শীতের সবজিতে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছিল বাজারে। তবে একদিনের বৃষ্টিতেই স্বস্তি নিঃশ্বাস থেমে গেছে; সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বিভিন্ন সবজির দাম। কাঁচা মরিচে বেড়েছে ৮০ টাকা পর্যন্ত। বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে সবজির দাম বেড়েছে।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজারে কেবল কাঁচা সবজিই নয়, বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, আটা, ময়দা, সয়াবিন তেলের মতো পণ্যের দামও। এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ জানেন না বিক্রেতারা। তবে তারা বলছেন, দাম আরও বাড়তে পারে।
সকালে মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে শিম জাত ভেদে ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শালগম ৫০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৬০ টাকা, পাকা টমেটো ১০০-১২০ টাকা, পেঁয়াজ কলি ৯০-১০০ টাকা, পেঁয়াজ পাতা ৮০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, লাল মুলা ৫০ টাকা, দেশি গাজর ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৮০-৯০ টাকা, শসা ৬০- ৮০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, পটল ৭০-৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিটি লাউ ৮০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে।
গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি পিস ফুলকপির দাম বেড়েছে ২০ টাকা। এছাড়া প্রতি পিস বাঁধাকপিতে বেড়েছে ১০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা, ধুন্দলে ৩০ টাকা, কচুর লতিতে ২০ টাকা, লম্বা বেগুনে ১০ টাকা, সাদা গোল বেগুনের ২০ টাকা, কালো গোল বেগুনের ২০ টাকা, উচ্ছে ২০ টাকা, ঢেঁড়সে ২০ টাকা, মুলা কেজিতে ১০ টাকা করে দাম বেড়েছে। এছাড়া কাঁচামরিচের দাম কেজিতে বেড়েছে ৮০ টাকা। গত কাঁচা মরিচের দাম ছিল ১২০ টাকা।
সবজির দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলেন, কয়েক দিনের বৈরী আবহাওয়ায় সবজির দাম বেড়েছে। বৃষ্টি হলে এমনিতেই সবজির দাম বেড়ে যায়। আর এটা তো শীতকালের বৃষ্টি।
বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, “আমরা বেশি দামেই কিনে এনেছি। তাই বেশি দামেই বিক্রি করছি। যে অবস্থা দেখছি দাম হয়তো আরও বাড়বে।”
বাজার করতে আসা শাহনেওয়াজ বলেন, “ব্যবসায়ীরা শুধু উসিলা খোঁজেন, দাম বাড়ানোর। এখন একটু বৃষ্টি হয়েছে, আর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।”
আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের দামও বাড়তি
শুধু সবজিই না বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের দামও। বাড়তে থাকা পেঁয়াজের দাম বেড়েছেই চলছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি ও ক্রস পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১৪০ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ১৪০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাদা আলুর দাম বেড়েছে ৫ টাকা। আজ লাল আলু ৫০ ও সাদা আলু ৫৫ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
দেশি রসুন ২৪০, চায়না রসুন ২০০, ভারতীয় আদা ২২০, ইন্দোনেশিয়ান ২৪০, চায়না আদা ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ভারতীয় আদা ২০০ টাকা, দেশি রসুন ২২০ টাকা, চায়না রসুন ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।
বেড়েছে আটা, ময়দা, সয়াবিন তেলের দাম
আলু পেঁয়াজের সাথে বেড়েছে আটা, ময়দা, সয়াবিন তেলের দামও। আজকে মুদি দোকানের সব পণ্যের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও আটা, ময়দা, সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। আজকে ছোট মসুরের ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মুসরের ডাল ১১৫ টাকা, মুগ ডাল ১৪৫ টাকা, খেসারি ডাল ৯৫ টাকা, বুটের ডাল ৯৫ টাকা, ছোলা ৯০ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৩ ১৬৯ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৪২, টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫৫ টাকা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এক্ষেত্রে দেখা যায় সয়াবিন তেল ৪ টাকা, আটা ১০ টাকা এবং ময়দা ১৫ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।
মিরপুর ১ নম্বরের সেলিম জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা মো. সেলিম বলেন, কোম্পানি আটা-ময়দা- সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন আমাদের বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম হয়তো আরও বাড়বে।
এছাড়া আজকের বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১৫০০- ২২০০ টাকা, রুই মাছ ৩৮০-৫০০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০-৪৫০ টাকা, কালিবাউশ ৪৫০- ৭০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৭০০ -১০০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৫০০ টাকা, কৈ মাছ ২৫০-৫০০ টাকা, পাবদা মাছ ৩৫০-৪৫০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৫০০ টাকা, বেলে মাছ ৬০০-১২০০ টাকা, টেংরা মাছ ৭০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০-৭০০ টাকা, কাজলি মাছ ১২০০-১৪০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৬০০- ১২০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ১০০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগি ১৭০- ১৮৫ টাকা, কক মুরগি ২৭৫-২৮৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৫৫ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা, গরুর মাংস ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০ টাকা, সাদা ডিম ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।