আইনের শাসন, গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, লুণ্ঠিত ভোটাধিকার, সর্বজনীন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং আইনজীবীদের মর্যাদা রক্ষায় সরকারবিরোধী সমর্থক আইনজীবীরা নতুন ফ্রন্ট ঘোষণা করেছেন। নতুন এ ফ্রন্টের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্ট (ইউএলএফ)’।
নতুন এই সংগঠনের আহ্বায়ক সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। যুগ্ম আহ্বায়ক সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী।
গতকাল সোমবার (১২ জুন) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির যাত্রা শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
এই আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন- সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ, এ এম মাহবুব উদ্দীন খোকন, জগলুল হায়দার আফ্রিক, গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ, গরীব এ নেওয়াজ, ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, কে এম জাবির, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, বদরুদ্দোজা বাদল, আব্দুল জব্বার ভূইয়া, শাহ আহম্মেদ বাদল, রুহুল কুদ্দুস কাজল, ড. গোলাম রহমান ভুইয়া, শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, শফি উদ্দিন ভূইয়া, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, সৈয়দ মামুন মাহবুব (সমন্বয়কারী), গাজী কামরুল ইসলাম সজল এ বি এম রফিকুল হক তালুকদার রাজাসহ ৩৬ জন।
সংবাদ সম্মেলনে জয়নুল আবেদীন ফ্রন্টের তিন দফা লক্ষ্য তুলে ধরেন।
১. সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ এবং নির্মোহভাবে আইনের শাসন, গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, লুণ্ঠিত ভোটাধিকার, সর্বজনীন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, আইনজীবীদের মর্যাদা রক্ষা, পেশাগত সমস্যার সমাধানের চেষ্টা, বিচার অঙ্গনের দুর্নীতির মূলোৎপাটনসহ সারা দেশের আইনজীবী সমিতিগুলো যেন স্বাধীন ও নির্ভীকভাবে আইনজীবীদের সম্মান ও স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পারে, সেজন্য দেশব্যাপী আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত করা হবে। ‘আইনজীবী সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নে কাজ করা হবে।
২. বাংলাদেশের সব বারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের মাধ্যমে সারা দেশের আইন অঙ্গনের পরিবেশ শান্ত রাখা। কোনো অবস্থাতেই যেন বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনুপ্রবেশ না করতে পারে ও দেশের সব বারে যাতে বহিরাগতদের প্রবেশ না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা।
৩. যেহেতু চলতি বছরের ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট বারে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি, তাই সাংবিধানিক সংকট পূরণের লক্ষ্যে গত ৩০শে মার্চ বারের সদস্যদের সংবিধানের ১৭(৩)(এ) অনুযায়ী তলবি সাধারণ সভার মাধ্যমে একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি ঘোষিত হয়। সেই সভায় সভাপতিত্ব করেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল-ইসলাম। সংবিধান অনুযায়ী এই কমিটি হচ্ছে বারের কমিটি।
এই ফ্রন্ট সুপ্রিম কোর্ট বারের কমিটির সব ধরনের কার্যক্রমে প্রতিনিয়ত সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদান করবে। এছাড়া প্রত্যেক বার সমিতিতে যেন আইনজীবীরা সুষ্ঠুভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেই লক্ষ্যে প্রত্যেক বারে ধারাবাহিক আন্দোলন গড়ে তুলবে।
এদিকে, শুরুতেই নতুন এই সংগঠনের থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী। এস এন গোস্বামী একটি অনলাইন পোর্টালে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। আমার সম্মতি না নিয়ে ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্টের আহ্বায়ক কমিটিতে নাম রাখা হয়েছে। আমি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীকে বলেছি, এ সংগঠনের কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকতে চাই না। আমার নাম প্রত্যাহার করতে বলেছি।
এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল বলেন, ফ্রন্টের ৩২নং সদস্য এস.এন. গোস্বামীর সঙ্গে কথা বলে এবং তার সম্মতিতেই তাকে রাখা হয়েছে।