জমিজমা সব বিক্রি করে চার বছর আগে ছেলেকে সৌদি আরব পাঠিয়ে ছিলেন মা অলেকা বেগম। প্রবাসী ছেলে শরিফুল ইসলাম ছুটিতে বাড়ি আসার কথা মাকে জানালো। ছেলে মায়ের কাছে জানতে চায় তার জন্য কী আনবে; কিছুটা সংকোচ নিয়ে মনে জমে থাকা আশার কথা ছেলেকে জানায়,তুমি যেদিন বাড়িতে আসবে তোমার সঙ্গে আমি ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে বাড়িতে আসতে চাই। ছেলে সেই কথা রেখেছে। মা অলেকা বেগম নির্ধারীত দিনে ছেলেকে আনতে ঢাকায় যায়।
গত সোমবার (১৩ মার্চ) বিকেলে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার মাউলি ইউনিয়নের কাঠাদুরো গ্রামের সৌদি প্রবাসী ছেলে শরিফুল ইসলামের সঙ্গে মা অলেকা বেগম হেলিকপ্টার চড়ে বাড়িতে অসে। এ সময় অলেকা বেগম আরও বলেন, আমরা খুব গরিব। আমার ছেলে স্বপ্ন পূরণ করে আমাকে যে আনন্দ দিয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, অলেকা বেগমের পরিবার খুব কষ্টে দিনাতিপাত করত। ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে জমিজমা সব বিক্রি করে একমাত্র ছেলেকে সৌদি পাঠান মা অলেকা বেগম। ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর পর থেকে কিছুটা সচ্ছলতা আসতে থাকে পরিবারটিতে। সোমবার ভোরে সৌদি প্রবাসী শরিফুল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের আগেই মা অলেকা, বোনজামাই শওকত মোল্যা, ছেলে তাজ বিমানবন্দরে হাজির হন।
এদিকে শরিফুল ইসলাম হেলিকপ্টারে আসবেন এ খবরে এলাকার হাজারো উৎসুক জনতা দুপুর থেকেই তাদের বাড়ির আঙিনায় ভিড় জমাতে থাকেন। সকালে বেসরকারি বিমান সংস্থার একটি হেলিকপ্টারে রওনা হলেও ভুল তথ্য দেওয়ার কারণে পাইলট তাদের বহনকারী হেলিকপ্টার নিয়ে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটের কাঠাদুরো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবতরণের চেষ্টা করেন। পরে সেখান থেকে পাইলট আবার ঢাকায় ফেরত যান।
পরবর্তীতে বিকেলের দিকে পুনরায় রওনা দিয়ে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার মাউলি ইউনিয়নের কাঠাদুরো গ্রামের অবতরণ করলে শরিফুল ইসলাম মায়ের হাত ধরে হেলিকপ্টার থেকে নামেন। সৌদি প্রবাসী শরিফুল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র মায়ের ইচ্ছা পূরণের জন্যই হেলিকপ্টারে এসেছি। অর্থনৈতিকভাবে এতটা স্বাবলম্বী না হলেও মায়ের স্বপ্ন পূরণ করাটা আমার কাছে মুখ্য ছিল।