ভূমিকম্প, মেঘের গর্জন, ঝড়-বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি—সবই মহান আল্লাহর মহাশক্তির ছোট্ট নিদর্শন। এগুলো শুধু প্রাকৃতিক ঘটনা নয়, বরং মানুষের গুনাহের ফল এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা।
কোরআনের সতর্কবাণী
আল্লাহ বলেন: “বলে দাও, আল্লাহ তোমাদের উপর থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম।”
(সুরা আন‘আম: ৬৫)
আরেক আয়াতে বলেন: “আমি ভয় দেখানোর জন্যই (তাদের কাছে আজাবের) নিদর্শনগুলো পাঠাই।”
(সুরা বনি ইসরাইল: ৫৯)
আবার বলেন: “যে বিপদ-আপদই তোমাদের ওপর আসুক না কেন, তা হচ্ছে তোমাদের নিজেদের হাতের কামাই। আর আল্লাহ তোমাদের অনেক (অপরাধ) ক্ষমা করে দেন।”
(সুরা শূরা: ৩০)
নবিজীর দিকনির্দেশনা
রাসূল ﷺ বলেছেন— “যে ব্যক্তি এ দোয়া তিনবার পড়বে, সে ভূমি ও আকাশের দুর্যোগ থেকে হেফাজতে থাকবে।”
বিশেষ দোয়া ও আমল
১. ইউনুস (আ.)-এর দোয়া
﴿ لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ ﴾
লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জ্বালিমিন।
অর্থ: “আপনার ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আপনি পবিত্র, আমি অবশ্যই জালেমদের অন্তর্ভুক্ত।”
(সুরা আম্বিয়া: ৮৭)
২. আয়াতুল কুরসি – রাতে ঘুমানোর আগে একবার পড়ে নিলে আল্লাহ তার পরিবার ও প্রতিবেশীকেও হেফাজত করেন।
৩. সুরা আরাফ-এর দোয়া ﺃَﻧﺖَ ﻭَﻟِﻴُّﻨَﺎ ﻓَﺎﻏْﻔِﺮْ ﻟَﻨَﺎ ﻭَﺍﺭْﺣَﻤْﻨَﺎ ۖ ﻭَﺃَﻧﺖَ ﺧَﻴْﺮُ ﺍﻟْﻐَﺎﻓِﺮِﻳﻦَ
উচ্চারণ- আন্তা ওয়ালিয়্যুনা ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা, ওয়া আন্তা খইরুল গফিরিন। অর্থ: “আপনি আমাদের রক্ষক। আমাদের ক্ষমা করুন, দয়া করুন। আর আপনি সর্বোত্তম ক্ষমাকারী।”
(সুরা আরাফ: ১৫৫)
৪. দোয়া: لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلّا بِاللهِ
লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
(বুখারি ও মুসলিম)
ভূমিকম্পের সময় আমল
ভূমিকম্প শুরু হলে মাটির দিকে তাকিয়ে বারবার পড়বেন-
“আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, লা শারিকালাহু, ফাবি আইয়্যে আ’লাঈ রাব্বিকুমা তুকাজ্জিবান।”
হাদীসের সতর্কবার্তা
রাসূল ﷺ ইঙ্গিত দিয়েছেন—যখন মানুষের মাঝে অবাধ গুনাহ, অবৈধ সম্পদ আত্মসাৎ, জাকাতকে জরিমানা মনে করা, ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া বিদ্যা অর্জন, মসজিদে শোরগোল, পিতা-মাতার অবমাননা, দুর্বল শাসকের উত্থান—এসব ব্যাপক আকার ধারণ করবে, তখন একের পর এক আল্লাহর নিদর্শন নেমে আসবে। যেমন—
রক্তিম ঝড়, ভূমিকম্প, ভূমিধস, রূপ বিকৃতি, পাথরবৃষ্টি ইত্যাদি। (তিরমিজি, হাদিস: ১৪৪৭)