বিদেশি প্রতিনিধিরা কোথাও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগের কথা বলেননি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি আশা করেছিল বিদেশি প্রতিনিধিরা এসে একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগের কথা বলবে, এটা কেউ বলেনি। কারো সঙ্গে কোনো আলাপে এসব প্রসঙ্গই আসেনি। বিএনপির এক দফা হচ্ছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকার গঠন। এটি বাংলাদেশে যেমন হালে পানি পায়নি, বিদেশিদেরও সমর্থনও পায়নি।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিদেশি প্রতিনিধিদের আলোচনায় শুধু একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা এসেছে। এমনকি সবার অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন, সেই কথাটাও আসেনি।
অবশ্যই আমরা চাই বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক, সবাইকে নিয়েই আমরা নির্বাচন করতে চাই- উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। সে অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে এবং নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
১২ জুলাই পল্টনে সমাবেশ করে বিএনপি মহাসচিবের এক দফা ও ১৩ জুলাইয়ের ৩১ দফা ঘোষণা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দুই দিন আগে বিএনপি ঘোষণা করেছিল এক দফা, পরের দিন দেখলাম ৩১ দফা, আসলে বিএনপির কয় দফা এটা নিয়েই অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে।
২০১৩ সাল থেকেই কিছুদিন পরপর এক দফার আন্দোলন শুনে আসছি- উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটি হচ্ছে সাপের খোলস বদলানো এবং একই ঢোল বারবার বাজানোর মতো। সাপ যেমন ক’দিন পরপর খোলস বদলায়, বিএনপিও বছরান্তে একদফার কথা বলে, এতে নতুনত্বের কিছু নেই। নতুনত্ব যেটি আছে সেটি হচ্ছে, তারা উন্মুখ হয়ে বসে ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা কখন আসবে এবং তখন তারা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। উদ্দেশ্য ছিল, তারা কত বড় সমাবেশ করতে পারে তা বিদেশিদের দেখানো।
তিনি বলেন, বিএনপি অফিসের সামনে নয়াপল্টনের পুরো রাস্তাজুড়ে বড় জোর ৩০ হাজার মানুষ ধরে। সেখানে না হয় আরও ১০ হাজার আমি যোগ করলাম। এর চেয়ে বেশি মানুষ সেখানে হয়নি। আর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১২ ঘণ্টার নোটিশে তিনটা রাস্তাজুড়ে লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ করেছে। সবাই দেখেছে কত বড় সমাবেশ আওয়ামী লীগ করার ক্ষমতা রাখে।
সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সরকার সংলাপের উদ্যোগ নেবে কি-না প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন আয়োজক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সংলাপ নিশ্চয়ই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে হতে পারে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যদি কোনো কথাবার্তা বলতে হয় সেটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বলতে হবে। কোনো দল চাইলে নির্বাচন কমিশনের কাছে যেতে ও তাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পারে। নির্বাচন কমিশন যদি আমাদের ডাকে আমরাও যাব।