রাঙামাটি পার্বত্য জেলার রাজস্থলী উপজেলায় রাতের অন্ধকারে তিন শ্রমিককে অপহরণ করে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। সোমবার দিবাগত রাতে সাড়ে আটটার দিকে রাজস্থলী উপজেলাধীন ২নং গাইন্দ্যা ইউনিয়নের লংগদুপাড়া নামক এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।
অপহৃতরা হলেন সোহাগ(২০) রূপক(১৮) ও বিশ্বজিৎ দে (২২)। অপহৃত তিনজনের মধ্যে সোহাগ ও রূপক দু’জন আপন ভাই। তারা নেত্রকোনা জেলাধীন পূর্বধলা থানার সাতকাঠি গ্রামের জামাল উদ্দিনের সন্তান। এছাড়া অপহৃত অপরজন বিশ্বজিৎ দে’র বাড়ি গাইবান্ধা জেলাধীন সাগাটা থানার ২নং ধলধলিয়া গ্রামে।
সংশ্লিষ্ট ৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার মোঃ এমদাদুল হক মিলন ও অপহরনের শিকারের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
অপহৃত শ্রমিকরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে বেসরকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এনডিই এর বাস্তবায়নাধীন সড়ক ধারক দেয়াল নির্মাণ কাজের শ্রমিক ছিলেন। অপর দিকে সোহাগ-রূপকের বড় ভাই সবুজ জানিয়েছেন, বিগত তিনমাস ধরেই তারা সর্বমোট ১৪ জন শ্রমিক রাজস্থলী-বাঙ্গালহালিয়া সড়কের লংগদু পাড়াস্থ লেবার শেডে অবস্থান করে পাশের সড়কে এনডিই কর্তৃক ধারক দেয়াল নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
প্রতিদিনের ন্যায় সোমবার সন্ধ্যায় কাজ শেষ করে লংগদু পাড়াস্থ লেবার শেডে অবস্থান করছিলো এই তিন শ্রমিক। এসময় অন্যান্য শ্রমিকরা একটু অদূরে চায়ের দোকানে গিয়েছিলো চা-নাস্তা করার জন্য। এসময় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী খুঁটি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে লেবার শেডে প্রবেশ করে তিনজনকে তুলে নিয়ে যায়।
সবুজ জানায়, আমার ভাইদের নিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের লেবার শেডের পাশেই আরো একটি লেবার শেডে অবস্থান করা আরো দুইজন শ্রমিককে ধাওয়া করে সন্ত্রাসীরা। তারা দৌড়ে বাজারে এসে আমাদেরকে ঘটনাটি জানায়। আমি আমার ভাইকে মোবাইলে কল দিলে প্রথমবার সে রিসিভ করে কিছু না বলে সংযোগ চালু রাখলে আমি নিজেও অপহরণকারী সন্ত্রাসীদের কন্ঠ শুনতে পাই।
তারা আমার ভাইকে বলছে, তোমাদের অন্য শ্রমিকরা কোথায় গেছে? সকলেই দোকানে গেছে এমনটি জানানোর পর অপহরণকারীরা আমার ভাইকে বলে তাহলে তোমরা আমাদের সাথে চলো। এরপর থেকে আমি বেশ কয়েকবার আমার ভাইয়ের মোবাইলে কল দিলে রিং হলেও কেউই রিসিভ করে নাই। এক পর্যায়ে ভাইয়ের মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলেও জানায় সবুজ।
এই বিষয়ে রাজস্থলী থানার অফিসার ইনচার্জ জাকির হোসেনকে মুঠোফোনে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, আমরা ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়েছি এবং তাদের মোবাইল নাম্বারগুলোকে গুগল ট্রেকিং করে লোকেশন জানার চেষ্টা করছি এবং তাদের উদ্ধার করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি।