রাঙামাটির নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভাণ্ডারে যেন বিশেষ সংযোজন—রাজস্থলী উপজেলার একমাত্র ঝুলন্ত সেতু। স্থানীয়দের কাছে এটি শুধু যাতায়াতের মাধ্যম নয়, বরং রাজস্থলীর পরিচয়, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক। ১৯৮৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীর ডেয়ারিং টাইগার্সের উদ্যোগে উদ্বোধনের পর থেকে প্রায় চার দশক ধরে সেতুটি পাহাড়ি-বাঙালি জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকার সাথে মিশে গেছে।
সারেজমিনে দেখা যায়, কাপ্তাই খালের বুক চিরে প্রায় ৩০-৪০ ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে থাকা এই সেতুটি প্রতিদিন শত শত মানুষের ভরসা। কৃষক থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী—সবার জীবনযাত্রা প্রতিদিন এই সেতুর উপর দিয়েই চলছে। ফলে সেতুটি এখন আর নিছক একটি স্থাপনা নয়, বরং স্থানীয় অর্থনীতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অপরিহার্য অংশ।
এদিকে, রাজস্থলীর এই ঝুলন্ত সেতুর গুরুত্ব শুধু ব্যবহারিক নয়। এটি এখন পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। দূরদূরান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা এসে সেতুর উপর দাঁড়িয়ে প্রকৃতির অপরূপ রূপে হারিয়ে যান। সাপ্তাহিক ছুটি বা উৎসবের দিনে সেতুপাড়ায় তৈরি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ। ফলে রাজস্থলীর এই সেতুটি ধীরে ধীরে রাঙামাটির পর্যটন মানচিত্রেও জায়গা করে নিচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও পর্যটকবান্ধব অবকাঠামো তৈরি হলে ঝুলন্ত সেতুকে ঘিরে বিশাল পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব। এতে একদিকে যেমন স্থানীয় অর্থনীতির চাকা ঘুরবে, অন্যদিকে রাজস্থলীর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়বে।