জাতীয় নির্বাচনের আগে সহিংসতা ও গণগ্রেপ্তারের মধ্যে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
সাম্প্রতিক মাসে বিরোধীদের সমাবেশে সহিংসতায় পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করায় দুঃখ প্রকাশ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তরে (ওএইচসিএইচআর) জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স এক প্রেস নোটে এ তথ্য জানান।
প্রেস নোটে বলা হয়, “পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদাপোশাকের ব্যক্তিদের প্রতিবাদকারীদের দমনে হাতুড়ি, লাঠি, ব্যাট ও লোহার রডসহ নানা ধরনের বস্তু ব্যবহার করতে দেখা যায়।”
এতে বলা হয়, “এসব ঘটনায় বিরোধী দলের সমর্থকদের পাশাপাশি কিছু পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। জ্যেষ্ঠ বিরোধী নেতাদেরও প্রকাশ্যে মারধর করা হয়। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তাদের বাড়িতে অভিযানও চালানো হয়।”
“সমাবেশের আগে ও সমাবেশকালে বিরোধী দলের শত শত নেতা–কর্মী ও সমর্থকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
“জানুয়ারিতে বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও তাদের জোট সঙ্গীরা দেশ জুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দাবিকে অসাংবিধানিক বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
লরেন্স জোর বলেন, “বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে এবং জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার চর্চার সুযোগ দিতে হবে। এ ছাড়া তৃতীয় কোনো পক্ষ জনগণের সেই অধিকারকে দমন করতে চাইলে, তাদের অধিকার রক্ষায় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, কেবল জরুরি প্রয়োজনে নিয়ন্ত্রিতভাবে বল প্রয়োগ করা যেতে পারে। যদি করতেই হয়, বৈধতা, সংযমের ভিত্তিতে এবং যৌক্তিক কারণ সাপেক্ষে তা করতে হবে। অতিরিক্ত বল প্রয়োগের বিষয়টি অবশ্যই দ্রুত তদন্ত করতে হবে এবং দায়ী ব্যক্তিদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।”
লরেন্স সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের প্রচারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “এটি রাজনৈতিক বহুত্ববাদ এবং ভিন্নমত প্রকাশের প্রতি শ্রদ্ধা তৈরি করে এবং সেটিকে উৎসাহিত করে।”