তিন দিন বন্ধ থাকার পর আবারও টেকনাফের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দ শোনা গেছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যংয়ের পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার এলাকায় গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। বিকেল পাঁচটার দিকে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়া পাড়ার পূর্ব পাশে মিয়ানমার থেকে তিনটি মর্টার শেলের বিকট শব্দ ভেসে আসে। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এর আগে গত সোমবার বাংলাদেশ সীমান্তের নিকটবর্তী মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকায় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘হোয়াইক্যংয়ের খারাংখালী সীমান্তে জুমার নামাজের আগপর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। এ সময় সীমান্তের কাছাকাছি চিংড়ির খামারে থাকা বাংলাদেশি লোকজন ভয়ে পালিয়ে এসেছেন।’
হোয়াইক্যংয়ের সীমান্তবর্তী এলাকার একটি চিংড়ি খামারের শ্রমিক শাব্বির আহমদ বলেন, ‘গোলাগুলির শব্দ শুনে আমরা কয়েকজন শ্রমিক দৌড়ে বিজিবির একটি চৌকির পাশে অবস্থান নিই। এর পর থেকে চিংড়ি খামারে যেতে ভয় লাগছে।’ তিনি আরও বলেন, সীমান্তের ওপারে সন্ত্রাসী নবী হোসেন গ্রুপের কিছু লোক আত্মগোপনে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যেও এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটতে পারে।
হোয়াইক্যংয়ের ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, ‘খারাংখালী সীমান্তে নাফ নদীর ওপারে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি আমাকে জানান। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি।’
এদিকে বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁদের নিকটবর্তী নাফ নদীর পূর্ব পাশে অবস্থিত মিয়ানমারের মংড়ু শহরের নলবন্ন্যা গ্রামে পরপর তিনটি মর্টার শেলের শব্দ শোনা যায়। সীমান্তবর্তী সাবরাং ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুস সালাম বলেন, বিকট শব্দে শাহপরীর দ্বীপও কেঁপে উঠলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তিনি আরও বলেন, ওপারে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার চেষ্টায় রয়েছে।
শাহপরীর দ্বীপ বাজারপাড়ার বাসিন্দা আবু সৈয়দ ও মোহাম্মদ করিম বলেন, গত সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে গোলাগুলির শব্দ শুনতে না পেয়ে তাঁদের এলাকার মানুষ ভয়ভীতি কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন শুরু করেছিলেন। বিকেলে মর্টার শেলের বিকট শব্দের কারণে আবারও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি, কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে বসবাসরত বাংলাদেশের নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।