ফ্রিজে রাখবেন না যেসব খাবার

ফ্রিজে রাখবেন না যেসব খাবার
ছবি ইন্টারনেট

আধুনিক জীবন যাত্রার কাঠামোয় ফ্রিজের ব্যবহার কতটা হেল্পফুল তা আমাদের সকলেরই জানা আছে। কিন্তু আমরা খুব কমই জানি যে কিছু খাবার আছে যেসব ফ্রিজে রাখলে সেসবের স্বাদ ও পুষ্টিগুন নষ্ট হয়। পুষ্টি গুন কমে যাওয়ার পাশাপাশি সেসবের পঁচন প্রকিয়াও ত্বরান্বিত হয়। রেফ্রিজারেইটরে রাখার কারণে কিছু খাবারের স্বাদ, ঘ্রাণ ও মান নষ্ট হয়ে যায়।

রসুন: রসুন খোসা না ছাড়িয়ে রেফ্রিজারেইটরে রাখলে আর্দ্রতার কারণে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। রসুন রাখার উপযুক্ত স্থান হল ঘরে যেখানে বাতাস চলাচল করে ও শুষ্ক স্থান এবং আলো থেকে দূরে।

বাদাম: কয়েক সপ্তাহের জন্য বাদাম ভালো রাখতে চাইলে বায়ুরোধক পাত্রে সংরক্ষণ করা যায়। তবে এক মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে চাইলে রেফ্রিজারেইটরে রাখা উচিত।

মধু: মধু রেফ্রিজারেইটরে রাখার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। এতে মধু কেবল জমাটই বাঁধে এবং ব্যবহারের আগে আবার গরম হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

পেঁয়াজ: অন্ধকার ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখা ভালো। রেফ্রিজারেইটরে রাখতে চাইলে তা দ্রুত নষ্ট হয়। যদি রাখারই প্রয়োজন হয় তাহলে কুচি করে কেটে বায়ুরোধক পাত্রে সংরক্ষণ করা উচিত।

জলপাই তেল: রেফ্রিজারেইটরে রাখলে তা ঘোলাটে, দানাযুক্ত এবং ঘন হয়ে যায়। রান্নাঘরের মতো আলো কম ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখা উচিত।

আলু: ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় আলুর ‘স্টার্চ’ শর্করায় পরিণত হয়, যা ক্ষতিকারক। আলু না ধুয়ে সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখতে হবে এবং কেবল রান্না করা আলুই রেফ্রিজারেইটরে রাখা যায়।

মিষ্টি আলু: আলুর মতো মিষ্টি আলুও রেফ্রিজারেইটরে রাখলে স্বাদ ও গঠনে পরিবর্তন আসে। তাই ছায়াযুক্ত ও বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে রাখা উচিত।

রুটি: কয়েকদিনের মধ্যে রুটি খাওয়া হলে তা রেফ্রিজারেইটরে না রাখাই ভালো। আলুর মতোই শীতল তাপমাত্রা রুটির স্বাদ, গঠন পরিবর্তন করে দেয়। আর বেশিদিন রুটি সংরক্ষণ করা যায় না। ফ্রিজে রাখলেও ফাঙ্গাস পড়ার সম্ভাবনা থাকেই।

কুমড়া: কুমড়া রাখার জন্য বাতাস চলাচল করে এবং ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (৫০ ফারেন্টহাইট) কম তাপ মাত্রায় রাখা উচিত। রেফ্রিজারেইটরে রাখলে কুমড়া দ্রুত নষ্ট হয় বা শুকিয়ে যায়। অন্যথায় ভালো মতো সংরক্ষণ করা হলে তা ছয় মাস ভালো থাকে।

আম: কাঁচা আম ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করলে ভালো থাকে। রেফ্রিজারেটরে রাখলে তা পাকে দেরিতে। আর পাকা আম কেটে টুকরা করে ফ্রিজের বরফ জমার অংশে জমিয়ে রাখতে পারেন। পরে গলিয়ে খাওয়া যায়।

কফি: এই সুগন্ধি পানীয় রেফ্রিজারেইটরে রাখলে ঘ্রাণ নষ্ট হয়। এটা বায়ুরোধী পাত্রে অন্ধকার স্থানে, ঘরে সাধারণ তাপমাত্রায় রাখা উচিত। এতে এর সুগন্ধ ও স্বাদ দুটোই বজায় থাকে।

পিঠা: পিঠা বা কেক খুব বেশি ঠাণ্ডা হলে স্বাদ নষ্ট হয়। কয়েকদিন সংরক্ষণ করতে চাইলে বায়ুরোধী পাত্রে রাখা যেতে পারে। কেক যদি ক্রিম সমৃদ্ধ হয় তবে তা রেফ্রিজারেইটরে রাখা উচিত।

শুকনা ফল: শুকনা ফল রেফ্রিজারেইটরে রাখলে অযাচিত আর্দ্রতা এর মান নষ্ট করে দেয়। এগুলো শুষ্ক, অন্ধকার ও বায়ুরোধী পাত্রে রাখা প্রয়োজন। এতে এক বছর পর্যন্ত ভালো রাখা যায়।

গুঁড়া মসলা: শুকনা গুঁড়া মসলা রেফ্রিজারেইটরে রাখলে দ্রুত নষ্ট হয়। এর মেয়াদ অক্ষুণ্ন রাখতে অন্ধকার ও শুষ্ক স্থানে এবং অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ায় রাখা উচিত।

টমেটো কেচাপ: টমেটো কেচাপে উচ্চ মাত্রায় ভিনিগার, লবণ ও চিনি থাকায় তা ঘরের সাধারণ তাপমাত্রায় রাখাই ভালো।

সয়া সস: এর লেবেলে রেফ্রিজারেইটরে সংরক্ষণ করা কথা বলা হলেও ঘরের সাধারণ তাপমাত্রায় তা ছয় মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।

ভেষজ: তুলসী, ধনিয়া, পুদিনা ইত্যাদির মতো টাটকা ভেষজ খাবার রেফ্রিজারেইটরে রাখলে দ্রুত নিস্তেজ ও স্বাদহীণ হয়ে যায়।

টমেটো: রেফ্রিজারেইটরে টমেটো রাখলে সহজে নরম ও জলীয় হয়ে যায়। ফলে স্বাদ নষ্ট হয়। টমেটো সংরক্ষণের জন্য খোলামেলা, বাতাস চলাচল করে, রোদ পড়ে না এরকম জায়গাই যথেষ্ট।

পাউরুটি

বেকারি বিশেষজ্ঞরা পাউরুটি ফ্রিজে না রাখারই কথা বলেন। ফ্রিজে রাখলে নিম্ন তাপমাত্রার কারণে পাউরুটি শুকিয়ে যায় এবং স্বাভাবিক ভাবে চিবানো অসম্ভভ হয়ে পড়ে।

আপেল

আপেলের মিষ্টি ও রসালো স্বাদ অক্ষত রাখার জন্য সবসময় স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখতে হবে। ফ্রিজে রাখলে আপেলে স্বাদ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি এর চামড়াটাও শুকিয়ে যায় এবং স্বাভাবিক কচকচে ভাবটি হারায়।

কেচআপ এবং সয়া সস

এগুলো ফ্রিজের বাইরে রাখলেই ভালো থাকবে।

আচার

আচারও স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখতে হয়।

তরমুজ

ফ্রিজে বেশিক্ষণ রাখলে স্বাদ নষ্ট হয়। তবে কাটার পর তিন থেকে চার ঘন্টা ফ্রিজে রাখা যায়।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ফ্রিজে রাখবেন না যেসব খাবার

ফ্রিজে রাখবেন না যেসব খাবার
ছবি ইন্টারনেট

আধুনিক জীবন যাত্রার কাঠামোয় ফ্রিজের ব্যবহার কতটা হেল্পফুল তা আমাদের সকলেরই জানা আছে। কিন্তু আমরা খুব কমই জানি যে কিছু খাবার আছে যেসব ফ্রিজে রাখলে সেসবের স্বাদ ও পুষ্টিগুন নষ্ট হয়। পুষ্টি গুন কমে যাওয়ার পাশাপাশি সেসবের পঁচন প্রকিয়াও ত্বরান্বিত হয়। রেফ্রিজারেইটরে রাখার কারণে কিছু খাবারের স্বাদ, ঘ্রাণ ও মান নষ্ট হয়ে যায়।

রসুন: রসুন খোসা না ছাড়িয়ে রেফ্রিজারেইটরে রাখলে আর্দ্রতার কারণে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। রসুন রাখার উপযুক্ত স্থান হল ঘরে যেখানে বাতাস চলাচল করে ও শুষ্ক স্থান এবং আলো থেকে দূরে।

বাদাম: কয়েক সপ্তাহের জন্য বাদাম ভালো রাখতে চাইলে বায়ুরোধক পাত্রে সংরক্ষণ করা যায়। তবে এক মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে চাইলে রেফ্রিজারেইটরে রাখা উচিত।

মধু: মধু রেফ্রিজারেইটরে রাখার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। এতে মধু কেবল জমাটই বাঁধে এবং ব্যবহারের আগে আবার গরম হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

পেঁয়াজ: অন্ধকার ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখা ভালো। রেফ্রিজারেইটরে রাখতে চাইলে তা দ্রুত নষ্ট হয়। যদি রাখারই প্রয়োজন হয় তাহলে কুচি করে কেটে বায়ুরোধক পাত্রে সংরক্ষণ করা উচিত।

জলপাই তেল: রেফ্রিজারেইটরে রাখলে তা ঘোলাটে, দানাযুক্ত এবং ঘন হয়ে যায়। রান্নাঘরের মতো আলো কম ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখা উচিত।

আলু: ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় আলুর ‘স্টার্চ’ শর্করায় পরিণত হয়, যা ক্ষতিকারক। আলু না ধুয়ে সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখতে হবে এবং কেবল রান্না করা আলুই রেফ্রিজারেইটরে রাখা যায়।

মিষ্টি আলু: আলুর মতো মিষ্টি আলুও রেফ্রিজারেইটরে রাখলে স্বাদ ও গঠনে পরিবর্তন আসে। তাই ছায়াযুক্ত ও বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে রাখা উচিত।

রুটি: কয়েকদিনের মধ্যে রুটি খাওয়া হলে তা রেফ্রিজারেইটরে না রাখাই ভালো। আলুর মতোই শীতল তাপমাত্রা রুটির স্বাদ, গঠন পরিবর্তন করে দেয়। আর বেশিদিন রুটি সংরক্ষণ করা যায় না। ফ্রিজে রাখলেও ফাঙ্গাস পড়ার সম্ভাবনা থাকেই।

কুমড়া: কুমড়া রাখার জন্য বাতাস চলাচল করে এবং ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (৫০ ফারেন্টহাইট) কম তাপ মাত্রায় রাখা উচিত। রেফ্রিজারেইটরে রাখলে কুমড়া দ্রুত নষ্ট হয় বা শুকিয়ে যায়। অন্যথায় ভালো মতো সংরক্ষণ করা হলে তা ছয় মাস ভালো থাকে।

আম: কাঁচা আম ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করলে ভালো থাকে। রেফ্রিজারেটরে রাখলে তা পাকে দেরিতে। আর পাকা আম কেটে টুকরা করে ফ্রিজের বরফ জমার অংশে জমিয়ে রাখতে পারেন। পরে গলিয়ে খাওয়া যায়।

কফি: এই সুগন্ধি পানীয় রেফ্রিজারেইটরে রাখলে ঘ্রাণ নষ্ট হয়। এটা বায়ুরোধী পাত্রে অন্ধকার স্থানে, ঘরে সাধারণ তাপমাত্রায় রাখা উচিত। এতে এর সুগন্ধ ও স্বাদ দুটোই বজায় থাকে।

পিঠা: পিঠা বা কেক খুব বেশি ঠাণ্ডা হলে স্বাদ নষ্ট হয়। কয়েকদিন সংরক্ষণ করতে চাইলে বায়ুরোধী পাত্রে রাখা যেতে পারে। কেক যদি ক্রিম সমৃদ্ধ হয় তবে তা রেফ্রিজারেইটরে রাখা উচিত।

শুকনা ফল: শুকনা ফল রেফ্রিজারেইটরে রাখলে অযাচিত আর্দ্রতা এর মান নষ্ট করে দেয়। এগুলো শুষ্ক, অন্ধকার ও বায়ুরোধী পাত্রে রাখা প্রয়োজন। এতে এক বছর পর্যন্ত ভালো রাখা যায়।

গুঁড়া মসলা: শুকনা গুঁড়া মসলা রেফ্রিজারেইটরে রাখলে দ্রুত নষ্ট হয়। এর মেয়াদ অক্ষুণ্ন রাখতে অন্ধকার ও শুষ্ক স্থানে এবং অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ায় রাখা উচিত।

টমেটো কেচাপ: টমেটো কেচাপে উচ্চ মাত্রায় ভিনিগার, লবণ ও চিনি থাকায় তা ঘরের সাধারণ তাপমাত্রায় রাখাই ভালো।

সয়া সস: এর লেবেলে রেফ্রিজারেইটরে সংরক্ষণ করা কথা বলা হলেও ঘরের সাধারণ তাপমাত্রায় তা ছয় মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।

ভেষজ: তুলসী, ধনিয়া, পুদিনা ইত্যাদির মতো টাটকা ভেষজ খাবার রেফ্রিজারেইটরে রাখলে দ্রুত নিস্তেজ ও স্বাদহীণ হয়ে যায়।

টমেটো: রেফ্রিজারেইটরে টমেটো রাখলে সহজে নরম ও জলীয় হয়ে যায়। ফলে স্বাদ নষ্ট হয়। টমেটো সংরক্ষণের জন্য খোলামেলা, বাতাস চলাচল করে, রোদ পড়ে না এরকম জায়গাই যথেষ্ট।

পাউরুটি

বেকারি বিশেষজ্ঞরা পাউরুটি ফ্রিজে না রাখারই কথা বলেন। ফ্রিজে রাখলে নিম্ন তাপমাত্রার কারণে পাউরুটি শুকিয়ে যায় এবং স্বাভাবিক ভাবে চিবানো অসম্ভভ হয়ে পড়ে।

আপেল

আপেলের মিষ্টি ও রসালো স্বাদ অক্ষত রাখার জন্য সবসময় স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখতে হবে। ফ্রিজে রাখলে আপেলে স্বাদ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি এর চামড়াটাও শুকিয়ে যায় এবং স্বাভাবিক কচকচে ভাবটি হারায়।

কেচআপ এবং সয়া সস

এগুলো ফ্রিজের বাইরে রাখলেই ভালো থাকবে।

আচার

আচারও স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখতে হয়।

তরমুজ

ফ্রিজে বেশিক্ষণ রাখলে স্বাদ নষ্ট হয়। তবে কাটার পর তিন থেকে চার ঘন্টা ফ্রিজে রাখা যায়।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত