চিনি লিভারে চর্বি জমাতে সাহায্য করে

চিনি লিভারে চর্বি জমাতে সাহায্য করে
চিনি লিভারে চর্বি জমাতে সাহায্য করে

চায়ের কাপ থেকে শুরু করে নানা রকমের সুস্বাদু খাবার, সব কিছুতেই রয়েছে চিনির মুক্ত লাগাম। কারণ চিনি শুধু স্বাদই বাড়ায় না, মুখ মিষ্টি করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। কিন্তু এই খাবারটি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। আর এই তথ্য যে একেবারেই সঠিক, তা একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, আমেরিকার পাশাপাশি প্রায় সমগ্র বিশ্বে দৈনিক চিনি খাওয়ার প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গড়ে, বিশ্বের বেশিরভাগ জনসংখ্যা প্রতিদিন কম বা বেশি ২২ চা চামচ চিনি খায়, যা বিপদ সীমার অনেক উপরে। প্রসঙ্গত, এত বেশি পরিমাণে চিনি খাওয়ার ফলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই ক্ষতিগুলো কি…

১. শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে চিনি শরীরে প্রবেশ করে ফ্রুক্টোজে রূপান্তরিত হয়, যার ফলে লিভারে চর্বি জমতে থাকে। সেই সঙ্গে রক্তে চর্বির পরিমাণও বাড়ে। ফলে সময়ের সাথে সাথে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে লিভারের কার্যকারিতাও কমতে শুরু করে। তাই বেশি চিনি পান করবেন না। এছাড়াও রান্নায় চিনির পরিমাণ কমাতে হবে। না হলে কিন্তু খুবই বিপদজনক!

২. ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়

প্লাস ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে, চিনি যত বেশি গ্রহণ করা হবে, ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি তত বেশি। কারণ চিনি শরীরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর এভাবে চলতে থাকলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা যে মারাত্মকভাবে বেড়ে যায় তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর একবার ডায়াবেটিস শরীরে দানা বাঁধলে, প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ একে একে অকেজো হয়ে যেতে থাকে। তাই আপনি সিদ্ধান্ত নিন আপনি চিনি খেয়ে জীবনকে দুর্বিষহ করতে চান নাকি সুস্থ জীবনযাপন করতে চান।

৩. হার্ট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়

মনে করুন কেউ হাতুড়ি দিয়ে হৃদয়ে আঘাত করছে। এমন অবস্থায় হৃদয়ের কী অবস্থা হবে! হঠাৎ এমন প্রশ্ন করছ কেন? আসলে এভাবেই চিনি শরীরে প্রবেশ করে হার্টের ক্ষতি করে। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে হার্টের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। যার কারণে কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। প্রসঙ্গত, আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার কারণে একবার কারও ডায়াবেটিস ধরা পড়লে হার্টের কর্মক্ষমতা কমে যায় এবং স্ট্রোক ও হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি প্রায় ৬৫ ​​শতাংশ বেড়ে যায়। তাই দিনে ৬ চামচের বেশি চিনি খেতে ভুলবেন না.

৪. রক্তচাপ বাড়াতে অবাক লাগতে পারে

তবে এটা সত্য যে অতিরিক্ত চিনি খেলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। আসলে শরীরের অন্দরে চিনির মাত্রা বেড়ে গেলে ইনসুলিনের উৎপাদনও বেড়ে যায়, যার কারণে ধমনীতে এক ধরনের প্রাচীর তৈরি হতে শুরু করে। এ কারণে রক্তচাপ বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে স্ট্রোকের মতো ভয়ানক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।

৫. রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়

আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনি খাওয়ার মাত্রা বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের ওজন বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও বিপদসীমা ছাড়িয়ে যায়। শুধু তাই নয়, ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমতে শুরু করে। ফলে হার্টের ওপর প্রচণ্ড চাপ পড়ে। এখন বুঝতেই পারছেন চিনি আমাদের শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর!

৬. যখন শক্তি এটি কমতে শুরু করে
এটা সত্য যে চিনি বা এ জাতীয় কোনো খাবার খেলে তাৎক্ষণিক ক্লান্তি দূর হয়। কিন্তু এটাও সত্য যে কিছুক্ষণ পরে যখন চিনির লোভ কমতে শুরু করে, তখন শক্তির ঘাটতি এতটাই তীব্র হয় যে শরীর কিছুতেই নড়াচড়া করতে চায় না। শুধু তাই নয়, চিনি খাওয়ার মাত্রা বাড়ার ফলে মস্তিষ্কে সেরোটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করে। ফলে কাজ করার ইচ্ছা একেবারেই চলে যায়।

৭. প্রায় ৯০০০ লোক বিষণ্নতা বিকাশের ঝুঁকিতে রয়েছে।যারা খুব বেশি চিনি খাওয়া শুরু করে তাদের বিষণ্নতা হওয়ার সম্ভাবনা সময়ের সাথে প্রায় 40 শতাংশ বেড়ে যায়। কিন্তু চিনি খাওয়ার সঙ্গে বিষন্নতার সম্পর্ক কোথায়? বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে মস্তিষ্কে ফিল-গুড হরমোন ডোপামিনের নিঃসরণ কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিষণ্নতা ঘিরে ধরে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

চিনি লিভারে চর্বি জমাতে সাহায্য করে

চিনি লিভারে চর্বি জমাতে সাহায্য করে
চিনি লিভারে চর্বি জমাতে সাহায্য করে

চায়ের কাপ থেকে শুরু করে নানা রকমের সুস্বাদু খাবার, সব কিছুতেই রয়েছে চিনির মুক্ত লাগাম। কারণ চিনি শুধু স্বাদই বাড়ায় না, মুখ মিষ্টি করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। কিন্তু এই খাবারটি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। আর এই তথ্য যে একেবারেই সঠিক, তা একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, আমেরিকার পাশাপাশি প্রায় সমগ্র বিশ্বে দৈনিক চিনি খাওয়ার প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গড়ে, বিশ্বের বেশিরভাগ জনসংখ্যা প্রতিদিন কম বা বেশি ২২ চা চামচ চিনি খায়, যা বিপদ সীমার অনেক উপরে। প্রসঙ্গত, এত বেশি পরিমাণে চিনি খাওয়ার ফলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই ক্ষতিগুলো কি…

১. শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে চিনি শরীরে প্রবেশ করে ফ্রুক্টোজে রূপান্তরিত হয়, যার ফলে লিভারে চর্বি জমতে থাকে। সেই সঙ্গে রক্তে চর্বির পরিমাণও বাড়ে। ফলে সময়ের সাথে সাথে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে লিভারের কার্যকারিতাও কমতে শুরু করে। তাই বেশি চিনি পান করবেন না। এছাড়াও রান্নায় চিনির পরিমাণ কমাতে হবে। না হলে কিন্তু খুবই বিপদজনক!

২. ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়

প্লাস ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে, চিনি যত বেশি গ্রহণ করা হবে, ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি তত বেশি। কারণ চিনি শরীরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর এভাবে চলতে থাকলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা যে মারাত্মকভাবে বেড়ে যায় তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর একবার ডায়াবেটিস শরীরে দানা বাঁধলে, প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ একে একে অকেজো হয়ে যেতে থাকে। তাই আপনি সিদ্ধান্ত নিন আপনি চিনি খেয়ে জীবনকে দুর্বিষহ করতে চান নাকি সুস্থ জীবনযাপন করতে চান।

৩. হার্ট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়

মনে করুন কেউ হাতুড়ি দিয়ে হৃদয়ে আঘাত করছে। এমন অবস্থায় হৃদয়ের কী অবস্থা হবে! হঠাৎ এমন প্রশ্ন করছ কেন? আসলে এভাবেই চিনি শরীরে প্রবেশ করে হার্টের ক্ষতি করে। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে হার্টের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। যার কারণে কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। প্রসঙ্গত, আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার কারণে একবার কারও ডায়াবেটিস ধরা পড়লে হার্টের কর্মক্ষমতা কমে যায় এবং স্ট্রোক ও হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি প্রায় ৬৫ ​​শতাংশ বেড়ে যায়। তাই দিনে ৬ চামচের বেশি চিনি খেতে ভুলবেন না.

৪. রক্তচাপ বাড়াতে অবাক লাগতে পারে

তবে এটা সত্য যে অতিরিক্ত চিনি খেলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। আসলে শরীরের অন্দরে চিনির মাত্রা বেড়ে গেলে ইনসুলিনের উৎপাদনও বেড়ে যায়, যার কারণে ধমনীতে এক ধরনের প্রাচীর তৈরি হতে শুরু করে। এ কারণে রক্তচাপ বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে স্ট্রোকের মতো ভয়ানক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।

৫. রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়

আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনি খাওয়ার মাত্রা বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের ওজন বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও বিপদসীমা ছাড়িয়ে যায়। শুধু তাই নয়, ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমতে শুরু করে। ফলে হার্টের ওপর প্রচণ্ড চাপ পড়ে। এখন বুঝতেই পারছেন চিনি আমাদের শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর!

৬. যখন শক্তি এটি কমতে শুরু করে
এটা সত্য যে চিনি বা এ জাতীয় কোনো খাবার খেলে তাৎক্ষণিক ক্লান্তি দূর হয়। কিন্তু এটাও সত্য যে কিছুক্ষণ পরে যখন চিনির লোভ কমতে শুরু করে, তখন শক্তির ঘাটতি এতটাই তীব্র হয় যে শরীর কিছুতেই নড়াচড়া করতে চায় না। শুধু তাই নয়, চিনি খাওয়ার মাত্রা বাড়ার ফলে মস্তিষ্কে সেরোটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করে। ফলে কাজ করার ইচ্ছা একেবারেই চলে যায়।

৭. প্রায় ৯০০০ লোক বিষণ্নতা বিকাশের ঝুঁকিতে রয়েছে।যারা খুব বেশি চিনি খাওয়া শুরু করে তাদের বিষণ্নতা হওয়ার সম্ভাবনা সময়ের সাথে প্রায় 40 শতাংশ বেড়ে যায়। কিন্তু চিনি খাওয়ার সঙ্গে বিষন্নতার সম্পর্ক কোথায়? বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে মস্তিষ্কে ফিল-গুড হরমোন ডোপামিনের নিঃসরণ কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিষণ্নতা ঘিরে ধরে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত