জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে ব্যস্ততার কারণে প্রথম পর্বের ম্যাচগুলো সেভাবে দেখা হয়নি মাশরাফি বিন মর্তুজার। তবে মূল পর্বের ম্যাচ দেখবেন, বাংলাদেশের ম্যাচ ডে মুখস্থ আছে সাবেক অধিনায়কের। মাশরাফির পূর্বাভাস, আজ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় বদলে দেবে বাংলাদেশ দলের শরীরী ভাষা।
‘প্রথম ম্যাচ ভারত, পাকিস্তান না হয়ে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলছে বাংলাদেশ।
এটা আমাদের জন্য ভালো। এই ম্যাচ থেকে ২ পয়েন্ট নিতে পারলে দলের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে। হাতে পয়েন্ট থাকলে পরের ম্যাচগুলোর হিসাব ঘুরে যাবে’, সাকিব আল হাসানদের নিয়ে আশাবাদী মাশরাফি। এই লক্ষ্য পূরণে সাকিব আল হাসানদের প্রতি তাঁর পরামর্শ, ‘এশিয়া কাপ খারাপ হয়েছে। তার আগে বিশ্বকাপেও ভালো করেনি বাংলাদেশ। তবে এই আসর নতুন আরেকটি টুর্নামেন্ট। বিশ্বকাপ টু বিশ্বকাপ এক বছর সময় পেয়েছি। নানা কম্বিনেশন দেখা হয়েছে। এখন সেসব মিলানোর সময়। এখন প্র্যাকটিস সেশন হলো কি হলো না, ভাবারও দরকার নাই। প্রস্তুতি যথেষ্ট হয়েছে। দলের থিংকট্যাংক সেটা ভালো জানে। বাইরের মানুষের সঙ্গে টিম ম্যানেজমেন্টের হিসাব মিলবে না। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের একটা ঘটনা বলি। আল আমিনকে টুর্নামেন্ট শুরুর এক মাস আগে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ও শুধু একটি ম্যাচ খেলবে। দরকার হলে পাঁচ উইকেট পাওয়া বোলারকে বসিয়েও ওকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু ওই ম্যাচের আগেই আল আমিনকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিতে হয়েছিল। (কুমার) সাঙ্গাকারা সেঞ্চুরি করেছিল। তো, আমি নিশ্চিত দলের থিংকট্যাংক সফল হওয়ার জন্য নানা রকম চিন্তা করে, যেটা বাইরের কেউ জানে না। আবার দলেরও উচিত, বাইরের কথাবার্তা থেকে নিজেদের দূরে রাখা। ’
২০১৫ অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের আগে এমন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছিল মাশরাফিরও, ‘২০১৪ সালে অনেক ক্লোজ ম্যাচ হেরেছি। আমাদের নিয়ে সেরকম আশা ছিল না। এক-দুজন ক্রিকেটারকে বাজেভাবে সমালোচনা করা হচ্ছিল। এ রকম সময়ে টিম ম্যানেজমেন্টের অনেক কাজ থাকে। সেই খেলোয়াড়কে কিংবা দলকে এই চাপ থেকে বাঁচিয়ে রাখা। আমি নিশ্চিত দলে সেটা নিয়ে কাজ হচ্ছে। সেদিন কোচের (শ্রীধরন শ্রীরাম) একটা মন্তব্য পড়লাম। তিনি জানিয়েছেন যে দল খুব হাসিখুশি আছে। এটা ভালো খবর। মাঠে রেজাল্ট আনবে ক্রিকেটাররা। ওদের সেই স্বাধীনতাটুকু দেওয়া উচিত। খেলোয়াড়ের নিজের ওপরও ভালো করার আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। ’
বিশ্বকাপে আগেও একবার নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। ভারতের ধর্মশালার সে ম্যাচটি জিতেছিল বাংলাদেশ। মাশরাফি নিশ্চিত, হোবার্টেও তেমন কিছুই হবে, ‘বিশ্বকাপে কোনো দলকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। তবু আমি বলব, নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১০ ম্যাচে ১০ বারই জিতবে বাংলাদেশ। অন্তত ৯ বার তো বটেই। নিজেদের অ্যাপ্লিকেশন ঠিক থাকলে বাংলাদেশের না জেতার কোনো কারণ নেই। ’ প্রত্যাশিত জয়ের পর ফরম্যাট ভিন্ন হলেও ২০১৫ সালের মতো ২০২২ সালের বাংলাদেশকে সমীহ করবে অন্য দলগুলোও, ‘সেবার (২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ) প্রথম ম্যাচের আগে আফগানিস্তানকে হারাতে পারব কি না, এ নিয়ে কম কথা হয়নি। কিন্তু ম্যাচটা আমরা জেতার পর সবাই অন্য রকম ভাবতে শুরু করেছিল। আমরাও ইংল্যান্ডের মতো দলকে হারিয়েছিলাম। ’ এবারও সেরকম কিছু হলে মোটেও অবাক হবেন না মাশরাফি বিন মর্তুজা।