মেহেরপুরের শতাধিক নলকূপে পানি উঠা বন্ধ
তাপদাহের কারনে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরর নিচে নেমে যাওয়ায় মেহেপুর ও মুজিবনগর উপজেলার শতাধিক নলকুপে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে। সেই সাথে কিছু কিছু এলাকায় সেচ পাম্প গুলোতেও পানি উঠছে না। এতে পানি সংকটে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার। এপ্রিলের শেষের দিকে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
অস্বাভাবিকভাবে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এলাকাবাসী রয়েছে দুর্ভোগে। খাবার পানির অভাব দেখা দিয়েছে ওইসব এলাকায়। মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ এলাকায় অগভীর নলকূপে পানি উঠা বন্ধ হয়ে গেছে। খাবার পানি, গোসলের ও গৃহস্থলীর কাজের জন্য পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলার পুকুর ও জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে।
সদর উপজেলার বুড়িপোতা ইউনিয়নের বাজিতপুর গ্রামের রমজান আলী বলেন, খাওয়ার পানি সংকট, সেই সাথে তিব্রতাপদাহে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। একই গ্রামের সফুরা খাতুন বলেন, টিউবওয়েলে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে গভির নলকূপ থেকে পানি এনে সংগ্রহ করে রাখছি।
শালিকা গ্রামের মজিদ বলেন, ৭ ফুট নিচে মাটি খুড়ে পাম্প বসিয়েছি। এতে মোটমুটি পানি উঠছে। তবে দু-একদিন এমন তাপদাহ থাকলে আর হয়তো পানি পাবো না।
মুজিবনগর উপজেলার সাংবাদিক হাসান মোস্তাফিজুর জানান, তার উপজেলার বল্লবপুর, ভবেরপাড়া, বাগোয়ান গ্রামের কয়েকশ নলকূপ থেকে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও বেলেগাড়ি, টুপলার মাঠ এলাকার সেলো ইঞ্জিন চালিত বেশ কিছু সেচ পাম্পেও পানি উঠছে না।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগী হোসেন জানান, সেচ পাম্প গুলোকে মাটি খুড়ে ৫-৭ ফুট নিচে বসানোর পরামর্শ দিচ্ছি। উদ্যান জাতীয় ফসলের গোড়ায় আলাদা করে পানি দেওয়ার কথাও বলা হচ্ছে। এতে কিছুটা হলেও ফসলের ক্ষতির হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর জানিয়েছেন, পরিবেশগত নানা কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণত পানির স্তর গড়ে ৪০ থেকে ৭০ ফুট গভীরে। বেশিরভাগ এলাকায় এ স্তরে পৌঁছালেই পানি পাওয়ার কথা। কিন্তু বেশিরভাগ এলাকায় অস্বাভাবিকভাবে নীচে নেমে গেছে পানির স্তর।
মেহেরপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দীন জানান, পানির লেয়ার নীচে নেমে যাওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তারপর বৃষ্টিও নেই। যারা নিজস্বভাবে নলকুপ স্থাপন করেছে তাদেরই এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। সরকারিভাবে গভীর নলকূপে তেমন কোন সমস্যা নেই। তবে নতুন করে কেও যদি নলকূপ স্থাপন করে, তবে গভির নলকূপ স্থাপন করতে হবে।