গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী তীব্র সমালোচনা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে নারী ও শিশু হত্যা, হাসপাতালে হামলার ঘটনায় বিশ্বের বিবেকবান জাতি ও মানুষের ভেতর যুদ্ধ বন্ধের প্রতিধ্বনি তৈরি হয়েছে।
ইসরায়েলি নৃশংসতার বর্ণনা দিয়েছেন গাজার চিকিৎসকেরা। তারা বলছেন, ঘুমন্ত শিশু, ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুরা বোমা হামলায় ভয়ঙ্করভাবে মারা যাচ্ছে। শিশুর কফিন জড়িয়ে কান্না করছেন অসংখ্য বাবা-মা। পুরো বিশ্ব এই কান্না থামাতে ব্যর্থ।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) ইসরায়েলের হামলায় ঘুমন্ত ৮ শিশুর মৃত্যু হয়। যারা আহত হচ্ছে, তাদের চিকিৎসার কোনো সামগ্রী নেই গাজার হাসপাতালগুলোতে। ফলে নিশ্চিত মৃত্যুর সঙ্গে বেঁচে থাকার লড়াই করছেন গাজার চিকিৎসকরা।
গাজার হামাস-শাসিত সরকার বলেছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৩,৭৮৫ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ১,৫২৪ জন শিশু।
গত বুধবার ভোরে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের একটি বাড়িতে বিমান হামলায় একই পরিবারের ১০ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সী আটজন শিশু রয়েছে। শিশুরা ঘুমন্ত ছিল।
দশকের পর দশক ইসরায়েলি দখলদারত্বের শিকার ফিলিস্তিনিরা। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলকে প্রতিরোধের চ্যালেঞ্জ জানায় ফিলিস্তিনের গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর পাল্টা হিসেবে যুদ্ধ ঘোষণা করে তেল আবির।
হামাসের হামলার প্রতিশোধে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সীমান্ত প্রাচীরের কাছে অবস্থান নেয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর শত শত ট্যাংক। গাজায় অব্যাহত বিমান হামলার মধ্যেই এসব ট্যাংক গাজার কাছে নিয়ে আসা শুরু হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে- যেকোনো সময় গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরু হতে পারে।
এছাড়া ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হাতে অবরুদ্ধ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন গাজা বর্তমানে এক ভয়ানক মানবিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে ভূখণ্ডটিতে পানি, খাদ্য, জ্বালানি এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের মজুত শেষ হয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গাজায় “ব্যাপক মানবিক দুর্ভোগ” কমাতে অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।