বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও রাজশাহীতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৯ জুলাই) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তারা এই কর্মসূচি পালন করেন। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত।
ফেনী: ফেনীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের রামপুর লাতু মিয়া সড়কে অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ করেন। এ সময় সড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দুই কিলোমিটার এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়রা জানান, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের রামপুর লাতু মিয়া সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। পুলিশ আসলে শিক্ষার্থীরা সরে গেলে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ফেনী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মুশফিকুর রহমান বলেন, তারা (ছাত্ররা) কিছুক্ষণ মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে অবরোধকারীরা সড়ক থেকে সরে যান। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর: আজ বিকেল ৩টার দিকে শহরের ঝুমুর ও মাদাম ব্রিজ এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ঢাকা-রায়পুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোস্তফা স্বপন জানান, কোটা আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করেছিলো। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় ইকরাম নামে এক ছাত্রের ব্যাগে হাতুড়ি পাওয়া যাওয়ায় তাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজশাহী: কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারসহ নয় দফা দাবিতে ৯ দফা দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।
আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি নিয়ে বিনোদপুর বাজারে গিয়ে পথসভা করেন তারা। শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচির কারণে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প হিসেবে রাজশাহী বাইপাস সড়ক দিয়ে চলাচল করায় সেখানে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সতর্ক অবস্থানে ছিলো বিজিবি-পুলিশ। পুরো কর্মসূচি তাদের পর্যবেক্ষণ করতে দেখা গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবির সমন্বয়ক মেহেদী হাসান সজীব বলেন, ‘আমরা শান্ত ছিলাম। আমাদের ভাইদের বুকে গুলি চালিয়েছে। আমরা সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছি। সারা দেশের ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রজাতন্ত্রের চাকর, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করবে। কিন্তু শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের টাকায় কেনা গুলি আমাদের ছাত্রদের বুকে চালিয়েছে। এসবের প্রতিবাদে আমরা আজও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি।’
কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসউদ, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জামিরুল ইসলাম ও ড. মো. সাইফুল ইসলাম একাত্মতা পোষণ করে অংশ নেন। কর্মসূচি চলাকালে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। তবে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।