চীনকে পেছনে ফেলে ভিয়েতনাম শীর্ষে, উন্নতি নেই বাংলাদেশের

ডেস্ক এডিটর এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
চীনকে পেছনে ফেলে ভিয়েতনাম শীর্ষে, উন্নতি নেই বাংলাদেশের
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষস্থানীয় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে চীন। পরের অবস্থানে থাকা ভিয়েতনাম কয়েক মাস ধরে চীনের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছিল। অর্থাৎ চীনের কাছাকাছি রপ্তানি করছিল ভিয়েতনাম। অবশেষে গত এপ্রিল শেষে এই বাজারে চীনকে টপকে শীর্ষস্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারক হয়ে গেছে ভিয়েতনাম। অন্যদিকে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ধারাবাহিকভাবেই কমছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে চীন ৪৩২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। একই সময়ে ভিয়েতনাম রপ্তানি করেছে ৪৩৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। তার মানে, চীনের থেকে ৬ কোটি ডলারের বেশি রপ্তানি করেছে ভিয়েতনাম। বছরের প্রথম চার মাসে ভিয়েতনাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি রপ্তানি করেছে। এর বিপরীতে চীনের রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা চলতি বছরের প্রথম চার মাসে (জানুয়ারি-এপ্রিল) বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২ হাজার ৩৬৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ শতাংশ কম।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা চীন ও ভিয়েতনাম থেকেই প্রায় ৪০ শতাংশ তৈরি পোশাক আমদানি করছে। আর বাংলাদেশ থেকে ৯ শতাংশ। এই বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার হিস্যা ৫ শতাংশের ঘরে।

অটেক্সার তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা মোট ৯ হাজার ৯৮৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে। গত বছর সেটি ২২ শতাংশ কমে যায়। অর্থাৎ বিভিন্ন দেশ থেকে ৭ হাজার ৭৮৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর এই বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ পাঁচ দেশের রপ্তানি প্রায় একই হারে কমেছে। চলতি বছর থেকে ব্যবসা কিছুটা বাড়তে থাকে। এতে ভিয়েতনামের ব্যবসা বাড়লেও শীর্ষ পাঁচে থাকে বাকি চার দেশ অর্থাৎ চীন, বাংলাদেশ, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি কমেছে।

বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে বাংলাদেশ ২৩১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম। গত বছর শেষে রপ্তানি কমার হার ছিল ২৫ শতাংশ। তার মানে বড় এই বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমছে। তবে রপ্তানি কমার হার কিছুটা কমেছে।

বাংলাদেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চতুর্থ ও পঞ্চম শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ যথাক্রমে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানিও কমেছে। এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ভারত ১৬৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া গত জানুয়ারি-মার্চ সময়ে রপ্তানি করেছে ১৩৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। তাদের রপ্তানি কমেছে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ।

নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজুলল হক বলেন, ভিয়েতনামের তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের বিনিয়োগকারীদের বড় অংশই চীনের নাগরিক। ভূরাজনৈতিক কারণে চীনবিরোধী তৎপরতা ও বিধিনিষেধের কারণে মার্কিন অনেক ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানই চীন থেকে সরাসরি পণ্য আমদানি কমিয়েছে। চীনের হারানো ক্রয়াদেশ মূলত ভিয়েতনামে যাচ্ছে, যাদের মালিকানায় সেই চীনারাই আছেন। এটি চীনাদের আরেকটি ব্যবসায়িক কৌশল। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই বছর ধরেই ব্যবসা খারাপ। যদিও গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ব্যবসা কিছুটা বেড়েছে। তবে শিগগিরই ব্যবসা ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা কম।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

চীনকে পেছনে ফেলে ভিয়েতনাম শীর্ষে, উন্নতি নেই বাংলাদেশের

চীনকে পেছনে ফেলে ভিয়েতনাম শীর্ষে, উন্নতি নেই বাংলাদেশের
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষস্থানীয় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে চীন। পরের অবস্থানে থাকা ভিয়েতনাম কয়েক মাস ধরে চীনের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছিল। অর্থাৎ চীনের কাছাকাছি রপ্তানি করছিল ভিয়েতনাম। অবশেষে গত এপ্রিল শেষে এই বাজারে চীনকে টপকে শীর্ষস্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারক হয়ে গেছে ভিয়েতনাম। অন্যদিকে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ধারাবাহিকভাবেই কমছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে চীন ৪৩২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। একই সময়ে ভিয়েতনাম রপ্তানি করেছে ৪৩৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। তার মানে, চীনের থেকে ৬ কোটি ডলারের বেশি রপ্তানি করেছে ভিয়েতনাম। বছরের প্রথম চার মাসে ভিয়েতনাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি রপ্তানি করেছে। এর বিপরীতে চীনের রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা চলতি বছরের প্রথম চার মাসে (জানুয়ারি-এপ্রিল) বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২ হাজার ৩৬৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ শতাংশ কম।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা চীন ও ভিয়েতনাম থেকেই প্রায় ৪০ শতাংশ তৈরি পোশাক আমদানি করছে। আর বাংলাদেশ থেকে ৯ শতাংশ। এই বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার হিস্যা ৫ শতাংশের ঘরে।

অটেক্সার তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা মোট ৯ হাজার ৯৮৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে। গত বছর সেটি ২২ শতাংশ কমে যায়। অর্থাৎ বিভিন্ন দেশ থেকে ৭ হাজার ৭৮৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর এই বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ পাঁচ দেশের রপ্তানি প্রায় একই হারে কমেছে। চলতি বছর থেকে ব্যবসা কিছুটা বাড়তে থাকে। এতে ভিয়েতনামের ব্যবসা বাড়লেও শীর্ষ পাঁচে থাকে বাকি চার দেশ অর্থাৎ চীন, বাংলাদেশ, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি কমেছে।

বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে বাংলাদেশ ২৩১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম। গত বছর শেষে রপ্তানি কমার হার ছিল ২৫ শতাংশ। তার মানে বড় এই বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমছে। তবে রপ্তানি কমার হার কিছুটা কমেছে।

বাংলাদেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চতুর্থ ও পঞ্চম শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ যথাক্রমে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানিও কমেছে। এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ভারত ১৬৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া গত জানুয়ারি-মার্চ সময়ে রপ্তানি করেছে ১৩৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। তাদের রপ্তানি কমেছে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ।

নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজুলল হক বলেন, ভিয়েতনামের তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের বিনিয়োগকারীদের বড় অংশই চীনের নাগরিক। ভূরাজনৈতিক কারণে চীনবিরোধী তৎপরতা ও বিধিনিষেধের কারণে মার্কিন অনেক ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানই চীন থেকে সরাসরি পণ্য আমদানি কমিয়েছে। চীনের হারানো ক্রয়াদেশ মূলত ভিয়েতনামে যাচ্ছে, যাদের মালিকানায় সেই চীনারাই আছেন। এটি চীনাদের আরেকটি ব্যবসায়িক কৌশল। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই বছর ধরেই ব্যবসা খারাপ। যদিও গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ব্যবসা কিছুটা বেড়েছে। তবে শিগগিরই ব্যবসা ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা কম।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত