টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী গারোবাজার সড়কে ১০ কিলোমিটার পাকা রাস্তার গাছ নিয়ে চলছে সুভংকরের ফাঁকি।
এলাকার একটি অসাধু সংঘবদ্ধ চক্র দিনে দুপুরে রাস্তার গাছ কেটে নিলেও তাদের দাবী আমরা গাছ কাটার মুজুরি রেখে বাকী গাছ অফিসে ফেরৎ দেই।
অফিস কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘এসব বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা।’ ফলে এলাকায় সৃষ্টি হচ্ছে কলহ সেই সাথে বাড়ছে অপরাধ, অপর দিকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব থেকে।
জানা যায়, ঘাটাইলের পাহাড়ি এলাকা সাগরদিঘী হইতে গারোবাজার পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ১৯৮৭ সালে পাকা রাস্তার রুপান্তর হয়। ঐ সময় রাস্তার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় এলজিইডি অফিস রাস্তার দুই পাশে প্রায় ১৫ হাজার আকাশমনি গাছ রোপন করে পরিচর্যা করে আসছিলো।
পরে সরকার ঐ সব গাছগুলো সিএন্ডবির নিকট হস্তান্তর করেন।
বর্তমানে এ সব গাছ মধুপুর টেলকি অফিস থেকে দেখাশুনা করছেন। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৩৭ বছর পূর্বে রোপন কৃত প্রতিটা গাছের মূল্য আজ ৩০ থেকে ৭০/৮০ হাজার টাকায় দাড়িয়েছে। কিন্তুু তদারকি ও পরিচর্যার অভাবে অনেক গাছের গোড়ার মাটি সরে যাওয়ায় সামান্য ঝড় বৃষ্টি হলেই বড়, বড় গাছ হেলে মাটিতে পরে যাচ্ছে। অনেক গাছ মরে ভেঙ্গে পরছে, অনেক মূল্যবান গাছ রাতের অন্ধকারে চুরি হয়ে যাচ্ছে।
লক্ষিন্দর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইদুর রহমান বলেন, ২০২২ সালের এই দিনে ঝড়ে অনেক গাছ মাটিতে হেলে পড়ে এবং ভেঙে যায় যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।
এভাবে গাছ হেলে /ভেঙ্গে পরার সুযোগে এলাকার একটি অসাধু সংঘবদ্ধ চক্র ঐসব গাছ অফিসে ফেরৎ দেওয়ার কথা বলে নির্বিঘ্নে কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গেলে ঐ এলাকাবাসী জানান, গত ১৬ জুন লক্ষিন্দর গ্রামের বটতলী এলাকায় একটি আকাশমনি গাছ মাটিতে হেলে পরে যায়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫০থেকে ৬০ হাজার টাকা,
পরে ঐ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে তার ভাই রুহুল আমীন ও লক্ষিন্দর গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুল হালিমসহ ৬/৭ জন ইঞ্জিনিয়ারের কথা বলে রাতেই গাছ কেটে নেয়। পরে গভীর রাতে ২ কিলোমিটার দূরে সাগরদিঘী রফিকের স’মিলে ঐ গাছ বিক্রি করে দেয় এবং লোক চক্ষু ফাঁকি দিতে রফিকের স’মিলে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। ১৭ জুলাই এলাকায় গেলে এর সত্যতা পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের নিকট জানতে চাইলে, তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন গাছ কাটা হয়েছে এ কথা সত্য। তবে কর্তনকৃত গাছ কোথায় আছে আমি তা জানিনা।
পরবর্তীতে তিনি নিজেই ফোন করে জানান, গাছ রফিকের করাত কলে আছে।
এসব বিষয়ে লক্ষিন্দর গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম বলেন আমরা মিলে গাছ বিক্রি করি নাই, জমা রাখছি।
সাগরদিঘী স’মিল মালিক রফিকুল জানান, রাজ্জাক মেম্বার ও অফিসের লোকেরা আমার মিলে কোথা থেকে,কার গাছ এনেছে তা আমি জানিনা।
এলাকায় ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচিত মধুপুর সিএন্ডবি অফিসের অবসরপ্রাপ্ত ওয়ার্ক এ্যাসিস্ট্যান্ট আলমাস হোসেন জানান, আমি এখন চাকুরী করিনা তবে অফিস ডাকলে মাঝে মধ্যে কাজ করে দেই গত ১৬ জুন লক্ষিন্দর থেকে আমাকে ফোন করেছিলো আমি গাছ পুলিশের হেফাজতে রাখতে বলেছিলাম পরে কি হয়েছে আমি জানিনা।
এ বিষয়ে মধুপুর টেলকী সিএন্ডবি অফিসে দায়িত্বে থাকা সাব এ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (এস,ও) সোলায়মান হোসেনের নিকট শতাধিক রাস্তার গাছ কর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান গত ১৬ জুন গাছ কাটার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা তবে গত বছর ঝড়ে পরা কিছু গাছ পেয়েছিলাম যা বিক্রি না করে সরকারী জ্বালানি কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।