ড্রেজারে বালু উত্তোলন: হুমকির মুখে চার গ্রামের মানুষ, নদীতে বিলিন হচ্ছে ফসলি জমি

ডেস্ক এডিটর এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
ড্রেজারে বালু উত্তোলন: হুমকির মুখে চার গ্রামের মানুষ, নদীতে বিলিন হচ্ছে ফসলি জমি
মেঘনা নদীতে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। সংগৃহীত ছবি

স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নিয়মনীতির প্রতি কোনো প্রকার তোয়াক্কা না করেই মেঘনা নদীতে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। এতে নদীর উভয় তীরের মানুষের ফসলি জমি নদীতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে পাড়াতলি ইউনিয়নের চারটি গ্রামের মানুষ।

অভিযোগ রয়েছে, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পাড়াতলি ইউনিয়নের কাৎলারচর মৌজায় মেঘনা নদীর তীরে একটি বালু মহাল রয়েছে। এ বালু মহালটি এলাকার কতিপয় অসাদু বালু ব্যবসায়ীর কাছে ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারাদারের যোগসাজশে স্থানীয় অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট বানিয়ে কাৎলারচর মৌজা থেকে আনুমানিক দেড়-দুই কিলোমিটার দূরে চাঁনপুর ইউনিয়নের মাঝেরচর ও রায়পুরা ইউনিয়নের সাহারখোলা এলাকা থেকে চক্রটি নির্বিচারে চুম্বক ড্রেজারের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে।

সরকারের উন্নয়ন কাজের অগ্রগতির জন্য চলতি বছরের ৬ ডিসেম্বর রায়পুরা উপজেলার কাৎলারচর মৌজায় বালু উত্তোলনের ইজারার কার্যাদেশ দেন নরসিংদী জেলা প্রশাসন। কার্যাদেশে চুম্বক ড্রেজারের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কাটিং ড্রেজার ব্যবহার করে বালু উত্তোলনের শর্তে ইজারা পান ভৈরব উপজেলার মেসার্স মৌসুমী ড্রেজিং প্রকল্প ও নৌ-পরিবহন বালু মহাল। জেলা প্রশাসনের নির্দেশকে অমান্য করে নিয়মনীতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এ চক্রটি কাৎলারচর মৌজা থেকে সরে গিয়ে মাঝেরচর মৌজায় অবৈধভাবে ১৫টির বেশি চুম্বক ড্রেজার দিয়ে দিন-রাত বালু উত্তোলন এবং বিক্রি করে যাচ্ছে। ইজারার নির্ধারিত জামানত বাদে অবশিষ্ট ৭৫ শতাংশ, ভ্যাট, ১৫ ও ১০ শতাংশ আয়কর বাবদ ১২ কোটি ২৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জমা না দিয়েই ৩০ নভেম্বর থেকে অবৈধভাবে চলছে বালু উত্তোলন।

রায়পুরার মাঝেরচর এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৫টিরও বেশি চুম্বক ড্রেজার ও বালুবাহী বাল্কহেড দিয়ে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করে অবাধে বিক্রি করছে চক্রটি। এর ফলে মাঝেরচর, সুলতানপুর, সাহারখোলা, ছাটাবনসহ বেশ কিছু গ্রাম নদীভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে।

মেঘনা নদীর পাড়ের বাসিন্দা শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘বালু উত্তোলনের কারণে প্রতিদিন একটু একটু করে নদীর পাড় ভেঙে পড়ছে। যে কোনো মুহূর্তে আমার বাড়িটিও নদীতে বিলিন হয়ে যেতে পারে, তা বলা যাচ্ছে না। এ প্রভাবশালী চক্রটি প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবাধে বালু উত্তোলন করছে।’

এ বিষয়ে ইজারাদার মিন্টু মিয়া বলেন, ‘আমরা কাৎলারচর মৌজায়ই বালু উত্তোলন করি। আসলে ঢেউয়ে ঢেউয়ে ড্রেজার মাঝেরচর মৌজায় চলে আসে। তাছাড়া চুম্বক ড্রেজার ছাড়া বালু উত্তোলন করা সম্ভব না। বালু উত্তোলন করতে হলে চুম্বক ড্রেজার লাগবেই।’

রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, ‘ইজারা এলাকা ছাড়া বালু উত্তোলন করার কোনো সুযোগ নেই। এমনটা করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব শর্তে বালু মহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে, সেসব শর্ত মেনেই বালু উত্তোলন করতে হবে।’

এ ব্যাপারে নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম বলেন, ‘রায়পুরা উপজেলার কাৎলারচর মৌজায় বালু উত্তোলনের ইজারা দেওয়া হয়েছে। চুম্বক ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। কাটিং ড্রেজার দিয়েই বালু উত্তোলন করতে হবে। চুম্বক ড্রেজার ব্যবহার করলে বালু মহালের ইজারা বাতিল করা হবে।’

তথ্যের সূত্র- দৈনিক বাংলা

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ড্রেজারে বালু উত্তোলন: হুমকির মুখে চার গ্রামের মানুষ, নদীতে বিলিন হচ্ছে ফসলি জমি

ড্রেজারে বালু উত্তোলন: হুমকির মুখে চার গ্রামের মানুষ, নদীতে বিলিন হচ্ছে ফসলি জমি
মেঘনা নদীতে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। সংগৃহীত ছবি

স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নিয়মনীতির প্রতি কোনো প্রকার তোয়াক্কা না করেই মেঘনা নদীতে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। এতে নদীর উভয় তীরের মানুষের ফসলি জমি নদীতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে পাড়াতলি ইউনিয়নের চারটি গ্রামের মানুষ।

অভিযোগ রয়েছে, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পাড়াতলি ইউনিয়নের কাৎলারচর মৌজায় মেঘনা নদীর তীরে একটি বালু মহাল রয়েছে। এ বালু মহালটি এলাকার কতিপয় অসাদু বালু ব্যবসায়ীর কাছে ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারাদারের যোগসাজশে স্থানীয় অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট বানিয়ে কাৎলারচর মৌজা থেকে আনুমানিক দেড়-দুই কিলোমিটার দূরে চাঁনপুর ইউনিয়নের মাঝেরচর ও রায়পুরা ইউনিয়নের সাহারখোলা এলাকা থেকে চক্রটি নির্বিচারে চুম্বক ড্রেজারের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে।

সরকারের উন্নয়ন কাজের অগ্রগতির জন্য চলতি বছরের ৬ ডিসেম্বর রায়পুরা উপজেলার কাৎলারচর মৌজায় বালু উত্তোলনের ইজারার কার্যাদেশ দেন নরসিংদী জেলা প্রশাসন। কার্যাদেশে চুম্বক ড্রেজারের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কাটিং ড্রেজার ব্যবহার করে বালু উত্তোলনের শর্তে ইজারা পান ভৈরব উপজেলার মেসার্স মৌসুমী ড্রেজিং প্রকল্প ও নৌ-পরিবহন বালু মহাল। জেলা প্রশাসনের নির্দেশকে অমান্য করে নিয়মনীতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এ চক্রটি কাৎলারচর মৌজা থেকে সরে গিয়ে মাঝেরচর মৌজায় অবৈধভাবে ১৫টির বেশি চুম্বক ড্রেজার দিয়ে দিন-রাত বালু উত্তোলন এবং বিক্রি করে যাচ্ছে। ইজারার নির্ধারিত জামানত বাদে অবশিষ্ট ৭৫ শতাংশ, ভ্যাট, ১৫ ও ১০ শতাংশ আয়কর বাবদ ১২ কোটি ২৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জমা না দিয়েই ৩০ নভেম্বর থেকে অবৈধভাবে চলছে বালু উত্তোলন।

রায়পুরার মাঝেরচর এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৫টিরও বেশি চুম্বক ড্রেজার ও বালুবাহী বাল্কহেড দিয়ে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করে অবাধে বিক্রি করছে চক্রটি। এর ফলে মাঝেরচর, সুলতানপুর, সাহারখোলা, ছাটাবনসহ বেশ কিছু গ্রাম নদীভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে।

মেঘনা নদীর পাড়ের বাসিন্দা শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘বালু উত্তোলনের কারণে প্রতিদিন একটু একটু করে নদীর পাড় ভেঙে পড়ছে। যে কোনো মুহূর্তে আমার বাড়িটিও নদীতে বিলিন হয়ে যেতে পারে, তা বলা যাচ্ছে না। এ প্রভাবশালী চক্রটি প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবাধে বালু উত্তোলন করছে।’

এ বিষয়ে ইজারাদার মিন্টু মিয়া বলেন, ‘আমরা কাৎলারচর মৌজায়ই বালু উত্তোলন করি। আসলে ঢেউয়ে ঢেউয়ে ড্রেজার মাঝেরচর মৌজায় চলে আসে। তাছাড়া চুম্বক ড্রেজার ছাড়া বালু উত্তোলন করা সম্ভব না। বালু উত্তোলন করতে হলে চুম্বক ড্রেজার লাগবেই।’

রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, ‘ইজারা এলাকা ছাড়া বালু উত্তোলন করার কোনো সুযোগ নেই। এমনটা করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব শর্তে বালু মহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে, সেসব শর্ত মেনেই বালু উত্তোলন করতে হবে।’

এ ব্যাপারে নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম বলেন, ‘রায়পুরা উপজেলার কাৎলারচর মৌজায় বালু উত্তোলনের ইজারা দেওয়া হয়েছে। চুম্বক ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। কাটিং ড্রেজার দিয়েই বালু উত্তোলন করতে হবে। চুম্বক ড্রেজার ব্যবহার করলে বালু মহালের ইজারা বাতিল করা হবে।’

তথ্যের সূত্র- দৈনিক বাংলা

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত