লক্ষ্মীপুর কমলনগরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বসেই রোগী দেখে ভিজিট নেওয়া ও অপারেশন থিয়েটারের অবজারভেশন কক্ষকে বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে।অভিযুক্ত ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেরই মেডিকেল অফিসার ডা.সোহেল রানা। এই ছাড়া তার বিরুদ্ধে হাসপাতালে ডিউটি থাকা কালীন অন কলে রোগী দেখার অভিযোগ রয়েছে।
রিয়াজ ও দিদার হোসেন নামে দুই ভুক্তভোগী জানান, তিনি হাসপাতালে দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় তার কন্টাক্টকৃত ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে ভিজিট নিয়ে তার নিজের প্রচেষ্টায় সরকারি হাসপাতালে বসে সেই রোগী দেখেন যা খুব অমানবিক ২২ জুলাই সকাল ১১ টায় আমরা আমরা মা দেশ মাটি মেডিকেল সেন্টারে ডা:হোসেল রানা কে দেখানোর জন্য ৪০০ টাকা ভিজিট দিয়ে অপেক্ষা করি কিছুক্ষন পরে মা দেশ মাটি মেডিকেল সেন্টারে এক জন স্টাপ আমাদের নিয়ে যান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেরই ডা:হোসেল রানার কক্ষে তিনি আমাদের ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন।এইছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপারেশন থিয়েটারের অবজারভেশন কক্ষকে বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন দীর্ঘদিন। এভাবে বসবাসে কোন অনুমোদন না থাকলেও সরকারি বিদ্যুৎ ব্যবহার থেকে শুরু করে সকল ধরনের সুবিধা নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সেখানে বসবাস করছেন। ইতোপূর্বে হাসপাতালে না থাকার জন্য নিষেদাজ্ঞা দিয়েছেন সিভিল সার্জন।
সাংবাদিকদের কাছে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে এর সততা পাওয়া যায়। যদিও গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি প্রথমে গোপন করার চেষ্টা করেন এবং সেখানে থাকেন না বলেও অস্বীকার করেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবু তাহেরের নির্দেশে কক্ষের তালা খুলে দেন ডা. সোহেল রানা নিজেই।
এছাড়াও অফিস সময়ে অনকলে বিভিন্ন প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে গিয়ে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি সহ বিভিন্ন সময় চেম্বারও করেন। এমন অনেক অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
জানাগেছে, ডা. সোহেল রানা তিন বছর আগে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। এর মধ্যে করোনাকালীন সময়ে ঢাকায় বেশ কিছুদিন থাকার পর পুনরায় কমলনগর যোগদান করেন। দীর্ঘ দেড় বছর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এই রুম ব্যবহার করে বসবাস করে আসছেন তিনি। এসব অভিযোগের বিষয়ে ডা. সোহেল রানা বলেন, চিকিৎসকদের জন্য নির্দিষ্ট কোয়াটার রয়েছে, ওই কোয়ার্টারে ভাড়া পরিশোধ করেন তিনি। ওখানে কিছু সংস্কার কাজ হচ্ছে বিধায় হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের কক্ষে থাকেন তিনি। তবে তিনি নিজেই স্বীকার করেন জেলা সিভি সার্জন এখানে না থাকার জন্য নিষেধ করেছেন।
একই অভিযোগ আরেক মেডিকেল অফিসার মো:আতারাব্বী বিরুদ্ধে, জসিম নামে এক ভুক্তভোগী জানান, ডা আতারাব্বীকে আমি দুইজন রোগীর দেখালাম, সকাল ১১.৪৫মিনিটে মা দেশ মাটি মেডিকেল সেন্টারে। হাছান নামে আরেক ভুক্তভোগী জানান,দুপুর ১২ টায় মা দেশ মাটি মেডিকেল সেন্টারে তিনি ডা: আতারাওব্বীর কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
অভিযোগ বিষয়ে ডা: আতারাব্বী কোন মন্তব্য করেন নি। একই অভিযোগ উপসহকারী মেডিকেল অফিসার সাইফুল ইসলামের এর বিরুদ্ধেও। সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি হাসপাতালে ইমাজেন্সি কক্ষে ডিউটি কালীন সময় তার লোকজন দিয়ে রোগীদের থেকে টাকা আদায় করেন। যদিও সেখানে ফ্রি চিকিৎসা দেওয়ার কথা।
চল লরেঞ্চ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তামজিদ জানান, হাসপাতালে জরুরি বিভাগে আমার মা কে নিয়ে গেছি সেখানে আমাদের থেকে সাইফুল ডা:৮০০ টাকা নিয়েছে।আমার মা বিশেষজ্ঞ একজন ডা: এর পরামর্শেছিল তিনি তার ব্যবস্থাপত্র না দেখে আমার মায়ের পায়ের অপারেশন করেন। এখন আমার মায়ের পা ইনপেকশন হয়েছে।রিয়াদ হোসেন রিফাত নামে আরেক ভুক্তভোগী জানান,আমার দাদির হাত ভাংগা সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে আসি সেখানে আমার কাছ থেকে ৭০০ টাকা আদায় করেছেন।এক্স রে করে দেখলাম দাদির হাত ভাংগছে । তিনি বিশেজ্ঞ কোন ডাক্তারের কাছে রেফার না করে হাত ভেন্ডেজ করেদেন। এখন তার হাত বাঁকা হয়েগেছে।আমরা এই ডাক্তারের বিচার চাই।উপসহকারী কমিনিটি মেডিকেল অফিসার সাইফুল ইসলামের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আপনি সরাসরি আসি কথা বলিয়েন ফোনে কথা বলা যাবে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তাহের জানান, এইসব অসম্ভব তবে আমারে অভিযোগ গুলা পাঠালে আমি এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।
লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আহমদ কবির এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।