প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গোপালগঞ্জে যাচ্ছেন। পঞ্চমবার সরকার গঠনের পর সরকারপ্রধান হিসেবে এটা তার প্রথম সফর।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন শেখ হাসিনা। এ সফরে তিনি তার নিজ নির্বাচনি এলাকা টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
সফরকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। জেলার সর্বত্র নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা।
সফরের প্রথম দিন সকালে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরে নবগঠিত মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের নিয়ে তিনি জাতির জনকের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা জানাবেন। এসময় তার পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত থাকবেন।
এদিন বিকেলে তিনি টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এসময় উপজেলা আওয়ামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন বলে জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে।
শনিবার রাতে টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাসভবনে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। পরদিন রবিবার বিকেলে কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। এরপরই সড়ক পথে ঢাকায় ফিরবেন শেখ হাসিনা।
এদিকে, শেখ হাসিনার সফরকে কেন্দ্র করে তার নির্বাচনি এলাকার মানুষের মধ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তারা।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল বলেন, “শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর টুঙ্গিপাড়ায় আসছেন। টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার ভোটাররা প্রধানমন্ত্রীকে স্বতস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তাই প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবেন। নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাবেন।”
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে আসছেন। ৭ জানুযারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোটে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। তাই তার আগমনে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ খুশিতে উদ্বেলিত। কারণ টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার মানুষের ভোটে তিনি পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। এজন্য দুই উপজেলার মানুষের মধ্যে আনন্দ, উল্লাস ও উচ্ছ্বাসটা একটু অন্যরকম।”
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেন, “আগামী ১৪ জানুযারি প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়ার নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নেতাকর্মীরা মন খুলে কথা বলবেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের কথা শুনবেন ও বলবেন। তার কাছে আমাদের কোনো কিছু চাওয়া বা পাওয়ার নেই। আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া হলো আমাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে উনি পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি উনি যেন দীর্ঘজীবী হন।”
তিনি আরও বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদের সামনে মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এখানে প্রধানমন্ত্রী নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।আর প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়াবাসীকে শুভেচ্ছা জানাতে আসছেন এমন খবরে কোটালীপাড়া জুড়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে।”
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি.এম সাহাব উদ্দিন আজম বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে গোটা জেলাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। পুরো জেলায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। নেতাকর্মীরা মুখিয়ে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে একনজর দেখার জন্যে। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনি এলাকা টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ায় পৃথক দুইটি শুভেচ্ছা বিনিমিয় অনুষ্ঠানে তিনি নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানাবেন। নেতাকর্মীরা এখন অধীর আগ্রহে উৎসবের প্রহর গুণছেন।”
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সফরকে উৎসবমুখর করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবার সমন্বয়ে সব প্রস্তুতি যথাযথভাবে সম্পন্ন করেছি।”
