“খোঁজ নিচ্ছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি” এই বাক্যেই যেন শেষ উখিয়া বনবিভাগের দায়িত্ব

কনক বড়ুয়া জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার
“খোঁজ নিচ্ছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি” এই বাক্যেই যেন শেষ উখিয়া বনবিভাগের দায়িত্ব
বনবিভাগের দখলকৃত জায়গা

উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের খেওয়াছড়ি আদর্শ গ্রাম এলাকায় দুই ভাইয়ের মধ্যে চলছে সংরক্ষিত সরকারি বনভূমি দখল করার প্রতিযোগিতা। এককালে যেখানে গভীর অরণ্য ছিল এখন সেখানে গড়ে উঠেছে বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। আর এসব বনভূমি দখল ঠেকানোর পদক্ষেপ নিতে ব্যার্থ উখিয়ার বনবিভাগ। বেশ কয়েকবার বনবিভাগকে অবগত করলেও নেইনি কোন ব্যবস্থা।

হলদিয়ার আদর্শ গ্রাম এলাকার মৃত মেহের আলীর ছেলে ছালেহ আহম্মদ ও তার ছোট ভাই আবুল শামা প্রকাশ বঙ্গবন্ধুর (২৮) মধ্যে চলছে এই সরকারি বনভূমি দখলের প্রতিযোগিতা। ভোগদখল নিয়ে তাদের মধ্যে প্রতিদিন চলছে ঝগড়া, মারামারি ও বিচার। যদিও ১৯২৭ সালের সংশোধিত বন আইন এবং ২০১২ সালের বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনে সংরক্ষিত বনে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বা পরিচালনা না করার নির্দেশ রয়েছে।

এসব সরকারি জায়গা দখল করে ঘর বাড়ি ও দালান নির্মাণ করলেও সম্প্রতি স্থাপন করেছে গভীর নলকূপ। শুধু তাই নয়, ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন দোকানে অর্ধশতাধিক বিদ্যৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে বনবিভাগের এই জায়গায়।

বছরের পর বছর ক্রমান্বয়ে বনভূমিতে পাহাড় কেটে পাকা স্থাপনা, রাস্তা নির্মাণ, নলকূপ স্থাপন ও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হলেও বন বিভাগ ছিল নিরব। এই বিপুল পরিমাণ বনভূমি রাতারাতি বেদখল হয়ে যায়নি। বছরের পর বছর ধরে এই বেআইনি ও পরিবেশ ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চলে এসেছে। বনভূমি বেদখল হয়ে যাওয়া যেমন উদ্বেগের, এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালনে অবহেলা তেমনই দুর্ভাগ্যজনক।

হলদিয়ার আদর্শ গ্রামের সংরক্ষিত বনবিভাগের জায়গায় দেখা যায়, অস্থায়ী ঘর বা বস্তি নয়, পুরো পাকা দালান তৈরি হয়েছে বন বিভাগের হলদিয়া বিটের এই জায়গায়। দালানটি তুলছেন, কথিত মেম্বার আজিজের ছোট ভাই কমল নামের একজন।

এই সরকারি জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে আবুল শামা ওরফে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের উপর কয়েকদপা হামলা চালিয়েছে ছালেহ আহম্মদ ও তার ছেলেরা। আবুল শামার দাবি- কমলের নির্দেশেই এসব হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে তার ভাই ছালেহ আহম্মদ। সম্প্রতি বেশ কয়েকবার হামলা চালিয়েছে আবুল শামার উপর। আবুল শামা এ ব্যাপারে উখিয়া থানায় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর কয়েকবার অভিযোগও করেছেন বলে জানা যায়।

এদিকে আবুল শামা, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও স্থানীয়রা দালানটি কমলের দাবি করলেও কমলের কাছ থেকে জানতে চাইলে কমল অস্বীকার করেন। “কমলের জায়গা না হলে ছালেহ আহম্মদের ছেলেদের দিয়ে আবুল শামার উপর কেন হামলা চালিয়েছে?” এমন প্রশ্নের জবাবেও তিনি অস্বীকার করে বলেন ঐখানে আমার কোন দালান নাই বা জায়গা নাই। আর আমি কাউকে হামলা করাইনি। তবে স্থানীয়রা বলছে- কমল দীর্ঘদিন ধরে ঐ দালানে থাকা দোকান গুলো থেকে মাসিক ভাড়া আদায় করে থাকে।

এ ব্যাপারে উখিয়া বন রেঞ্জের হলদিয়াপালং বনবিট কর্মকর্তা ছৈয়দ আলম বলেন- ‘আমরা গিয়ে তাদের কাজ বন্ধ করে আসছি। যদি আমাদের নির্দেশনা না মেনে কাজ করে তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো’। এরপরে গণমাধ্যমকর্মীরা সরেজমিনে গেলে দেখা যায় গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করেছে বনবিভাগের কথা না মেনে। তবে এখনো কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি বনবিভাগের পক্ষ থেকে। যদিও বিট অফিসার বলেছে নির্দেশনা না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।

বনবিভাগের জায়গায় গভীর নলকূপ বা দালান স্থাপন করা যায় কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে উখিয়া রেঞ্জ অফিসার গাজী শফিউল বলেন- বনবিভাগের জায়গায় এসব স্থাপন করা কোনভাবেই বৈধ না, সম্পূর্ণ অবৈধ। যদি আমাদের অজান্তে করেই থাকে তাহলে এটি অপরাধ। আমরা বনবিভাগ এ বিষয়ে উচ্ছেদ মামলা করবো, নিয়ম অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

হলদিয়ার খেওয়াছড়িতে গভীর নলকূপ স্থাপন ও ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন দোকান গড়ে উঠার ব্যাপারে রেঞ্জ অফিসার গাজী শফিউলকে বেশ কয়েকবার জানালে- “খোঁজ নিচ্ছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি” বলেই নিরব হয়ে যান। এই বাক্যেই যেন শেষ হয়ে যায় বনবিভাগের দায়িত্ব।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রিগান চৌধুরী সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন- বনবিভাগের জায়গায় গড়ে তুলা দালান আর দালানের পাশের জায়গাড়িও কমল ক্রয় করেছে। জায়গাটি নিয়ে আবুল শামার সাথে ছালেহ আহম্মদ আর কমলের মধ্যে এক পর্যায়ে ভোগদখল নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত আছি। তবে এখন তারা মীমাংসা করেছে বলে শুনেছি।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

“খোঁজ নিচ্ছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি” এই বাক্যেই যেন শেষ উখিয়া বনবিভাগের দায়িত্ব

“খোঁজ নিচ্ছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি” এই বাক্যেই যেন শেষ উখিয়া বনবিভাগের দায়িত্ব
বনবিভাগের দখলকৃত জায়গা

উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের খেওয়াছড়ি আদর্শ গ্রাম এলাকায় দুই ভাইয়ের মধ্যে চলছে সংরক্ষিত সরকারি বনভূমি দখল করার প্রতিযোগিতা। এককালে যেখানে গভীর অরণ্য ছিল এখন সেখানে গড়ে উঠেছে বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। আর এসব বনভূমি দখল ঠেকানোর পদক্ষেপ নিতে ব্যার্থ উখিয়ার বনবিভাগ। বেশ কয়েকবার বনবিভাগকে অবগত করলেও নেইনি কোন ব্যবস্থা।

হলদিয়ার আদর্শ গ্রাম এলাকার মৃত মেহের আলীর ছেলে ছালেহ আহম্মদ ও তার ছোট ভাই আবুল শামা প্রকাশ বঙ্গবন্ধুর (২৮) মধ্যে চলছে এই সরকারি বনভূমি দখলের প্রতিযোগিতা। ভোগদখল নিয়ে তাদের মধ্যে প্রতিদিন চলছে ঝগড়া, মারামারি ও বিচার। যদিও ১৯২৭ সালের সংশোধিত বন আইন এবং ২০১২ সালের বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনে সংরক্ষিত বনে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বা পরিচালনা না করার নির্দেশ রয়েছে।

এসব সরকারি জায়গা দখল করে ঘর বাড়ি ও দালান নির্মাণ করলেও সম্প্রতি স্থাপন করেছে গভীর নলকূপ। শুধু তাই নয়, ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন দোকানে অর্ধশতাধিক বিদ্যৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে বনবিভাগের এই জায়গায়।

বছরের পর বছর ক্রমান্বয়ে বনভূমিতে পাহাড় কেটে পাকা স্থাপনা, রাস্তা নির্মাণ, নলকূপ স্থাপন ও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হলেও বন বিভাগ ছিল নিরব। এই বিপুল পরিমাণ বনভূমি রাতারাতি বেদখল হয়ে যায়নি। বছরের পর বছর ধরে এই বেআইনি ও পরিবেশ ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চলে এসেছে। বনভূমি বেদখল হয়ে যাওয়া যেমন উদ্বেগের, এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালনে অবহেলা তেমনই দুর্ভাগ্যজনক।

হলদিয়ার আদর্শ গ্রামের সংরক্ষিত বনবিভাগের জায়গায় দেখা যায়, অস্থায়ী ঘর বা বস্তি নয়, পুরো পাকা দালান তৈরি হয়েছে বন বিভাগের হলদিয়া বিটের এই জায়গায়। দালানটি তুলছেন, কথিত মেম্বার আজিজের ছোট ভাই কমল নামের একজন।

এই সরকারি জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে আবুল শামা ওরফে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের উপর কয়েকদপা হামলা চালিয়েছে ছালেহ আহম্মদ ও তার ছেলেরা। আবুল শামার দাবি- কমলের নির্দেশেই এসব হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে তার ভাই ছালেহ আহম্মদ। সম্প্রতি বেশ কয়েকবার হামলা চালিয়েছে আবুল শামার উপর। আবুল শামা এ ব্যাপারে উখিয়া থানায় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর কয়েকবার অভিযোগও করেছেন বলে জানা যায়।

এদিকে আবুল শামা, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও স্থানীয়রা দালানটি কমলের দাবি করলেও কমলের কাছ থেকে জানতে চাইলে কমল অস্বীকার করেন। “কমলের জায়গা না হলে ছালেহ আহম্মদের ছেলেদের দিয়ে আবুল শামার উপর কেন হামলা চালিয়েছে?” এমন প্রশ্নের জবাবেও তিনি অস্বীকার করে বলেন ঐখানে আমার কোন দালান নাই বা জায়গা নাই। আর আমি কাউকে হামলা করাইনি। তবে স্থানীয়রা বলছে- কমল দীর্ঘদিন ধরে ঐ দালানে থাকা দোকান গুলো থেকে মাসিক ভাড়া আদায় করে থাকে।

এ ব্যাপারে উখিয়া বন রেঞ্জের হলদিয়াপালং বনবিট কর্মকর্তা ছৈয়দ আলম বলেন- ‘আমরা গিয়ে তাদের কাজ বন্ধ করে আসছি। যদি আমাদের নির্দেশনা না মেনে কাজ করে তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো’। এরপরে গণমাধ্যমকর্মীরা সরেজমিনে গেলে দেখা যায় গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করেছে বনবিভাগের কথা না মেনে। তবে এখনো কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি বনবিভাগের পক্ষ থেকে। যদিও বিট অফিসার বলেছে নির্দেশনা না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।

বনবিভাগের জায়গায় গভীর নলকূপ বা দালান স্থাপন করা যায় কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে উখিয়া রেঞ্জ অফিসার গাজী শফিউল বলেন- বনবিভাগের জায়গায় এসব স্থাপন করা কোনভাবেই বৈধ না, সম্পূর্ণ অবৈধ। যদি আমাদের অজান্তে করেই থাকে তাহলে এটি অপরাধ। আমরা বনবিভাগ এ বিষয়ে উচ্ছেদ মামলা করবো, নিয়ম অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

হলদিয়ার খেওয়াছড়িতে গভীর নলকূপ স্থাপন ও ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন দোকান গড়ে উঠার ব্যাপারে রেঞ্জ অফিসার গাজী শফিউলকে বেশ কয়েকবার জানালে- “খোঁজ নিচ্ছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি” বলেই নিরব হয়ে যান। এই বাক্যেই যেন শেষ হয়ে যায় বনবিভাগের দায়িত্ব।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রিগান চৌধুরী সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন- বনবিভাগের জায়গায় গড়ে তুলা দালান আর দালানের পাশের জায়গাড়িও কমল ক্রয় করেছে। জায়গাটি নিয়ে আবুল শামার সাথে ছালেহ আহম্মদ আর কমলের মধ্যে এক পর্যায়ে ভোগদখল নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত আছি। তবে এখন তারা মীমাংসা করেছে বলে শুনেছি।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত