দীর্ঘ দাম্পত্যে একই বাগানের দুটি গোলাপের মতো ছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো (৫১) ও তার স্ত্রী সোফি গ্রেগোয়ার (৪৮)।
মান-অভিমান, হাসি-আনন্দের জোয়ারে ভাসতে ভাসতে কেটে গেছে জীবনের ১৮ বসন্ত। বিশ্বনেতাদের সারিতে ‘রোমান্টিক জুটি’ নামে পরিচিত ট্রুডো-সোফির মন দেওয়া-নেওয়া হয় ২০০৩ সালের এক গালাপার্টির রাতে। কিন্তু শুরুটা ছিল আগের। সেই ছেলেবেলায়।
ছোট্ট সোফি তখন ট্রুডোর ছোট ভাই মাইকেলের ক্লাসমেট। সে সময় হঠাৎ করেই একদিন একটা চুমুও দিয়েছিলেন সোফিকে। তবে তা নিছকই খেলার ছলে। মনবাগানে ভ্রমর দূরের কথা ফুলও ফোটেনি তখন।
সেদিন সত্যিই কি তারা জানতেন-‘একদিন বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলবে তাদের প্রেম কাহিনী। ঝড় তুলবে তাদের বিচ্ছেদের গল্প!
জাস্টিন ট্রুডো ও তার স্ত্রী সোফি গ্রেগোয়ারের দীর্ঘ ১৮ বছরের দাম্পত্য জীবন ছিল অনেকের আদর্শ আর অনুকরণের জায়গা। বুধবার কেউ কাউকে কোনো দোষ না দিয়েই ইতি টানলেন দুজনের মধুর দাম্পত্যের।
ট্রুডো ইনস্টাগ্রাম বিবৃতিতে লিখেন, ‘সবাইকে হ্যালো। সোফি এবং আমি এই সত্যটি শেয়ার করতে চাই যে, অনেক অর্থবহ ও কঠিন কথোপকথনের পর আমরা আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ও এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। কিন্তু কেন এই ভাঙন? কেন হঠাৎ করেই দূরে সরে গেলেন দুজন? ‘মান ভাঙলে’ হয়তো সে উত্তরও মিলবে একদিন!
২০১৫ সালে ট্রুডো যখন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তখন এই দম্পতি ভোগ ম্যাগাজিনে একসাথে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সে সাক্ষাৎকারে ট্রুডো বলেছিলেন, সোফির সঙ্গে তিনি যখন প্রথম দেখা করেছিলেন তখন বলেছিলেন, ‘আমার বয়স ৩১ বছর, এবং আমি ৩১ বছর যাবত তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।’
জাস্টিন ট্রুডো আর গ্রেগোয়ার সোফিয়া ২০০৫ সালের ২৮ মে পরস্পর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কানাডার শহর মন্ট্রিলের সেইন্ট-ম্যাডেলিন ডি’আউটরমন্ট চার্চে ক্যাথলিক রীতিতে তাদের বিয়ে হয়।
সিবিসি নিউজ জানায়, চার্চে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে নববধূ সোফি বাইরে থাকা জনতার উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আমি বিশ্বের সবচেয়ে ভাগ্যবান নারী।’
তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানটিও ছিল সাদামাটা আর মার্জিত। সোফির ইচ্ছা ছিল অন্যান্য বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে আলাদা করে তুলবেন। বিয়ের কোনো কেক ছিল না। তার পরিবর্তে ছিল অগণিত মিষ্টান্ন, চা আর কফি।
২০১৫ সালের ৪ নভেম্বর কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন জাস্টিন ট্রুডো।
কানাডিয়ান প্রেস অনুসারে, কয়েক মাস পড়েই ট্রুডো বলেছিলেন ফার্স্টলেডি হিসাবে সোফির ভূমিকা আনুষ্ঠানিক হওয়া উচিত বলে তিনি বিশ্বাস করেন না।
ট্রুডোকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয় তাহলে একজন প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীর কি ভূমিকা হওয়া উচিত? তিনি বলেছিলেন, ‘বিভিন্ন পারিবারের বিভিন্ন ক্ষমতা রয়েছে। তাই এটি অবশ্যই নমনীয় হওয়া উচিত।’