‘দেশে এবং বিশ্বব্যাপী গণবিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ, ঘৃণার সৃষ্টি হয়েছে— তা প্রশমিত করার ব্যর্থ চেষ্টায় নিহতদের পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার নামে, জোর করে ধরে এনে মায়াকান্নার নামে ফটোসেশন করছেন অবৈধ সরকার প্রধান,’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘হত্যাকারীদের খোঁজার কথা বলে প্রকৃত হত্যাকারীদের আড়াল করতে প্রতারণা করা হচ্ছে শহীদ পরিবারের সঙ্গে।’
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, ‘এখন কারফিউ জারি রেখে, সেনা মোতায়েন করে, কঠোর প্রেস সেন্সরশিপ দিয়ে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রেখে, শক্তি প্রয়োগ করে, গুম ও গ্রেফতার অব্যাহত রেখে, রাজনীতি ও গণতন্ত্রের গলা চেপে ধরে হতাযজ্ঞের সাফাই গাইছেন এবং উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর ষড়যন্ত্র করছেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশে জরুরি অবস্থা জারি না করা সত্ত্বেও সভা, সমাবেশ, বিক্ষোভ না করতে দেওয়া এবং হামলা, গ্রেফতার করা সরকারের অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ মাত্র।’
‘নিরাপত্তার নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ অন্যান্য সমন্বয়ককে হাসপাতাল থেকে জোরপূর্বক ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ে তুলে এনে, তাদের ওপর বল প্রয়োগ করে, ডিবি কার্যালয়েই নজিরবিহীনভাবে স্ক্রিপ্ট ধরিয়ে দিয়ে— তাদেরকে দিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহার করানোর নাটক সাজানো হয়েছে’, বলে মন্তব্য করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘সরকার কত দেউলিয়া হয়ে পড়েছে, তা ডিবি হেফাজতে আটক রাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ওপর বল প্রয়োগ করে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে বাধ্য করার ঘটনায় অনুমান করা যায়।’
এসময় বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমি ডিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দফতর, সংস্থার কমকর্তা, কর্মচারীদের প্রতি গণবিরোধী সরকারের নির্দেশে আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি এবং ডিবি হেফাজতে থাকা ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘অবৈধ সরকার প্রধানের অহেতুক রাগ, ক্ষোভ, অহঙ্কার, অহমিকা, দম্ভ, কটূক্তি, অবহেলা, অবজ্ঞা এবং আলোচনার পরিবর্তে কূটকৌশল ও শক্তি প্রয়োগ করে দমনের হিংসাত্মক মনোভাব শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতা ছড়িয়েছে। তাদের নির্দেশেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ছাত্রলীগ, যুবলীগের ক্যডাররা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শত শত লাশ ফেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে।’
মির্জা ফখরুল আবারও কারফিউ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া, সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে রাজনীতিকে উন্মুক্ত করা, নিষ্ঠুর দমন নিপীড়ন বন্ধ, গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি করছি। রাজনৈতিক সংকট সমাধানে রাজনৈতিক উদ্যোগ প্রয়োজন।’