রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারের মাঠ প্রাঙ্গণে মারমা তরুণ-তরুণীরা জলছিটিয়ে তাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই জল উৎসব পালন করেছে।
শনিবার(১৫এপ্রিল) সকালে মারমা সম্প্রদায়ের তরুন-তরুনীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে বর্ষবরণের এই সাংগ্রাই জল উৎসবে আনন্দে মেতে উঠে। এরপর মারমা শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা শুরু করার সাথে সাথে হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়ে উঠে চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার মাঠ।যেন প্রাণের উৎসবে মিলিত হয়েছেন তাঁরা।
নতুন বছরকে বরণ এবং পুরানো বছরকে বিদায় উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত মারমা সম্প্রদায় প্রতি বছরই সাংগ্রাঁই রিলং পোয়ে: বা সাংগ্রাইঁ জলবর্ষণ উৎসব উদযাপন করে থাকে। মারমা যুবক যুবতীরা একে অপরের প্রতি জল ছিঁটিয়ে পুরানো বছরের দুঃখ, গ্লানি, বেদনাকে ভূলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায় বলে তাদের বিশ্বাস।
এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব উপলক্ষে এক বর্ণাঢ়্য র্যালি বের করা হয়। বাদ্যের তালে তালে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে র্যালিতে শত শত মারমা সম্প্রদায়ের নারী পুরুষ অংশগ্রহণ করে।
উৎসব উদযাপন কমিটির সচিব পাই সুই উ মারমা জানান, এই সাংগ্রাঁই জল উৎসবের মাধ্যমে আমরা আমাদের ঐতিহ্য সংস্কৃতিকে তুলে ধরার চেষ্টা করি। সকল ভেদাভেদ ভূলে আমরা নতুন বছরকে বরন করে নিব।
পরবর্তীতে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। চিৎমরম ইউপি চেয়ারম্যান ওয়েশ্লিং মং চৌধুরী সভাপতিত্বে এবং এ্যাডভোকেট হ্লা থোয়াই মারমার সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংগ্রাই জল উদযাপন কমিটির আহবায়ক ক্যচিং প্রু মারমা।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাপ্তাই ৪১ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর সংস্কৃতি খুবই সমৃদ্ধ। আর সামাজিক উৎসবের মাধ্যমে এ সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রাঙ্গামাটি জেলা যুগ্ম জজ মিল্টন হোসেন, রাঙামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী, কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমন দে , রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য প্রকৌশলী থোয়াইচিং মং চৌধুরী, চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) শফিউল আজম বাবু।
আলোচনা সভা শেষে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও গান পরিবেশন করেন স্থানীয় মারমা শিল্পীরা।