প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, “যারা (বিএনপি) পালিয়েই আছে, সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামির দ্বারা যে দল পরিচালিত হয়, সেই দলের মুখে পালানোর কথা শোভা পায় না। আওয়ামী লীগ পালায় না, পালায় না।”
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কৃযক লীগের এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তাদের মুখে বড় বড় কথা, আমরা নাকি পালানোর পথ পাবো না। তারা আমাদের নেতাকর্মীদের নামে অসংখ্য মামলা করেছে, অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। গ্রেনেড হামলা করেছে। আমরা তো প্রতিশোধ নেইনি। এক ভাগ প্রতিশোধ নিলেও তাদের হদিস পাওয়া যেত না। আমরা প্রতিশোধ নেইনি কারণ আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের কোনো মানুষের যদি আপনজন খুন হয়, তবে তারা বিচার চায়। কিন্তু আমরা ১৫ আগস্ট যারা আপনজন হারিয়েছিলাম, আমাদের বিচার চাওয়ার কোনো অধিকারই ছিল না। এমনকি মামলা করারও অধিকার ছিল না। উল্টো সেই খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। শুধু তাই না, জিয়াউর রহমান তাদের পুরস্কৃত করে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স দিয়ে, সেটাকে আবার ভোট কারচুপির মাধ্যমে সংসদে পাস করা হয়। জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় এসে সেই ফারুককে (বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল ফারুক) ফ্রিডম পার্টি তৈরি করা ও রাজনীতি করার সুযোগ দেয়, রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে জনগণের ভোট চুরি করে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন করে। যেই নির্বাচনে ২-৩% ভোটও পড়েনি। জনগণের ভোট চুরি করে কর্নেল রশিদকে তিনি সংসদের বিরোধী দলের আসনে বসায় এবং হুদাকে সংসদ সদস্য করেন। খুনিদের উৎসাহিত করে একের পর একে অমানবিক কাজ করে গেছেন। আর বাংলাদেশকে জঙ্গির দেশ বানিয়েছিল।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আওয়ামী লীগ যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য বারবার বাধা এসেছে। সেই বাধা দিয়েছে ওই স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের যারা মাস্টার প্রভু। তারা কিন্তু এই চক্রান্তে এখনো লিপ্ত। আমি যখন দেশে ফিরি তখন প্রতি পদে পদে বাধা এসেছে। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পার হতে হয়েছে। মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের একমাত্র শত্রু আওয়ামী লীগ। তাই আওয়ামী লীগকে তারা কোনোমতেই ক্ষমতায় আসতে দেবে না। সেইসব প্রতিবন্ধকতা পার হয়েই কিন্তু আজকে আমরা শুধু ক্ষমতায় আসা না, আমরা প্রমাণ করেছি যে- আওয়ামী লীগই পারে এ দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে।”
কৃযক লীগের সভাপতি সমীর চন্দের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।