আমরাসহ মিয়ানমারের ৩৬ জাতি আছে, ৩৫ জাতি যদি নাগরিক সুবিধা নিয়ে থাকতে পারে, আমরা কেন নাগরিক সুবিধা পাবো না। আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার নাগরিত্বসহ এম্বেসি কার্ড না পেলে মিয়ানমার ফিরে যাবো না। শুক্রবার (৫ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা টেকনাফ জেটি ঘাটে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সেখানকার ‘পরিবেশ-পরিস্থিতি’ দেখে ফিরে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেছেন রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা।
রাখাইন এস্টেট ঘুরে আসা রোহিঙ্গা মো. সেলিম সাংবাদিকদের আরো বলেন, আমরা মিয়ানমারে পৌঁছার পর তাদের তৈরি করা ক্যাম্পে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের আমরা জিজ্ঞাসা করলাম এগুলো কাদের জন্য? মিয়ানমার প্রতিনিধিরা উত্তরে জানান, এসব ক্যাম্প আমাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। আমাদের প্রত্যাবাসন করা হলে এসব ক্যাম্পে রাখা হবে। তখন আমরা তাদের (মিয়ানমার প্রতিনিধিদের) বললাম- আমরা ক্যাম্পে কেন থাকবো? আমরা এ দেশের (মিয়ানমারের) নাগরিক আমরা আমাদের নিজেদের বাড়ি-ঘরে ফেরত যাবো।
রাখাইনদের এমন বক্তব্যের জবাবে মিয়ানমার প্রতিনিধিরা নাগরিকত্ব কার্ড সরবরাহ করবে না বলে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল। আর পূর্ণ নাগরিকত্ব ছাড়া মিয়ানমার যাওয়া মানে অতিথি হয়ে থাকা। এমনটি হলে তারা যেকোনো মূহুর্তে আবার রোহিঙ্গাদের বের করে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেন রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সদস্য মো. সেলিম।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, শুক্রবার (৫ মে) সকালে আমরা ২০ সদস্যের রোহিঙ্গা দল নিয়ে মিয়ানমার মংডু টাউনশিপে যাই। সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরিকৃত ঘরগুলো আমাদেরকে ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে। আমাদের সঙ্গে দেখেছে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরাও। এর আগে বাংলাদেশে আসা মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলের কাছে আমরা প্রস্তাব রেখেছিলাম যারা প্রত্যাবাসিত হবে তাদের জন্য প্রত্যাবাসন পরবর্তী কি অ্যারেঞ্জমেন্ট রয়েছে তা যেন রোহিঙ্গাদের স্ব চক্ষে দেখানো হয়। তারা আমাদের সে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে এবং সবকিছু দেখিয়েছে।
আরআরআরসি আরো বলেন, আমাদের মন্দ লাগেনি। সবকিছু গোছানো মনে হয়েছে। তবে, মূলত এগুলো বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্যই, আমরা তো তাদের প্রত্যাবাসনের আয়োজক মাত্র। যারা প্রত্যাবাসিত হবে তাদেরকে এগুলো দেখানোই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। মিয়ানমার প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গাদলকে এসব বিষয়ে ব্রিফিং করেছে। তারা (রোহিঙ্গারা) কী দেখেছে তারাই বলতে পারবে। পরবর্তী পদক্ষেপ গণমাধ্যমকে অবশ্যই জানানো হবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান- শুক্রবার (৫ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় টেকনাফের নাফনদের জেটি ঘাট হয়ে প্রতিনিধিদলটি মিয়ানমারের মংডু শহরের উদ্দেশে টেকনাফ ত্যাগ করেন।