খুলনায় নির্যাতনের শিকার এর নারীকে বিয়ে করে ধর্ষণের দায় থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন রাজু শেখ নামে এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার(১৩ মার্চ) দুপুরে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আব্দুস ছালাম খানের উপস্হিতিতে। এ ছাড়া ওই নারীর গর্ভে জন্ম নেয়া সন্তানের স্বীকৃতিও দেন আসামি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই নারী স্বামী পরিত্যক্তা ছিলেন। তার আগের স্বামীর ঘরের দু’টি সন্তানও রয়েছে। বড় সন্তান তার আগের স্বামীর বাড়িতে থাকে। ছোট সন্তানটি তার সঙ্গে থাকে।
মামলার এজাহারে ওই নারী উল্লেখ করেছেন, আগের স্বামী তাকে ছেড়ে দিলে বাবার বাড়িতে চলে আসেন তিনি। জীবিকা নির্বাহের জন্য তিনি গৃহপরিচারিকার কাজ নেন। ২০২০ সালের ১৬ আগস্ট মো. রাজু শেখ নামে এক যুবকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তারা গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
রাজু নির্যাতিত নারীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। ওই নারীর ছোট সন্তানকে নিয়ে লবণচরা থানার প্রত্যাশা আবাসিক এলাকার মো. আব্দুল গফ্ফারের বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস শুরু করেন। রাজু ওই নারী ও সন্তানের ভরণপোষণ এবং বাড়ি ভাড়া নিয়মিত পরিশোধ করতেন। তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন রাজু। একপর্যায়ে ওই নারী সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়েন। বিষয়টি রাজুকে অবহিত করে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন তিনি। কিন্তুু রাজু ওই নারীর কথায় কোনো কর্ণপাত না করে গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করে ফেলার জন্য চাপ দিতে থাকেন।
পরবর্তীতে প্রতিবেশীর মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন রাজু তাকে না জনিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেছেন। এটা জানার পর একাধিকবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন তিনি। ২০২১ সালের ১৯ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজু ফোন করে তাকে গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলার জন্য হুমকি দেন। পরবর্তীতে ওই নারী খুলনার লবণচরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাজুকে আসামি করে মামলা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদ আহমেদ বলেন, আসামি রাজু গ্রেফতারের পর থেকে কারাগারে রয়েছেন। এর আগের কার্যদিবসে রাজু আদালতকে ওই নারীকে বিয়ে করা ও তার সন্তানের ভরণপোষণ দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। আদালত আজ সোমবার বিয়ের জন্য দিন ধার্য করেন। সকালে আদালত চত্বরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে কাজি ডেকে এনে তাদের বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। আদালত রাজুকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।