সুনামগঞ্জে আকস্মিক পাহাড়ি ঢল, বন্যার আশঙ্কা

ডেস্ক এডিটর এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
সুনামগঞ্জে আকস্মিক পাহাড়ি ঢল, বন্যার আশঙ্কা

সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। এতে ছাতক-দোয়ারাবাজার উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সোমবার (৩ জুন) বিকেল ৩টায় সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ ছাতক উপজেলার পয়েন্ট দিয়ে নদীর পানি বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় ছাতক উপজেলায় ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

এ ছাড়া সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২১ সেন্টিমিটার। বর্তমানে সুরমার এ পয়েন্ট দিয়ে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জি, শিলং, আসামের গোয়ালপাড়া, দিব্রুগড়, গোয়াহাটি, ও ত্রিপুরাসহ গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৫০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেই বৃষ্টির পানি উজানের পাহাড় গড়িয়ে সীমান্তঘেঁষা সুনামগঞ্জের নদী যাদুকাটা, পাটলাই, রক্তি, বৌলাই ও চেলা খাসিয়ামারাসহ সকল নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে জেলার বিভিন্ন নদ-নদী উপচে হাওর, খাল-বিলে পানি বেড়ে গিয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর উপজেলার নিচু এলাকা ও হাওর পাড়ের লোকজন বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন। কারণ গত ২০২২ সালের এ সময়টায় সুনামগঞ্জে স্মরণকালের এক ভয়াবহ বন্যা নেমে এসেছিলো। সেই সর্বগ্রাসী বন্যার ক্ষতচিহ্ন আর দুর্দশার কথা এখনো ভুলতে পারেননি সুনামগঞ্জবাসী।

ছাতক উপজেলার নাদামপুর গ্রামের হারুন মিয়া বলেন, এতো দিন হাওরে পানি ছিলো না। দুইদিন থেকে হাওরের পানি সড়কে উঠে এসেছিল, গতকাল পানি কিছুটা কমছিলো। কিন্তু আজ রাতে অনেক বৃষ্টি হয়েছে। এখন বাড়ির চারদিকে পানি আর পানি। আমার ঘরের একদম নাকে নাকে পানি। আর একটু পানি বাড়লেই আমার ঘরের ভিতরে ঢুকে যাবে।

একই উপজেলার আমতলা গ্রামের রাসেল হোসেন বলেন, রাতে সিএনজি চালিয়ে ভালো অবস্থায় বাড়িতে রেখেছিলাম। সারারাত নদীর পানি বেড়ে আমাদের বাড়িতে উঠে গেছে। আমার সিএনজির সাইলেন্সার দিয়ে পানি ঢুকে গাড়িটা আজ বন্ধ। আমার ঘরটা একটু নিচু জায়গায় হওয়ায় আজ পানি বেড়ে গেলে বাড়িতে বাচ্চাদের নিয়েও থাকা যাবে না।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মামুন হাওলাদার রাইজিংবিডিকে বলেন, ভারতের মেঘালয়ে কয়েক দিন ধরে বৃষ্টিপাতের ফলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাত না হলে বড় বন্যার কোনো শঙ্কা নেই। এখনও জেলার অনেক হাওরে পানির ধারণ ক্ষমতা রয়েছে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

সুনামগঞ্জে আকস্মিক পাহাড়ি ঢল, বন্যার আশঙ্কা

সুনামগঞ্জে আকস্মিক পাহাড়ি ঢল, বন্যার আশঙ্কা

সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। এতে ছাতক-দোয়ারাবাজার উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সোমবার (৩ জুন) বিকেল ৩টায় সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ ছাতক উপজেলার পয়েন্ট দিয়ে নদীর পানি বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় ছাতক উপজেলায় ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

এ ছাড়া সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২১ সেন্টিমিটার। বর্তমানে সুরমার এ পয়েন্ট দিয়ে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জি, শিলং, আসামের গোয়ালপাড়া, দিব্রুগড়, গোয়াহাটি, ও ত্রিপুরাসহ গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৫০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেই বৃষ্টির পানি উজানের পাহাড় গড়িয়ে সীমান্তঘেঁষা সুনামগঞ্জের নদী যাদুকাটা, পাটলাই, রক্তি, বৌলাই ও চেলা খাসিয়ামারাসহ সকল নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে জেলার বিভিন্ন নদ-নদী উপচে হাওর, খাল-বিলে পানি বেড়ে গিয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর উপজেলার নিচু এলাকা ও হাওর পাড়ের লোকজন বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন। কারণ গত ২০২২ সালের এ সময়টায় সুনামগঞ্জে স্মরণকালের এক ভয়াবহ বন্যা নেমে এসেছিলো। সেই সর্বগ্রাসী বন্যার ক্ষতচিহ্ন আর দুর্দশার কথা এখনো ভুলতে পারেননি সুনামগঞ্জবাসী।

ছাতক উপজেলার নাদামপুর গ্রামের হারুন মিয়া বলেন, এতো দিন হাওরে পানি ছিলো না। দুইদিন থেকে হাওরের পানি সড়কে উঠে এসেছিল, গতকাল পানি কিছুটা কমছিলো। কিন্তু আজ রাতে অনেক বৃষ্টি হয়েছে। এখন বাড়ির চারদিকে পানি আর পানি। আমার ঘরের একদম নাকে নাকে পানি। আর একটু পানি বাড়লেই আমার ঘরের ভিতরে ঢুকে যাবে।

একই উপজেলার আমতলা গ্রামের রাসেল হোসেন বলেন, রাতে সিএনজি চালিয়ে ভালো অবস্থায় বাড়িতে রেখেছিলাম। সারারাত নদীর পানি বেড়ে আমাদের বাড়িতে উঠে গেছে। আমার সিএনজির সাইলেন্সার দিয়ে পানি ঢুকে গাড়িটা আজ বন্ধ। আমার ঘরটা একটু নিচু জায়গায় হওয়ায় আজ পানি বেড়ে গেলে বাড়িতে বাচ্চাদের নিয়েও থাকা যাবে না।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মামুন হাওলাদার রাইজিংবিডিকে বলেন, ভারতের মেঘালয়ে কয়েক দিন ধরে বৃষ্টিপাতের ফলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাত না হলে বড় বন্যার কোনো শঙ্কা নেই। এখনও জেলার অনেক হাওরে পানির ধারণ ক্ষমতা রয়েছে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত