দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। সোমবার (১৩ অক্টোবর) রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত বিশ্ব খাদ্য ফোরামের মূল অনুষ্ঠানের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আগ্রহ জানান।
বৈঠকে দুই নেতা সামাজিক ব্যবসা, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি এবং দারিদ্র্য মোকাবিলার কৌশলসহ বিভিন্ন পারস্পরিক আগ্রহের বিষয়ে আলোচনা করেন। অধ্যাপক ইউনূস প্রেসিডেন্ট লুলাকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যা গ্রহণ করে তিনি জানান, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই তিনি বাংলাদেশ সফর করতে চান।
প্রেসিডেন্ট লুলা বলেন, ব্রাজিল তার নাগরিকদের জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগ করতে চায় এবং সামাজিক ব্যবসা ও ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে আগ্রহী। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এটি অসাধারণ হবে।”
দুই নেতা মৎস্য আহরণ, ফার্মাসিউটিক্যালস—বিশেষত টিকা পেটেন্টমুক্ত ও সাশ্রয়ী করার উদ্যোগ—এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার পদক্ষেপ নিয়ে সহযোগিতার সম্ভাবনাও আলোচনা করেন। এছাড়া ২০২৪ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশের তরুণদের নেতৃত্বে সংঘটিত আন্দোলনের প্রসঙ্গও উঠে আসে।
প্রেসিডেন্ট লুলা অধ্যাপক ইউনূসকে আগামী বছর অ্যামাজন অঞ্চলে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ৩০-এ যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। তবে অধ্যাপক ইউনূস জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতির কারণে হয়তো তিনি সেখানে অংশ নিতে পারবেন না।
বৈঠকে দুই নেতা ফুটবলকেও বৈশ্বিক ঐক্যের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে ব্রাজিল ফুটবল দলের অসংখ্য সমর্থক রয়েছে।”
বৈঠকে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম এবং ব্রাজিলের কয়েকজন মন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।
