ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা। বারবার বিতর্ক সঙ্গী হয়েছে তার। তবে সমানতালে কাজ করেছেন এই অভিনেত্রী। পেয়েছেন প্রশংসা। কিন্তু এরপরও জীবন নিয়ে যেন কিছুটা হতাশাই তার কণ্ঠে! এমনটাই জানালেন তিনি নিজেই।
সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে প্রভা নিজের জীবনের নানা উপলব্ধি তুলে ধরেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো।
প্রভা বলেন, ‘‘হয়তো আমি এখনো জানি না, আমার এই জীবনে আমি ঠিক কী চাই। কিন্তু আমি সত্যিই জানি, আমি কী চাই না।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমি কষ্টকর ও অগোছালো জীবন, বিষাক্ত সম্পর্ক, অসৎ অভিপ্রায়, অনিশ্চিত অনুভূতি অথবা অস্থায়ী মানুষের সান্নিধ্য না। ঘুমানোর আগে, দুঃখের দিনে বা বেদনাদায়ক কোনো রাতে আমি আর কাঁদতে চাই না। আমি শুধু চাই, সবকিছু ভুলে নতুন করে শুরু করতে।’’
অভিনয়ে কম দেখা যাওয়ার কারণ তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘‘একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে বলতে পারি, অনেক না-বলা অভিযোগ, না-বলা দুঃখ আছে। অনেক মানুষের দেওয়া অকারণ অপমান হজম করেছি। এসব কারণে আমি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। এই সেক্টরে আমি যখন কাজ করতে এসেছিলাম, তখন মনে করেছিলাম, পা ফেলতে হবে অনেক স্মার্টলি। এতটুকুই। সেই আমি একটা সময় নানা রকম পলিটিকসের শিকার হব, মিডিয়াতে কাজ করলেই মেয়েটা খারাপ বা মেয়েটাকে অনেক কথা শুনতে হবে, এমনটা ভাবিনি। আরও কিছু বিষয় আছে।’’
প্রভা বলেন, ‘‘অনেক বড় বিষয় হচ্ছে, কয়েক বছর ধরে সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন। অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে ইউনিটে থাকা প্রায় সবারই ফেসবুক পেজ, টিকটক অ্যাকাউন্ট ও ইউটিউব প্ল্যাটফর্ম আছে। এসবের কারণে শুটিং সেটে স্মার্টফোনের অপব্যবহার হয়। এর বাইরে অনেকে শুটিং দেখতেও আসেন। যদিও ইদানীং কিছুটা কঠোর হয়েছে ঠিকই, কিন্তু পুরোপুরি নয়। অথচ আগে দেখতাম, নাটক-টেলিছবি প্রচারের আগে দূর থেকে ক্যাপচার করা একটা ভিডিও ক্লিপ টিকটক, ফেসবুক, ইউটিউবে ছাড়া হয়েছে। অপেশাদার ওরা তো আর জানে না, ক্যামেরা কেমন করে ধরতে হয়, দেখা গেছে ভালগার ওয়েতে ধরছে। ওসব দেখে আমি কষ্ট পেয়েছি। আমি তো এখানে কাজ করতে আসছি। অভিনয়দক্ষতা দেখাতে আসছি। এর বাইরে ব্যক্তিগত কিছু বিষয়ও ছিল।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমি যাকে কিংবা যাদের সহশিল্পীর চেয়ে ভালো বন্ধুও মনে করতাম, তাদের কিছু কর্মকাণ্ডও আমাকে আহত করেছে। এমনও দেখেছি, কোনো কোনো সহশিল্পী আছেন, তাদের ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউব আছে, ভিউ পাওয়ার জন্য শুটিং সেটে এমন কিছু অ্যাকটিভিটি করেন, যেটার কোনো অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন পর্যন্ত মনে করেননি! আমারই একজন সহকর্মীকে প্রায়ই দেখেছি, অনুমতি ছাড়াই এমন কর্মকাণ্ড। তার সহকারী ক্যামেরা চালাচ্ছেন, অথচ সেটা শুটিংয়ের কিছু না, যেটার জন্য বিব্রতবোধ করেছি! এসব যে সেই সহশিল্পী ইচ্ছাকৃত করতেন, তা ভিডিও ক্লিপগুলো প্রকাশের পর বোঝা যেত। ওই সহশিল্পীকে প্রায় সময় আরও অনেকের সঙ্গে এমন আচরণ করতে দেখি। এসব ভিডিও ক্লিপ ইউটিউব বা টিকটকে দেখতাম, আমাকে মানসিকভাবে খুব বিপর্যস্ত করেছে।’’