শেখ হাসিনার ফোনালাপ ও সিডিআর জব্দ: ট্রাইব্যুনালে বাজানো হলো চারটি কথোপকথন

ডেস্ক এডিটর এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
শেখ হাসিনার ফোনালাপ ও সিডিআর জব্দ: ট্রাইব্যুনালে বাজানো হলো চারটি কথোপকথন

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোনালাপের ৬৯টি অডিও ক্লিপ এবং ৩টি মোবাইল নম্বরের সিডিআর জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ফোনালাপ বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ৫৩তম সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রদানের সময় বাজিয়ে শোনানো হয়েছে। এ শুনানি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

শেখ হাসিনার এই চারটি ফোনালাপের মধ্যে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও তার আত্মীয় শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে একটি ফোনালাপ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে দুটি ফোনালাপ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে একটি ফোনালাপ।

৫৩তম সাক্ষী হিসেবে আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা। তিনি জানান, তদন্তকালে বিটিআরসি, এনটিএমসি, ডিএমপিসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর থেকে বিভিন্ন অডিও ক্লিপ, ভিডিও ফুটেজ, সিডিআর, আইপিডিআর, সিসি ক্যামেরা ফুটেজসহ ডিজিটাল ফরেনসিক বিষয়বস্তু জব্দ করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোনালাপের ৬৯টি অডিও ক্লিপ এবং ৩টি মোবাইল নম্বরের সিডিআর জব্দ করা হয়।

তদন্তে দেখা গেছে, শেখ হাসিনার ও ফজলে নূর তাপসের ফোনালাপ একটি ডিভিডিতে সংরক্ষণ করে ফরেনসিক শাখা, সিআইডি ঢাকায় পাঠানো হয়। পরিদর্শক রুকনুজ্জামান জানুয়ারির ১৬ তারিখে পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করেন যে অডিওতে ফোনালাপকারীর একজন শেখ হাসিনা এবং অপরজন ফজলে নূর তাপস। একইভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে ফোনালাপ শনাক্তপূর্বক একটি সিডি ডিস্কে সংরক্ষণ করে ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। এসআই শাহেদ জুবায়ের লরেন্স পরীক্ষার পর রিপোর্টে উল্লেখ করেন যে ফোনালাপে ছিলেন শেখ হাসিনা ও ভিসি কামাল।

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে তিনটি ফোনালাপও শনাক্তপূর্বক ডিভিডি ডিস্কে সংরক্ষণ করা হয় এবং ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। এসআই শাহেদ জুবায়ের লরেন্স পরীক্ষার পর জানিয়েছিলেন যে অডিওতে উপস্থিত কণ্ঠস্বর শেখ হাসিনা ও হাসানুল হক ইনুর।

তানভীর জোহা আরও জানান, ফোনালাপগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা ফোনালাপে বলেছিলেন আন্দোলনকারীদের অবস্থান নির্ণয় করে হেলিকপ্টার থেকে বোম্বিং করা, ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা এবং আন্দোলনকারীদের রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করে ফাঁসি দেওয়ার কথা। তিনি সেখানে ইংল্যান্ডের উদাহরণ উল্লেখ করে আন্দোলন দমনের নির্দেশ দেন। এই ফোনালাপগুলো তিনটি সিডিতে সংরক্ষিত ও আদালতে দাখিল করা হয়েছে।

পরে আদালতে তানভীর হাসান জোহাকে জেরা করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইনজীবী আমির হোসেন। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন উপপরিচালক মো. জানে আলম খান। পরে তদন্ত পরিচালনা করেন উপপরিচালক মো. আলমগীর। সার্বিক সহযোগিতা করেছিলেন বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা। ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। পরবর্তীতে ৩১ মে সম্পূরক অভিযোগ এবং ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন এবং সাবেক আইজিপি মামুনকে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে মঞ্জুর করা হয়।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

শেখ হাসিনার ফোনালাপ ও সিডিআর জব্দ: ট্রাইব্যুনালে বাজানো হলো চারটি কথোপকথন

শেখ হাসিনার ফোনালাপ ও সিডিআর জব্দ: ট্রাইব্যুনালে বাজানো হলো চারটি কথোপকথন

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোনালাপের ৬৯টি অডিও ক্লিপ এবং ৩টি মোবাইল নম্বরের সিডিআর জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ফোনালাপ বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ৫৩তম সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রদানের সময় বাজিয়ে শোনানো হয়েছে। এ শুনানি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

শেখ হাসিনার এই চারটি ফোনালাপের মধ্যে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও তার আত্মীয় শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে একটি ফোনালাপ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে দুটি ফোনালাপ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে একটি ফোনালাপ।

৫৩তম সাক্ষী হিসেবে আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা। তিনি জানান, তদন্তকালে বিটিআরসি, এনটিএমসি, ডিএমপিসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর থেকে বিভিন্ন অডিও ক্লিপ, ভিডিও ফুটেজ, সিডিআর, আইপিডিআর, সিসি ক্যামেরা ফুটেজসহ ডিজিটাল ফরেনসিক বিষয়বস্তু জব্দ করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোনালাপের ৬৯টি অডিও ক্লিপ এবং ৩টি মোবাইল নম্বরের সিডিআর জব্দ করা হয়।

তদন্তে দেখা গেছে, শেখ হাসিনার ও ফজলে নূর তাপসের ফোনালাপ একটি ডিভিডিতে সংরক্ষণ করে ফরেনসিক শাখা, সিআইডি ঢাকায় পাঠানো হয়। পরিদর্শক রুকনুজ্জামান জানুয়ারির ১৬ তারিখে পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করেন যে অডিওতে ফোনালাপকারীর একজন শেখ হাসিনা এবং অপরজন ফজলে নূর তাপস। একইভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে ফোনালাপ শনাক্তপূর্বক একটি সিডি ডিস্কে সংরক্ষণ করে ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। এসআই শাহেদ জুবায়ের লরেন্স পরীক্ষার পর রিপোর্টে উল্লেখ করেন যে ফোনালাপে ছিলেন শেখ হাসিনা ও ভিসি কামাল।

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে তিনটি ফোনালাপও শনাক্তপূর্বক ডিভিডি ডিস্কে সংরক্ষণ করা হয় এবং ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। এসআই শাহেদ জুবায়ের লরেন্স পরীক্ষার পর জানিয়েছিলেন যে অডিওতে উপস্থিত কণ্ঠস্বর শেখ হাসিনা ও হাসানুল হক ইনুর।

তানভীর জোহা আরও জানান, ফোনালাপগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা ফোনালাপে বলেছিলেন আন্দোলনকারীদের অবস্থান নির্ণয় করে হেলিকপ্টার থেকে বোম্বিং করা, ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা এবং আন্দোলনকারীদের রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করে ফাঁসি দেওয়ার কথা। তিনি সেখানে ইংল্যান্ডের উদাহরণ উল্লেখ করে আন্দোলন দমনের নির্দেশ দেন। এই ফোনালাপগুলো তিনটি সিডিতে সংরক্ষিত ও আদালতে দাখিল করা হয়েছে।

পরে আদালতে তানভীর হাসান জোহাকে জেরা করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইনজীবী আমির হোসেন। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন উপপরিচালক মো. জানে আলম খান। পরে তদন্ত পরিচালনা করেন উপপরিচালক মো. আলমগীর। সার্বিক সহযোগিতা করেছিলেন বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা। ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। পরবর্তীতে ৩১ মে সম্পূরক অভিযোগ এবং ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন এবং সাবেক আইজিপি মামুনকে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে মঞ্জুর করা হয়।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত