক বন্দুকধারী গুলি চালাতে শুরু করে। প্রাগ পুলিশের ধারণা, ওই বন্দুকধারী বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র। সে তার বাবাকেও হত্যা করেছে।
তবে এই হামলার সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের যোগসূত্রের কথা নাকচ করে দিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ঘটনার পরপরই পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ। সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নোভা টেলিভিশনের রিপোর্ট বলছে, ঘটনাস্থলে একটি বিস্ফোরণও হয়েছে। বন্দুকধারী একটি বাড়ির ছাদে গিয়ে গুলি চালাতে থাকে।
অধ্যাপকরা জানিয়েছেন, তারা পুলিশ আসার আগে পর্যন্ত নিজেদের ঘর বন্ধ করে বসেছিলেন। পুলিশ প্রথমে সবাইকে ভেতরেই থাকতে বলে। তারা কিছুক্ষণ পর জানায়, বন্দুকধারী এখন মৃত।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, বন্দুকধারীর কোনো সহযোগী ছিল না। তার কাছ থেকে প্রচুর অস্ত্র পাওয়া গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর সফর বাতিল
ঘটনার সময় চেক প্রধানমন্ত্রী ফিয়ালা দেশের পূর্বপ্রান্তে ছিলেন। তিনি তার কর্মসূচি বাতিল করে প্রাগে ফিরে এসেছেন। তিনি এক্স-এ লিখেছেন, ফ্য়াকাল্টি অব আর্টসে এই শোকাবহ ঘটনার পর আমি সব কর্মসূচি বাতিল করে প্রাগে ফিরে এসেছি।
সবাইকে প্রাগের পুলিশ ও উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে সহযোগিতা আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবক এই ঘটনায় শোক জানিয়ে বলেছেন, “প্রাগের এই ঘটনা ইউরোপের হৃদয়ে ধাক্কা দিয়েছে। আমরা শোকার্ত। মৃতের পরিবার-পরিজনদের সমবেদনা জানাচ্ছি।”
চেক প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট পাভেল বলেছেন, তিনি স্তম্ভিত। মৃতের পরিবার ও আত্মীয়দের কাছে শোক প্রকাশ করেছেন তিনি।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেছেন, “এতজন মানুষ এই নিরর্থক সহিংসতার বলি হলেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না।”
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই গুলির ঘটনা মর্মান্তিক। প্রেস সেক্রেটারি বলেন, “জো ও জিল বইডেন মৃতের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করেছেন।”
চেক প্রজাতন্ত্রে এমন ঘটনা বিরল
সাংবাদিক আয়ান উইলঘবি ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, “চেক প্রজাতন্ত্রে এমন গুলি চালনার ঘটনা খুবই বিরল। যুক্তরাষ্ট্রের মতো এখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গুলি চলে না।”
প্রাগের মেয়র সরকারি টিভিতে বলেছেন, “দুঃখের কথা হলো, আমাদের বিশ্বের বদল ঘটছে। এখানেও বন্দুকধারীর তাণ্ডব শুরু হলো”