আখাউড়ার আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়ছেন মানুষ

ডেস্ক এডিটর এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
আখাউড়ার আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়ছেন মানুষ
ছবি : প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকাল নাগাদ দেড় থেকে দুই ফুট পানি কমে গেছে। এই অবস্থায় অনেক পরিবারই আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা করা হচ্ছে।

প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, পানি কমলেও স্রোতের তোড়ে আখাউড়া-কসবা সড়কের দেবগ্রাম ও নয়াদিল এলাকাকে ভাগ করা একটি ছোট্ট সেতুর একপাশ ধসে যায়। এতে বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) রাত থেকে আখাউড়া উপজেলার সাথে কসবা উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া পৌর এলাকার দেবগ্রামে নতুন নির্মাণ হওয়া আরেকটি সেতুর এপ্রোস সড়কের পাশ থেকে মাটি সরে গেছে। দ্রুত পানি না কমলে এটিও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে। দু’টি সেতুর কাছে বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায় ওই এলাকাসহ আশেপাশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকার কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনে গিয়ে দেখা গেছে সেখানেও পানি অনেকটা কমে গেছে।

ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, কম্পিউটারসহ ইলেকট্রনিক ডিভাইস ঠিকঠাক থাকলে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দুয়েকদিনের মধ্যে কার্যক্রম শুরু করা যাবে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে উপজেলার উপজেলার ৪৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়। ওইসব গ্রামের ১৬৯৭টি পরিবার পানিবন্দি হয়। পানির তোড়ে ভেঙে যায় উপজেলার গাজির বাজার এলাকার একটি অস্থায়ী সেতু। এতে আখাউড়া-আগরতলা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও প্রায় ১০টি ব্রিজ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত লোকদেরকে উপজেলার ১১টি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে পানি কমতে থাকায় শুক্রবার চারটি আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা লোকজন নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছে।

উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন ও দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন জানান, তাদের দুই ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকাতেই পানি কমে গেছে। এখন আর কেউ আটকে থাকার মতো অবস্থায় নেই। পর্যাপ্ত ত্রাণ সুবিধাও পাওয়া যাচ্ছে বলে তারা জানান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পীরবাড়ি এলাকার প্রবাসী মান্না রহমান বলেন, ‘আমরা যারা প্রবাসে থাকি আমাদের মনের মধ্যে দেশের মায়া বেশি কাজ করে। আমি ছয় দিনের জন্য দেশে এসেছি আমি কাল শনিবার প্রবাসে চলে যাবে এই তিনদিন পরিবারকে সময় না দিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য খাবার নিয়ে এসেছি। আমি তাদেরকে সাহায্যের হাত বাড়াতে পেরে মনে অনেক শান্তি পাচ্ছি।

তিনি বলেন, ‘আমার বড় ভাই আতিকুর রহমান দুবাই থেকেও ফান্ড তৈরি করছে বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য। তিনি সকল বিত্তবানদের দেশের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পাহাড়পুর ইউনিয়নের ছাত্র সবুজ, সুমন হাজারী, রান্না প্রমুখ বলেন, আমাদের পাশ্ববর্তী উপজেলার ভাইবোনেরা বন্যায় কষ্ট করছে এজন্য আমরা ৩০০ পরিবারকে শুকনা খাবার দিতে এসেছি।’

এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি জানান, মঙ্গলবার থেকে দেখা দেওয়া বন্যায় মোট ৪৭ গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে ১৬৯৭ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন। তাদেরকে উপজেলার ১১টি আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছিল। তবে পানি কমতে থাকায় চারটি আশ্রয়কেন্দ্রের লোকজন বাড়িতে ফিরে গেছে।

পাঁচ লাখ টাকা পাওয়া যায়। এর মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত ৫২০টি পরিবারের মধ্যে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। ৬০০ পরিবারকে দেওয়া হয়েছে শুকনো খাবার।’

তিনি বলেন, ‘আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে গত ২৪ ঘণ্টায় হাওড়া নদীর লেভেলে ৬ সেন্টিমিটার পানি হ্রাস পেয়েছে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আখাউড়ার আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়ছেন মানুষ

আখাউড়ার আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়ছেন মানুষ
ছবি : প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকাল নাগাদ দেড় থেকে দুই ফুট পানি কমে গেছে। এই অবস্থায় অনেক পরিবারই আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা করা হচ্ছে।

প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, পানি কমলেও স্রোতের তোড়ে আখাউড়া-কসবা সড়কের দেবগ্রাম ও নয়াদিল এলাকাকে ভাগ করা একটি ছোট্ট সেতুর একপাশ ধসে যায়। এতে বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) রাত থেকে আখাউড়া উপজেলার সাথে কসবা উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া পৌর এলাকার দেবগ্রামে নতুন নির্মাণ হওয়া আরেকটি সেতুর এপ্রোস সড়কের পাশ থেকে মাটি সরে গেছে। দ্রুত পানি না কমলে এটিও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে। দু’টি সেতুর কাছে বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায় ওই এলাকাসহ আশেপাশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকার কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনে গিয়ে দেখা গেছে সেখানেও পানি অনেকটা কমে গেছে।

ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, কম্পিউটারসহ ইলেকট্রনিক ডিভাইস ঠিকঠাক থাকলে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দুয়েকদিনের মধ্যে কার্যক্রম শুরু করা যাবে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে উপজেলার উপজেলার ৪৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়। ওইসব গ্রামের ১৬৯৭টি পরিবার পানিবন্দি হয়। পানির তোড়ে ভেঙে যায় উপজেলার গাজির বাজার এলাকার একটি অস্থায়ী সেতু। এতে আখাউড়া-আগরতলা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও প্রায় ১০টি ব্রিজ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত লোকদেরকে উপজেলার ১১টি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে পানি কমতে থাকায় শুক্রবার চারটি আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা লোকজন নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছে।

উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন ও দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন জানান, তাদের দুই ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকাতেই পানি কমে গেছে। এখন আর কেউ আটকে থাকার মতো অবস্থায় নেই। পর্যাপ্ত ত্রাণ সুবিধাও পাওয়া যাচ্ছে বলে তারা জানান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পীরবাড়ি এলাকার প্রবাসী মান্না রহমান বলেন, ‘আমরা যারা প্রবাসে থাকি আমাদের মনের মধ্যে দেশের মায়া বেশি কাজ করে। আমি ছয় দিনের জন্য দেশে এসেছি আমি কাল শনিবার প্রবাসে চলে যাবে এই তিনদিন পরিবারকে সময় না দিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য খাবার নিয়ে এসেছি। আমি তাদেরকে সাহায্যের হাত বাড়াতে পেরে মনে অনেক শান্তি পাচ্ছি।

তিনি বলেন, ‘আমার বড় ভাই আতিকুর রহমান দুবাই থেকেও ফান্ড তৈরি করছে বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য। তিনি সকল বিত্তবানদের দেশের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পাহাড়পুর ইউনিয়নের ছাত্র সবুজ, সুমন হাজারী, রান্না প্রমুখ বলেন, আমাদের পাশ্ববর্তী উপজেলার ভাইবোনেরা বন্যায় কষ্ট করছে এজন্য আমরা ৩০০ পরিবারকে শুকনা খাবার দিতে এসেছি।’

এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি জানান, মঙ্গলবার থেকে দেখা দেওয়া বন্যায় মোট ৪৭ গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে ১৬৯৭ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন। তাদেরকে উপজেলার ১১টি আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছিল। তবে পানি কমতে থাকায় চারটি আশ্রয়কেন্দ্রের লোকজন বাড়িতে ফিরে গেছে।

পাঁচ লাখ টাকা পাওয়া যায়। এর মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত ৫২০টি পরিবারের মধ্যে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। ৬০০ পরিবারকে দেওয়া হয়েছে শুকনো খাবার।’

তিনি বলেন, ‘আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে গত ২৪ ঘণ্টায় হাওড়া নদীর লেভেলে ৬ সেন্টিমিটার পানি হ্রাস পেয়েছে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত