ঠাকুরগাঁওয়ে যুবলীগের এক নেতাকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ১১ মে (বৃহস্পতিবার) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। তবে পুলিশ সুপার বলছেন, প্রশাসনিক কারণে ওসি কামাল হোসেনকে প্রত্যাহার করে রংপুর রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এসময় তিনি বলেন, প্রত্যাহারের অর্ডারে প্রশাসনিক কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। প্রশাসনিক কারণ মানে অনেক কিছু বোঝায়। এছাড়াও অভিযুক্ত আরও চারজন পুলিশের বিরুদ্ধে এখনো কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য যে, গত ২৯ এপ্রিল রাতে শহরের পাবলিক ক্লাব মাঠে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলার দোকান বরাদ্দ নিয়ে মেলা কমিটির সাথে যুবলীগের কয়েকজনের বাকবিতন্ডা হয়। পরে মেলা কমিটি পুলিশের সহায়তা চাইলে সেখানে সদর থানার ওসি কামাল হোসেনসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হন।
এসময় এক পর্যায়ে জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান পুলকের সাথে ওসি কামাল হোসেনের বাকবিতন্ডা ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে বলে পুলকের ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া থেকে জানা যায়।
ভিডিও থেকে আরো জানা যায়, পরে সেখান থেকে পুলককে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে থানার ভেতর তার চোখে কাপড় বেঁধে নির্যাতন করে হাত ভেঙে ফেলে। ঘটনার তিনদিন পর জামিন নিয়ে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় পুলক।
এ ঘটনায় গতকাল ১০ মে (বুধবার) ওসি কামাল হোসেনসহ ৫ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার আবেদন করেন ঠাকুরগাঁও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান পুলক। দীর্ঘ শুনানি শেষে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন এবং জেলা সিভিল সার্জনকে বাদীকে চিকিৎসা প্রদান করতে আদেশ প্রদান করেন। আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ।
আদালতের দেওয়া অভিযোগে অভিযুক্তরা হলেন, ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন, ওসি (অপারেশন) মো. লতিফ, এসআই খোকা চন্দ্র রায় ও মোহাম্মদ হাফিজ এবং এএসআই মো. মোতালেব।