প্রকল্পের টাকা লুটপাটের অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

জাহাঙ্গীর আলম স্টাফ রিপোর্টার, ঠাকুরগাঁও
প্রকল্পের টাকা লুটপাটের অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও অর্থ লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গত মাসের (২১ জানুয়ারি) জেলার সদর উপজেলার ১০ নং জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম মুস্তাক এর বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন একই পরিষদের ইউপি সদস্য মো: ফারুক হোসেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কাবিখা, এলজিইডিসহ অন্যান্য প্রকল্পের প্রায় ৬০-৬৫ লক্ষ টাকা জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদ বরাদ্দ পেয়েছে। প্রকল্পের টাকা খরচের জন্য চেয়ারম্যান ও ইউপি সচীব যেনো তেনো একটি কমিটি করেন। ইউপি সসদ্যরা প্রকল্পের টাকা উত্তোলনের জন্য পাঁচটি রাস্তা উন্নয়নের বিল ভাউচারে সই করলেও একটি রাস্তাও কাজ হয়নি। তবে ইতোপূর্বে যতগুলো রাস্তার কাজ হয়েছে তা হয়েছে চল্লিশ দিনের কর্মসূচীর টাকা দিয়ে।

লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, প্রকল্পের টাকার হিসাব চাইতে গেলে চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের বরখাস্তসহ নানা প্রকার হুমকি দেয়। পরিষেদের পুকুরে মাটি ভরাটের জন্য দুই ধাপে চার লক্ষ টাকা বরাদ্দ নেওয়া হলেও এখনো পুকুর ভরাট হয়নি। এক স্কুলে টিনসেটের একটি ঘর নির্মাণের জন্য দুই লক্ষ, আরেক স্কুলে বেঞ্চ বানানোর জন্য দুই লক্ষ টাকা বরাদ্দ নিলেও বাস্তবে ৫০হাজার টাকাও খরচ হয়নি।

ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দুই লক্ষ টাকা বরাদ্দে বেশ কয়েকটি কালভার্ট নির্মাণ করা হলেও তাতে খচর হয়েছে অর্ধেক।এছাড়া বিভিন্ন ভাতা, চালের কার্ড, টিসিবির ১৭৩০টির কার্ডের মধ্যে চেয়ারম্যান একাই ৮৭০টি নিজের কাছে রাখেন। এমনকি গরিবের চালেও দরিদ্রদের কাছে থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়।

এসবের প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি ইউপি সদস্য ফারুক হোসেনের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেয় বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন।

লিখিত অভিযোগের সূত্র ধরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই ইউনিয়নের বিশ্বাসপুর গ্রামে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে দুই লক্ষ টাকা। কিন্তু গ্রামবাসীর অভিযোগ এখানে দুই লক্ষ টাকা নয়, খরচ হয়েছে ৪০-৫০ হাজার টাকা। কাজও হয়েছে নিম্নমানের। নির্মাণের সাত দিনেই চার পাশ ভেঙ্গে গেছে।

এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য মো: নাসিরুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজী হননি।
অন্যদিকে মহব্বতপুর গ্রামের কালভার্টের চিত্র একই। তবে প্রকল্প সভাপতি শ্রী কবিন্দ্র জানান, ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, কালভার্টের বরাদ্দ দুই লক্ষ টাকা ধরা হলেও বাস্তবে তা খরচ হয়েছে এক লক্ষ টাকা। আর বাকি টাকা ইঞ্জিনিয়ার ও অন্যন্যদের যাতায়াত খরচ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন জানান, চেয়ারম্যান এস.এম মুস্তাক তিনি তাঁর ইচ্ছামতো কাজ করেন। কোন কাজ সঠিক ভাবে করা হয়নি। সবখানেই চেয়ারম্যান অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে। আমরা প্রতিবাদ করলে মারমুখি আচরণ এবং বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয়।

যেখানে সাত লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেখানে কাজ হয়েছে দেড় লক্ষ টাকার। আমি চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়মের কারণে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম মুস্তাক জানান, আমার সম্পর্কে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা-বানোয়াট। তিনি (ফারুক হোসেন) এর আগেও আমার নামে অভিযোগ করেছিলো কিন্তু কোন লাভ হয়নি। তদন্তে কোন দুর্নীতি ধরা পড়েনি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রকল্পে অনিয়ম হলে বরাদ্দ বাতিল করা হবে। এর আগেও ওই ইউনিয়নে প্রকল্পে অনিয়মের কারণে বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। এবারও অনিয়ম হলে তা খতিয়ে দেখে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ এন ও) বেলায়েত হোসেন জানান, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

প্রকল্পের টাকা লুটপাটের অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

প্রকল্পের টাকা লুটপাটের অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও অর্থ লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গত মাসের (২১ জানুয়ারি) জেলার সদর উপজেলার ১০ নং জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম মুস্তাক এর বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন একই পরিষদের ইউপি সদস্য মো: ফারুক হোসেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কাবিখা, এলজিইডিসহ অন্যান্য প্রকল্পের প্রায় ৬০-৬৫ লক্ষ টাকা জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদ বরাদ্দ পেয়েছে। প্রকল্পের টাকা খরচের জন্য চেয়ারম্যান ও ইউপি সচীব যেনো তেনো একটি কমিটি করেন। ইউপি সসদ্যরা প্রকল্পের টাকা উত্তোলনের জন্য পাঁচটি রাস্তা উন্নয়নের বিল ভাউচারে সই করলেও একটি রাস্তাও কাজ হয়নি। তবে ইতোপূর্বে যতগুলো রাস্তার কাজ হয়েছে তা হয়েছে চল্লিশ দিনের কর্মসূচীর টাকা দিয়ে।

লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, প্রকল্পের টাকার হিসাব চাইতে গেলে চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের বরখাস্তসহ নানা প্রকার হুমকি দেয়। পরিষেদের পুকুরে মাটি ভরাটের জন্য দুই ধাপে চার লক্ষ টাকা বরাদ্দ নেওয়া হলেও এখনো পুকুর ভরাট হয়নি। এক স্কুলে টিনসেটের একটি ঘর নির্মাণের জন্য দুই লক্ষ, আরেক স্কুলে বেঞ্চ বানানোর জন্য দুই লক্ষ টাকা বরাদ্দ নিলেও বাস্তবে ৫০হাজার টাকাও খরচ হয়নি।

ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দুই লক্ষ টাকা বরাদ্দে বেশ কয়েকটি কালভার্ট নির্মাণ করা হলেও তাতে খচর হয়েছে অর্ধেক।এছাড়া বিভিন্ন ভাতা, চালের কার্ড, টিসিবির ১৭৩০টির কার্ডের মধ্যে চেয়ারম্যান একাই ৮৭০টি নিজের কাছে রাখেন। এমনকি গরিবের চালেও দরিদ্রদের কাছে থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়।

এসবের প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি ইউপি সদস্য ফারুক হোসেনের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেয় বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন।

লিখিত অভিযোগের সূত্র ধরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই ইউনিয়নের বিশ্বাসপুর গ্রামে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে দুই লক্ষ টাকা। কিন্তু গ্রামবাসীর অভিযোগ এখানে দুই লক্ষ টাকা নয়, খরচ হয়েছে ৪০-৫০ হাজার টাকা। কাজও হয়েছে নিম্নমানের। নির্মাণের সাত দিনেই চার পাশ ভেঙ্গে গেছে।

এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য মো: নাসিরুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজী হননি।
অন্যদিকে মহব্বতপুর গ্রামের কালভার্টের চিত্র একই। তবে প্রকল্প সভাপতি শ্রী কবিন্দ্র জানান, ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, কালভার্টের বরাদ্দ দুই লক্ষ টাকা ধরা হলেও বাস্তবে তা খরচ হয়েছে এক লক্ষ টাকা। আর বাকি টাকা ইঞ্জিনিয়ার ও অন্যন্যদের যাতায়াত খরচ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন জানান, চেয়ারম্যান এস.এম মুস্তাক তিনি তাঁর ইচ্ছামতো কাজ করেন। কোন কাজ সঠিক ভাবে করা হয়নি। সবখানেই চেয়ারম্যান অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে। আমরা প্রতিবাদ করলে মারমুখি আচরণ এবং বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয়।

যেখানে সাত লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেখানে কাজ হয়েছে দেড় লক্ষ টাকার। আমি চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়মের কারণে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম মুস্তাক জানান, আমার সম্পর্কে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা-বানোয়াট। তিনি (ফারুক হোসেন) এর আগেও আমার নামে অভিযোগ করেছিলো কিন্তু কোন লাভ হয়নি। তদন্তে কোন দুর্নীতি ধরা পড়েনি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রকল্পে অনিয়ম হলে বরাদ্দ বাতিল করা হবে। এর আগেও ওই ইউনিয়নে প্রকল্পে অনিয়মের কারণে বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। এবারও অনিয়ম হলে তা খতিয়ে দেখে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ এন ও) বেলায়েত হোসেন জানান, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত