লালমনিরহাটে বিয়ের দাবিতে ১৩ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী। প্রস্তুতি থাকার পরেও পরীক্ষা দিতে পারেননি তিনি।
মঙ্গলবার (২ মে) সকালে প্রেমিক মিজানুর রহমান মিজানের বাড়িতে ১৪তম দিনে অনশনে থাকতে দেখা যায় ওই প্রেমিকাকে।
মিজান লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার বড় কমলাবাড়ি গ্রামের শাখা নেওয়াজের ছেলে। অন্যদিকে, ওই প্রেমিকা একই এলাকার নাজিম উদ্দিনের মেয়ে। কিসামত চড়িতাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের চলতি এসএসসি পরীক্ষার্থী।
স্থানীয়রা জানান, ৫ বছর আগে ওই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মিজানুর রহমান মিজানের। এরই মধ্যে পার্শ্ববর্তী আদিতমারী কালীস্থান এলাকার লোকমান আলীর ছেলে আল আমিনের সঙ্গে ওই তরুণীর বিয়ে দেয় পরিবার। বিয়ে হলেও সম্পর্ক অটুট রাখেন প্রেমিক মিজান। বিয়ের একমাসের মধ্যে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন ওই তরুণী। পড়ালেখার পাশাপাশি নিয়মিত যোগাযোগ রাখের মিজানের সঙ্গে।
ওই তরুণী স্বামীর বাড়ি না গেলে ৩ বছর আগে স্বামী আল আমিন অন্যত্র বিয়ে করে ঘর সংসার শুরু করেন। এদিকে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে সম্পর্ক চালিয়ে যান মিজান। প্রেমের সম্পর্ক থেকে শারীরিক সম্পর্কেও জড়ান তারা।
মিজান ওই তরুণীকে ফাঁকি দিয়ে গত ৪ মাস ধরে গোপনে অন্য এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত ১৬ এপ্রিল বিয়ের দাবিতে মিজানের বাড়িতে অনশন শুরু করেন দ্বিতীয় প্রেমিকা। মিজানের অনুরোধে ওই বাড়িতে গিয়ে দ্বিতীয় প্রেমিকাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন প্রথম প্রেমিকা।
এরপর মিজান ও তার পরিবারের কথামত প্রথম স্বামী আল আমিনকে গত ১৮ এপ্রিল তালাক দেন মিজানের প্রথম প্রেমিকা। কিন্তু পরদিন রাতেই মোটা অংকে যৌতুকে দ্বিতীয় প্রেমিকাকে বিয়ে করেন মিজান। খবর শুনে ওই দিন মিজানের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করে প্রথম প্রমিকা। তাকে দেখে নতুন বউসহ মিজানকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে তার পরিবার।
অনশনের ১২ দিন হলেও বিয়ের দাবি ছাড়েনি প্রথম প্রেমিকা। মিজানের বাড়ির উঠানেই রাত কাটছে তার। রোববার (৩০ এপ্রিল) এসএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও পরীক্ষা দিতে যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওই তরুণীর।
অনশনে থাকা ওই তরুণী বলেন, আমার সঙ্গে ছেলের বিয়ে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মিজানের বাবা আমার সহায়তায় ওই মেয়েকে (দ্বিতীয় প্রেমিকা) অনশন থেকে সড়ায়। মিজান ও তার বাবার কথায় প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়েছি। তার পুরো পরিবার দীর্ঘ ৫ বছর ধরে আমাদের সম্পর্কের কথা জানে। আমাকে পরীক্ষাও দিতে দেয়নি। সাদা কাগজে স্বাক্ষর না দিলে পরীক্ষার হলে যেতে দেয়নি মিজানের পরিবার।
আদিতমারী থানা ওসি মোজাম্মেল হক বলেন, আইনী জটিলতার কারণে বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মিমাংসার চেষ্টা করছেন। পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি বিষয়টি থানায় অবগত করলে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হত।