আমতলী-পুরাকাটা খেয়াঘাটে সরকার নির্ধারিত কোন ভাড়া তালিকা নেই। নেই কোন নিয়মনীতি। কেবল মাত্র নদী পারাপারের জন্য খেয়ায় চড়লেই গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। আর রাতের চিত্র আরও ভয়াবহ। তখন নির্ধারিত ভাড়ার চার থেকে পাঁচ গুন ভাড়া আদায় করা হয় বলে অভিযোগ একাধিক যাত্রীদের। এদের হয়রানি থেকে মুক্তি চায় সাধারণ যাত্রীরা। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও পাচ্ছেন না কোন সুফল।
আমতলী-পুরাকাটা খেয়াঘাট দিয়ে বরগুনা জেলা শহরে যাওয়া–আসার, এছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, খুলনা প্রতিদিন হাজারো যাত্রীর পারাপার হয়। তবে এই খেয়াঘাটে যাত্রী পারাপারে সরকার নির্ধারিত কোন ভাড়া তালিকা টানাইনি ইজারাদাররা। ফলে ইচ্ছেমত খেয়া যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ভাড়া। এদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে হতে হয় হেনস্ত। এদের হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াও পোস্ট করে প্রশাসনের নজরবন্দী করতে চান ভুক্তভোগীরা।
সরেজমিনে আমতলী খেয়াঘাটে গিয়ে দেখা যায়, বরগুনা জেলা পরিষদের নির্ধারিত তালিকার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন ইজারাদাররা। জেলা পরিষদের তালিকায় জনপ্রতি ২০ টাকা। চালকসহ বাইসাইকেল ২২ টাকা, চালকসহ মোটরসাইকেল ৪০ টাকা। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে। বর্তমানে খেয়ায় নদী পারাপার করতে জনপ্রতি নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা এবং মোটরসাইকেল প্রতি ৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ ছাড়াও যাত্রী হয়রানি, যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচারণ,অতিরিক্ত যাত্রী বহন, অপর্যাপ্ত ও ত্রুটিযুক্ত ট্রলার দিয়ে নদী পারাপারসহ বিভিন্ন অভিযোগ যাত্রীদের।
আমতলী খেয়াঘাটের যাত্রী নাসরিন সিপু বলেন, ২০ টাকার ভাড়া ২৫/৩০ টাকা নিচ্ছে। আমরা তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি। সরকার নির্ধারিত যাত্রী ভাড়া তালিকা না থাকায় ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করছে ঘাট ইজারাদার।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে ঘাটের ইজারাদার মো. জাকির হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।
জেলা পরিষদের প্রধান সহকারী মো.হারুন আর রশিদ বলেন, গত ৩০ মে আমতলী ও পুরাকাটা ঘাটে ভাড়ার তালিকা টানানোর জন্য ৮৯/৩০/৪ স্মারকে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। যদি তারা ঘাটে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা না টানিয়ে থাকে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বেশি ভাড়া নেয়ার সুযোগ নেই। জেনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়টা আমরা জেনেছি, বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে আমরা উপস্থাপন করেছি। জেলা পরিষদকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। এবং আমরা বিষয়টি মনিটারিং করছি। খুব দ্রুতি একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।