মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের চুক্তিতে অনিয়ম ও সরকারি শতকোটি টাকার ক্ষতির অভিযোগে দুদক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছয় মন্ত্রী ও সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে।
দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম জানান, ২০১৬ সালে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেড (সিএনএস)-কে একক উৎসভিত্তিক দরপত্রের মাধ্যমে টোল আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পূর্বের বৈধ টেন্ডার বাতিল করে অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই চুক্তিটি সম্পন্ন করা হয়।
দুদকের অভিযোগ, সিএনএস লিমিটেড মোট আদায়কৃত টোলের ১৭.৭৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ হিসেবে কার্যাদেশ পায়। ফলে প্রতিষ্ঠানটি ৪৮৯ কোটি টাকার বেশি বিল গ্রহণ করে, যেখানে পূর্ববর্তী পাঁচ বছরে একই সেতুর জন্য খরচ হয়েছিল মাত্র ১৫ কোটি টাকা। ২০২২-২৫ মেয়াদে ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড একই প্রযুক্তিতে তিন বছরের জন্য ৬৭ কোটি টাকায় চুক্তি পায়, যা পাঁচ বছরে রূপান্তর করলে প্রায় ১১২ কোটি টাকা হয়। এ হিসেবে সিএনএস চুক্তির মাধ্যমে সরকারের ৩০৯ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক, প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সচিব এম এ এন ছিদ্দিক, অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক জলিল, উপ-সচিব মোহাম্মদ শফিকুল করিম, প্রকৌশলী মো. ফিরোজ ইকবাল, ইবনে আলম হাসান, মো. আফতাব হোসেন খান, মো. আব্দুস সালাম, এবং সিএনএস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনীর উজ জামান চৌধুরী, পরিচালক সেলিনা চৌধুরী ও ইকরাম ইকবাল।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা পরস্পর যোগসাজশে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেদের বা অন্যকে লাভবান করার উদ্দেশ্যে প্রতারণা ও আত্মসাৎমূলক কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। মামলায় দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারার আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটিত হওয়ার উল্লেখ আছে।