মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় প্রমত্তা পদ্মার গ্রাসে মাত্র ৩০ মিনিটে তলিয়ে গেছে দুই গ্রামের ১২টি বাড়িঘর। এসব ঘরে থাকা ধান, চালসহ তৈজসপত্রও তলিয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে ৪৬ নম্বর চর মকুন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয় ভবনের কয়েকটি পিলার ইতোমধ্যে নদীর মধ্যে।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মঈন উদ্দিন ঢাকা ট্রিবিউনকে জানান, ভাঙন রোধে জিও ব্যাগের পাশাপাশি জিও টিউব ও ডাম্পিং কাজ করছেন তারা।
পদ্মার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছেন আবিধারা ও ইসলামপুর গ্রামের লিটন, বাদল, রফিজ, কালাম, সেকেন্দার, শাহিন, আফজাল বিশ্বাস ও সিদ্দিক মেম্বার। তাদের কারও বসতঘর, কারও দোকান পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে।
ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা ময়না বেগম জানান, তার থাকার ঘর পদ্মায় তলিয়ে গেছে। সঙ্গে ঘরে থাকা ৫০ মণ ধান, খাবারে চাল, পাঁচ মণ সরিষা, চার মণ তিল ও ভুট্টাও তলিয়ে গেছে। সন্তানসহ পরিবারের সবার ঠাঁই এখন খোলা আকাশের নিচে।
তিনি বলেন, “মাত্র ৩০ মিনিটে আমার সাজানো সংসার লণ্ডভণ্ড করেছে রাক্ষুসে পদ্মা। আমরা পথের ফকির হয়ে গেছি।”
মোহনপুর এলাকার বাসিন্দা সাগর বলেন, “স্থায়ী বেরি বাঁধ না হলে অবশিষ্ট যা আছে সব পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে।”
গৃহবধূ সালমা আক্তার বলেন, “রাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আচমকা ভূমিকম্পের মতো সব শেষ হয়ে গেছে। আমরা এখন কোথায় যাবো আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।”
ধূলশুড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহেদ খান বলেন, “আমার কাছে মনে হয়েছে এটা এক ধরনে ভূমিকম্প! ভূমি ধস। ৩০ মিনিটে পদ্মার পেটে চলে গেলো ১২টা বাড়ি। স্কুলটিও যেকোনো সময় পদ্মায় শেষ হয়ে যাবে। চোখের সামনে বাড়িগুলো শেষ হতে দেখছি। সারা রাত পদ্মার পাড়েই ছিলাম।”
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তাপসী রাবেয়া ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “আমি ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে আছি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সানোয়ারুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।”
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মঈন উদ্দিন বলেন, “জিও ব্যাগের পাশাপাশি, জিও টিউব ও ডাম্পিং শুরু করেছি। আশা করি ভাঙন রোধ হবে।”