ঝিনাইদহে ১শ ২২ কোটি টাকার গম উৎপাদনের আশা

রামিম খান জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহে ১শ ২২ কোটি টাকার গম উৎপাদনের আশা
ঝিনাইদহের কৃষক

রবি শস্যের মধ্যে গম একটি লাভজনক ফসল হলেও ঝিনাইদহ সহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের ৬ জেলায় ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো ব্লাস্ট রোগ দেখা দেয়। ছত্রাক জনিত এ রোগের প্রাদুর্ভাবে হাজার হাজার হেক্টর জমির গম পুড়িয়ে ফেলা সহ গম চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত ও পরপর ৩বছর গম চাষ নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর ব্লাস্ট প্রতিরোধক নতুন জাতের বীজ উদ্ভাবনের পর আবার ধীরে ধীরে গম চাষ শুরু করে কৃষকেরা। এবার ঝিনাইদহে লক্ষমাত্রার চেয়েও বেশী জমিতে গম চাষ হয়েছে। আর গত ১দশকের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ ফলনের আশা করে কৃষি অফিস বলছে চলতি মৌসুমে ১২২ কোটি টাকার ২০হাজার মেট্রিক টনের বেশী সম্ভব্য উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে, যা বৈশ্বিক মন্দা সহ খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলায় ভুমিকা রাখবে।

ঝিনাইদহে কোন কোন মাঠে গম কাটার উপযুক্ত হয়েছে। আবার কোথাও মাঠের পর মাঠ বাতাসে দোল খাচ্ছে কাঁচা-পাকা গমের সোনালী শীষ। সবুজ মাঠের দিকে তাকিয়ে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাঁসি। ১০ থেকে ১৫ দিন পর জমি থেকে চাষিরা গম কাটা শুরু করবে। সোনালী গমের শীষে এবার মিশে যাবে কৃষকের স্বপ্ন।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়,গত মৌসুমে ঝিনাইদহে ৪হাজার ২শ৭৮ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছিল। আর চলতি মৌসুমে গম চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫হাজার ১শ৩৫ হেক্টর জমিতে তবে চাষ হয়েছে লক্ষমাত্রার চেয়েও বেশী ৫হাজার ১শ৭৩ হেক্টর জমিতে। এবার গমের সম্ভব্য উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ হাজার ২শ ৭৯ মেট্রিক টন। বাজার দর অনুযায়ী যা ১শ ২২ কোটি টাকার কাছাকাছি অর্থাৎ ১শ ২১কোটি ৬৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

বাজারে গম বিক্রি হচ্ছে ২হাজার থেকে ২৫শ টাকা মন দরে। সম্ভব্য বাম্পার ফলনের কারণে কৃষকেরা আশা করছে এবার বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ২০ মন করে গম উৎপাদন হবে।
বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে যশোর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল ও ভোলা জেলায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়, যা মোট গম আবাদি জমির ৩ শতাংশ। এসব জেলায় ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গম চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত ও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

শৈলকুপার হাবিবপুর গ্রামের গম চাষি খন্দকার পলাশ বলেন,গম চাষে তেমন পানি, সার, কীটনাশক, বালাইনাশক ও নিড়ানীর প্রয়োজন হয় না, এতে খরচ অনেক কম। আর কম পরিশ্রমে অধিক লাভ করা যায়।

শৈলকুপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, আনিসুর রহমান জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক বাজারে গমের দামে অস্থিরতা দেখা দেয়ায় দেশে গমের সাপ্লাই চেনে সৃষ্টি হয়েছে সমস্যা। কৃষি কর্মকর্তারা বলছে, সরকার এসব দিক বিবেচনায় কৃষকদের বীজ সহ ব্যাপক প্রণোদনা দেয়ায় গমের চাষ বেড়েছে, আবহাওয়াও এবার ছিল অনুকুলে। সব মিলিয়ে খাদ্যঘাটতির আশংকা মোকাবেলায় ভুমিকা রাখবে দানাদার খাদ্য গম।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আজগর আলী বলেন,খাদ্যে উদ্বৃত্ত জেলা ঝিনাইদহে এবার আরো খাদ্য উদ্বৃত্ত হবে আশা করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছে, ব্লাস্টের কারণে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গম চাষ নিষিদ্ধ ছিল। এরপর ব্লাস্ট প্রুভ জাত বারী-৩০,৩২,৩৩ উদ্ভাবনের পরে ক্রমেই গম চাষে ঝুকছে কৃষক। আর এবার আশাতীত ফলনের কথা জানান কর্মকর্তারা।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ঝিনাইদহে ১শ ২২ কোটি টাকার গম উৎপাদনের আশা

ঝিনাইদহে ১শ ২২ কোটি টাকার গম উৎপাদনের আশা
ঝিনাইদহের কৃষক

রবি শস্যের মধ্যে গম একটি লাভজনক ফসল হলেও ঝিনাইদহ সহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের ৬ জেলায় ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো ব্লাস্ট রোগ দেখা দেয়। ছত্রাক জনিত এ রোগের প্রাদুর্ভাবে হাজার হাজার হেক্টর জমির গম পুড়িয়ে ফেলা সহ গম চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত ও পরপর ৩বছর গম চাষ নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর ব্লাস্ট প্রতিরোধক নতুন জাতের বীজ উদ্ভাবনের পর আবার ধীরে ধীরে গম চাষ শুরু করে কৃষকেরা। এবার ঝিনাইদহে লক্ষমাত্রার চেয়েও বেশী জমিতে গম চাষ হয়েছে। আর গত ১দশকের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ ফলনের আশা করে কৃষি অফিস বলছে চলতি মৌসুমে ১২২ কোটি টাকার ২০হাজার মেট্রিক টনের বেশী সম্ভব্য উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে, যা বৈশ্বিক মন্দা সহ খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলায় ভুমিকা রাখবে।

ঝিনাইদহে কোন কোন মাঠে গম কাটার উপযুক্ত হয়েছে। আবার কোথাও মাঠের পর মাঠ বাতাসে দোল খাচ্ছে কাঁচা-পাকা গমের সোনালী শীষ। সবুজ মাঠের দিকে তাকিয়ে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাঁসি। ১০ থেকে ১৫ দিন পর জমি থেকে চাষিরা গম কাটা শুরু করবে। সোনালী গমের শীষে এবার মিশে যাবে কৃষকের স্বপ্ন।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়,গত মৌসুমে ঝিনাইদহে ৪হাজার ২শ৭৮ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছিল। আর চলতি মৌসুমে গম চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫হাজার ১শ৩৫ হেক্টর জমিতে তবে চাষ হয়েছে লক্ষমাত্রার চেয়েও বেশী ৫হাজার ১শ৭৩ হেক্টর জমিতে। এবার গমের সম্ভব্য উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ হাজার ২শ ৭৯ মেট্রিক টন। বাজার দর অনুযায়ী যা ১শ ২২ কোটি টাকার কাছাকাছি অর্থাৎ ১শ ২১কোটি ৬৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

বাজারে গম বিক্রি হচ্ছে ২হাজার থেকে ২৫শ টাকা মন দরে। সম্ভব্য বাম্পার ফলনের কারণে কৃষকেরা আশা করছে এবার বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ২০ মন করে গম উৎপাদন হবে।
বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে যশোর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল ও ভোলা জেলায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়, যা মোট গম আবাদি জমির ৩ শতাংশ। এসব জেলায় ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গম চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত ও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

শৈলকুপার হাবিবপুর গ্রামের গম চাষি খন্দকার পলাশ বলেন,গম চাষে তেমন পানি, সার, কীটনাশক, বালাইনাশক ও নিড়ানীর প্রয়োজন হয় না, এতে খরচ অনেক কম। আর কম পরিশ্রমে অধিক লাভ করা যায়।

শৈলকুপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, আনিসুর রহমান জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক বাজারে গমের দামে অস্থিরতা দেখা দেয়ায় দেশে গমের সাপ্লাই চেনে সৃষ্টি হয়েছে সমস্যা। কৃষি কর্মকর্তারা বলছে, সরকার এসব দিক বিবেচনায় কৃষকদের বীজ সহ ব্যাপক প্রণোদনা দেয়ায় গমের চাষ বেড়েছে, আবহাওয়াও এবার ছিল অনুকুলে। সব মিলিয়ে খাদ্যঘাটতির আশংকা মোকাবেলায় ভুমিকা রাখবে দানাদার খাদ্য গম।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আজগর আলী বলেন,খাদ্যে উদ্বৃত্ত জেলা ঝিনাইদহে এবার আরো খাদ্য উদ্বৃত্ত হবে আশা করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছে, ব্লাস্টের কারণে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গম চাষ নিষিদ্ধ ছিল। এরপর ব্লাস্ট প্রুভ জাত বারী-৩০,৩২,৩৩ উদ্ভাবনের পরে ক্রমেই গম চাষে ঝুকছে কৃষক। আর এবার আশাতীত ফলনের কথা জানান কর্মকর্তারা।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত