বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ দফা প্রস্তাব

ন্যাশনাল ডেস্ক এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ দফা প্রস্তাব
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘টুওয়ার্ডস আ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বব্যাপী চলমান আর্থিক সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব আর্থিক ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন প্রয়োজন।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘টুওয়ার্ডস আ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে তিনি আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনে ৫ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবগুলো হলো- প্রথমত, এমডিবি (বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকসমূহ), আইএফআই (আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ) ও বেসরকারি ঋণদাতা সংস্থাগুলোকে অবশ্যই তাদের অগ্রাধিকার পুনরায় একত্রিত করতে হবে এবং এসডিজি বাস্তবায়ন ও জলবায়ু পদক্ষেপের জন্য অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহ করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য কম খরচে, ছাড়ের হারে এবং বিশেষত উচ্চ পরিমাণে অনুদানে তহবিল উপলব্ধ করা দরকার।

তৃতীয়ত, সমস্ত ঋণপ্রদানকারী উপকরণের দুর্যোগের ধারা থাকা উচিৎ, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো সংকটের সময় ধাক্কা মোকাবিলা করতে পারে।

চতুর্থত, ঋণদাতাদের মধ্যে সমন্বয় ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ন্যায্য ও কার্যকর ঋণ ত্রাণ ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

পঞ্চমত, কোটার পরিবর্তে এসডিআর (স্পেশাল ড্রইং রাইটস) ঋণসীমা প্রয়োজন এবং দুর্বলতার ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিৎ, যা হবে সহজ ঋণ প্রক্রিয়া দ্বারা সমর্থিত।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামোর জরুরি সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু সংস্কারের প্রকৃতি ও ব্যাপ্তি নিয়ে সমঝোতার অভাব রয়ে গেছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক পাবলিক অর্থায়ন ব্যয়বহুল এবং নাগালের বাইরে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ঋণের সংকট এড়াতে উচ্চ সুদের হারের ঋণ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি। বাংলাদেশ কখনোই ঋণ পরিশোধে খেলাপি হয়নি এবং আমরা আশা করি এই রেকর্ড বজায় থাকবে।’

জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈশ্বিক ক্রেডিট রেটিং সিস্টেম অবশ্যই পর্যালোচনা করা উচিৎ বিষয়ে একমত পোষণ করে তিনি বলেন, বর্তমান রেটিং সিস্টেম অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জন্য তহবিলের প্রাপ্যতাকে আরও সীমাবদ্ধ করে।

তিনি আরও বলেন, ‘তাদের ভোটাধিকার, কোটা এবং এমডিবি ও আইএফআই-তে প্রতিনিধিত্বের সীমাবদ্ধতাও তাদের দর কষাকষির ক্ষমতাকে হ্রাস করে।’

শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামোর জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং গ্লোবাল সাউথের প্রতিনিধিত্ব করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর উন্নয়নের বিবরণ প্রমাণ করে যে আমরা আমাদের ভূমিকা পালন করতে পারি। সময় এসেছে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার আমাদের প্রত্যাশার প্রতি সাড়া দেওয়ার।’

সুদৃঢ় সামষ্টিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশকে দীর্ঘদিন ধরে কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারির ঠিক আগে আমাদের অর্থনীতি ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।’

তিনি বলেন, কোভিড মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশের অর্থনীতি চাপের মধ্যে ছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘যদিও আমরা এখনও ৬-৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখছি; আমরা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, পেমেন্টের ভারসাম্য পরিচালনা এবং আমাদের উন্নয়ন ব্যয় বজায় রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের আর্থিক এবং নীতির জায়গাতে স্পষ্ট চাপ রয়েছে।’

তিনি বলেন, তার সরকার দেশে দারিদ্র্যের মাত্রা ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের মাত্রা ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ দফা প্রস্তাব

বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ দফা প্রস্তাব
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘টুওয়ার্ডস আ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বব্যাপী চলমান আর্থিক সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব আর্থিক ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন প্রয়োজন।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘টুওয়ার্ডস আ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে তিনি আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনে ৫ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবগুলো হলো- প্রথমত, এমডিবি (বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকসমূহ), আইএফআই (আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ) ও বেসরকারি ঋণদাতা সংস্থাগুলোকে অবশ্যই তাদের অগ্রাধিকার পুনরায় একত্রিত করতে হবে এবং এসডিজি বাস্তবায়ন ও জলবায়ু পদক্ষেপের জন্য অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহ করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য কম খরচে, ছাড়ের হারে এবং বিশেষত উচ্চ পরিমাণে অনুদানে তহবিল উপলব্ধ করা দরকার।

তৃতীয়ত, সমস্ত ঋণপ্রদানকারী উপকরণের দুর্যোগের ধারা থাকা উচিৎ, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো সংকটের সময় ধাক্কা মোকাবিলা করতে পারে।

চতুর্থত, ঋণদাতাদের মধ্যে সমন্বয় ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ন্যায্য ও কার্যকর ঋণ ত্রাণ ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

পঞ্চমত, কোটার পরিবর্তে এসডিআর (স্পেশাল ড্রইং রাইটস) ঋণসীমা প্রয়োজন এবং দুর্বলতার ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিৎ, যা হবে সহজ ঋণ প্রক্রিয়া দ্বারা সমর্থিত।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামোর জরুরি সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু সংস্কারের প্রকৃতি ও ব্যাপ্তি নিয়ে সমঝোতার অভাব রয়ে গেছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক পাবলিক অর্থায়ন ব্যয়বহুল এবং নাগালের বাইরে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ঋণের সংকট এড়াতে উচ্চ সুদের হারের ঋণ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি। বাংলাদেশ কখনোই ঋণ পরিশোধে খেলাপি হয়নি এবং আমরা আশা করি এই রেকর্ড বজায় থাকবে।’

জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈশ্বিক ক্রেডিট রেটিং সিস্টেম অবশ্যই পর্যালোচনা করা উচিৎ বিষয়ে একমত পোষণ করে তিনি বলেন, বর্তমান রেটিং সিস্টেম অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জন্য তহবিলের প্রাপ্যতাকে আরও সীমাবদ্ধ করে।

তিনি আরও বলেন, ‘তাদের ভোটাধিকার, কোটা এবং এমডিবি ও আইএফআই-তে প্রতিনিধিত্বের সীমাবদ্ধতাও তাদের দর কষাকষির ক্ষমতাকে হ্রাস করে।’

শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামোর জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং গ্লোবাল সাউথের প্রতিনিধিত্ব করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর উন্নয়নের বিবরণ প্রমাণ করে যে আমরা আমাদের ভূমিকা পালন করতে পারি। সময় এসেছে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার আমাদের প্রত্যাশার প্রতি সাড়া দেওয়ার।’

সুদৃঢ় সামষ্টিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশকে দীর্ঘদিন ধরে কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারির ঠিক আগে আমাদের অর্থনীতি ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।’

তিনি বলেন, কোভিড মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশের অর্থনীতি চাপের মধ্যে ছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘যদিও আমরা এখনও ৬-৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখছি; আমরা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, পেমেন্টের ভারসাম্য পরিচালনা এবং আমাদের উন্নয়ন ব্যয় বজায় রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের আর্থিক এবং নীতির জায়গাতে স্পষ্ট চাপ রয়েছে।’

তিনি বলেন, তার সরকার দেশে দারিদ্র্যের মাত্রা ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের মাত্রা ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত