জামালপুরের বকশীগঞ্জে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে এক বিধবা নারীর কাছ থেকে পাঁচ লাখ ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মৌলভীপাড়া দাখিল মাদরাসার সুপার আবদুস সাত্তার, সভাপতি আবদুল হামিদ ও সদস্য ফরহাদুজ্জামান ফোটার বিরুদ্ধে। দীর্ঘ ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও টাকা এবং চাকরি কোনোটাই পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী ওই নারী। এমনকি টাকা ফেরত দেওয়ার ভয়ে মাদরাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন সুপার আবদুস সাত্তার।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টাকা ফেরতের দাবিতে সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছেন ভুক্তভোগী দুই নারী। তবে তাদের আসার খবর পেয়ে সকালবেলা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান সুপার।
ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। মাদরাসার সুপার আবদুস সাত্তার ও সভাপতি আবদুল হামিদের পরামর্শে সুফিয়া আক্তার নামের ওই নারী আয়া পদে আবেদন করেন। আবেদনের পর তারা চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছয় লাখ টাকা দাবি করেন। পরে মাদরাসার সভাপতি আবদুল হামিদ, সুপার আবদুস সাত্তার ও অভিভাবক সদস্য পৌর কাউন্সিলর ফরহাদুজ্জামান ফোটার হাতে পাঁচ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রায় ছয় মাস পর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মাদরাসায় নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করেন সুপার আবদুস সাত্তার। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, আবেদনকারীরা ও ডিজি প্রতিনিধি মাদরাসায় উপস্থিত হলে এলাকাবাসী নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এ সময় সুপার, সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিলও করে তারা। এক পর্যায়ে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফলে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে সুপার আবদুস সাত্তার বলেন, ‘অফিশিয়াল কাজে অনেক সময় বাইরে থাকতে হয়। তাই হাজিরা দিয়েই চলে আসতে হয়েছে। টাকা দেওয়ার ভয়ে অফিসে যাই না, কথাটা ঠিক নয়।’ এ কথা বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।
তবে মাদরাসার সভাপতি আবদুল হামিদ ফোনে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সরোয়ার আলম বলেন, ‘নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে। সমঝোতার চেষ্টা চলছে বলে জেনেছি। সুপার ছুটি না নিয়ে মাদরাসায় অনুপস্থিত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার বলেন, ‘আমি সদ্য এ উপজেলায় যোগদান করেছি। বিষয়টি অবগত নই। বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’