ইরানে নিপীড়িত নারীদের জন্য নার্গিস মোহাম্মদীর সংগ্রাম এবং সবার মানবাধিকার ও স্বাধীনতার জন্য তার যে লড়াই, এরই স্বীকৃতিতে শুক্রবার নরওয়ের নোবেল ইন্সটিটিউট শান্তি পুরস্কারের জন্য তার নাম ঘোষণা করেছে।
জাতিসংঘ নার্গিসের এ পুরস্কার জয়কে ইরানি নারীদের সাহস, দৃঢ়সংকল্প এবং বিশ্বের জন্য তাদের অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে বর্ণনা করেছে।
প্রকাশ্যে কথা বলার কী মূল্য দিতে হতে পারে তা ভাল করেই জানেন নার্গিস। এরপরও মুখ বন্ধ রাখতে নারাজ তিনি। জেলে থেকেও কথা বলেছেন নার্গিস। গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন।
নোবেলজয়ের পর নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নার্গিস বলেন, যদি সারাজীবন কারাবন্দিও থাকতে হয়, তবুও কখনো গণতন্ত্র ও সমতার জন্য আন্দোলন ও সংগ্রাম বন্ধ করব না। নারীর মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমি নিপীড়নমূলক বৈষম্য ও লিঙ্গভিত্তিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।
তিনি আরো বলেন, আমি আশা করি এ স্বীকৃতি পরিবর্তনের জন্য প্রতিবাদকারী ইরানিদের আরও শক্তিশালী এবং আরো সুসংগঠিত করবে। বিজয় সন্নিকটে।
গত বছর ইরানের কারাগারের নির্মম সব নির্যাতন পদ্ধতি নিয়ে ‘হোয়াইট টর্চার: ইন্টারভিউজ উইথ ইরানিয়ান উইমেন প্রিজোনারস’ শীর্ষক বই প্রকাশ এবং নির্জন কারাকক্ষে থাকা বন্দিদের কাহিনী নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্রের কারণে তিনি এরই মধ্যে সাজা খাটছেন।
নির্জন কারাকক্ষে থাকার শাস্তি খোদ নার্গিসকেও সহ্য করতে হয়েছে। তবে এতকিছুর পরও মুষড়ে পড়েননি তিনি। সম্প্রতি নার্গিস সিএনএন- কে পাঠিয়েছেন একটি দীর্ঘ চিঠি। তাতে ইরানে চার দশকের বাধ্যতামূলক হিজাব পরিধান নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন তিনি।
এ হিজাব নীতিকে নারী বন্দিদের ওপর যৌন সহিংসতা চালানো একটি ধর্মীয় রাষ্ট্রের ভন্ডামি বলে অভিহিত করেছেন নার্গিস। তার মতে, ইরানের শাসকগোষ্ঠী নিজেদের প্রভাবশালী ভাবমূর্তি এবং সমাজকে নিয়ন্ত্রণের উপায় হিসেবে নারীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ জাহির করতেই বাধ্যতামূলক হিজাব পরিধানের নীতি নিয়েছে।