দীর্ঘ ৯ দিন পর দেশের একমাত্র কোরাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পৌঁছেছে খাদ্য সামগ্রীবাহী জাহাজ। এর ফলে খাবার ও সংকটে পড়া দ্বীপের বাসিন্দাদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। এছাড়া কক্সবাজারে আটকা পড়া অনেকে জাহাজে করে ফিরেছেন দ্বীপে। আবার শনিবার (১৫ জুন) সকালে জাহাজ ফেরার পথে দ্বীপ ত্যাগ করেন কেউ কেউ।
শুক্রবার (১৪ জুন) রাত ১টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিকল্প রুটে বঙ্গোপসাগর হয়ে চাল, ডাল, তেল, পানি ও পেঁয়াজসহ নানা ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও খাদ্যবোঝাই একটি জাহাজ সেন্টমার্টিনে পৌঁছে। তবে এখনও তাদের (দ্বীপবাসী) মাঝে ভয় কাজ করছে। কেননা, এখনও নাফ নদ টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এর আগে গত ৫ জুন থেকে হঠাৎ করেই প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে গুলি চালানো হয় বাংলাদেশে। পরপর কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটার পর ভীতির সঞ্চার হয় স্থানীয় বাসিন্দা ও চলাচলকারী নৌযান চালকদের মাঝে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুট বন্ধ রয়েছে। আচমকা এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েন দ্বীপবাসী।
তবে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) নাকি সেখানকার বিদ্রোহী কোনও গোষ্ঠী বাংলাদেশে গুলি চালিয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কোনও তথ্য জানাতে পারেনি বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। যদিও গত বুধবার নাফ নদে চলাচলকারী বাংলাদেশি ট্রলারে মিয়ানমার থেকে গুলির ঘটনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ কিয়াও সোয়ে মোয়ের কাছে প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি পাঠায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ ব্যাপারে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ৯ দিন পর জাহাজে করে প্রবাল দ্বীপে খাদ্যপণ্য এসেছে। যার ফলে মানুষের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। সরকারের পক্ষ থেকে ভিজিডিসহ জেলেদের জন্য সহায়তা এসেছে। সেগুলো আমরা বিতরণ করছি। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পাঠানো পাঁচটি কোরবানির পশু মানুষের মাঝে ভাগ করে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের চলাচল স্বাভাবিক হয়ে গেলে দ্বীপের মানুষের মাঝে পুরোপুরি স্বস্তি ফিরে আসবে। আগে থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের পূর্বে মিয়ানমারের জলসীমায় তাদের দেশের দুটি জাহাজ দেখা গেলেও কয়েক দিন ধরে ৫-৬টি জাহাজ দেখা যাচ্ছে। তবে এ নিয়ে আমাদের অস্বস্তির কোনও কারণ নেই। কারণ, দ্বীপে আমাদের জলসীমায় কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর জাহাজ টহলে রয়েছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, সেন্টমার্টিনে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাহাজে করে নিত্যপণ্য পাঠানো হয়েছে। যার ফলে দ্বীপে খাদ্যসংকট কেটে গেছে। এ ছাড়া কীভাবে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুট আগের মতো সচল করা যায় সে বিষয়ে কাজ করছি আমরা।