মাদারীপুরের শিবচরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে জুতাপেটা করার অভিযোগ উঠেছে । এ অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (০৯ মে) দুপুরে উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের রিয়াজউদ্দিন মাদবর কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিন গিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছুটি হওয়ার কিছুক্ষণ আগে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপর তলা থেকে নিচে নামেন। এসময়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে তার পায়ে থাকা জুতা খুলে নিক্ষেপ করেন। ছাত্ররা ভয় পেয়ে দৌড়ে ক্লাস রুমে প্রবেশ করার পর শিক্ষক হাফিজুর রহমান ক্লাস রুমে গিয়ে প্রায় ২০ জন ছাত্রকে জুতা খুলে পিটুনি দেন। এই ঘটনায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতংক তৈরি হয়েছে। এবং এলাকায় মানুষের মধ্যে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদ বলেন, আমাদের হেড স্যার হাফিজুর রহমান মঙ্গলবার দুপুরে আমিসহ আমাদের ক্লাসের প্রায় ২০ জনকে জুতা দিয়ে পিটিয়েছে। আমরা নিচে নেমেছি আর হেড স্যার জুতা খুলে নিক্ষেপ করে। পরে ক্লাসে গেছি, তারপর আমাকে দুইটা মারছে। আর সবাইকে পিঠে একটা করে মারছে জুতা দিয়ে।
বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী আলআমিন বলেন, আমরা ছুটির জন্য নিচে গেছিলাম, তারপর ক্লাসে গেছি, তারপর দেখি হেড স্যার হাফিজুর রহমান জুতা দিয়ে পিটাইতেছে আমাদের।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর ভাই সাইদুর রমান বলেন, মঙ্গলবার আনুমানিক তিনটার সময় আমার ছোট ভাই আমার কাছে এসে কান্নাকাটি করে জানায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজ স্যার তাদের জুতা দিয়ে পিটিয়েছে। পরে সবার কাছ থেকে জানতে পারি ছুটির কিছুক্ষণ আগে তারা নিচে নামলে হেড স্যার জুতা নিক্ষেপ করে, পরে তারা ভয় পেয়ে ক্লাসরুমে গেলে সবাইকে জুতা দিয়ে পিটিয়েছে।
প্রধান শিক্ষক তার ছাত্রদের জুতা দিয়ে পিটাতে পারেন কি না, এমন প্রশ্নে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম গিয়াস মাতুব্বর বলেন, সেটা তো পারে না। এখন আমরা এক জায়গায় বসি। তারপর প্রয়োজনে মুচলেকা নেব, যেন সে আর কোনোদিন এ ধরনের কাজ করে না। যদি করে তাহলে চাকরি থেকে অব্যাহতির ব্যবস্থা করে দেব। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক মো. হাফিজুর রহমানকে ফোন দিয়ে জানতে চাইলে, তিনি ঘটনা অস্বীকার করেন।
শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মুন্সী রুহুল আসলাম বলেন, আমাকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কেউ এমন অভিযোগ দেয়নি। ঘটনাটি আমি শুনেছি সন্ধ্যায়। একজন সাংবাদিক জানিয়েছে। একজন এটিও কে বুধবার (১০ মে) স্কুলে গিয়ে তদন্ত করার জন্য বলেছি। যদি এর সত্যতা মিলে, তাহলে অবশ্যই আমরা বিভাগীয় ব্যবস্থা নেব।
