গাড়ির কালো ধোঁয়ায় যেসব ক্ষতি হয়

,
গাড়ির কালো ধোঁয়ায় যেসব ক্ষতি হয়

যানবাহন বা গাড়ির কালো ধোঁয়া রাস্তায় বের হলে বর্তমানে অনেক বেশি পরিমাণে দেখা যায়। গাড়ি থেকে সৃষ্ট হওয়া এই কালো ধোঁয়া অনেকটাই অসস্তিকর পরিবেশ তৈরি করে। এই কালো ধোঁয়া সব বয়সের মানুষকে শারীরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কালো ধোঁয়ার সঙ্গে বস্তুকণা, সালফার ডাই অক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড, সিসাসহ অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান বাতাসে ছড়িয়ে পরে। এই উপাদানের ফলে বাতাস দ্রুত দূষিত হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, কালো ধোঁয়ায় থাকা বস্তুকণা ও সালফার ডাই অক্সাইডের প্রভাবে ফুসফুস, কিডনি জটিলতা ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি রয়েছে অনেক বেশি।

এছাড়াও, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড ও সিসার কারণে শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহ, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও শিশুদের বুদ্ধি বৃদ্ধি পেতে বাধা সৃষ্টি করে।

বর্তমানে বিশ্বে ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। আমাদের দেশেও এ ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে। মূলত ধূমপান, তামাক-জর্দা ও গুল ব্যবহারে এ ক্যানসার বেশি হয়। তবে এছাড়াও পরিবেশ ও বায়ুদূষণেও ফুসফুস ক্যানসার দেখা দিতে পারে। এমনকি রাস্তায় যানবাহনের থেকে যে কালো ধোঁয়া ছড়ায় তাতেও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় অনেক।

বর্তমানে গাড়ির কালো ধোঁয়ার পাওয়া যায় একটা বড় উপাদান কার্বন মনোক্সাইড। সেটা রক্তে মিশলে রক্তে কার্বোক্সি হিমোগ্লোবিন তৈরি করে। যার পরিমাণ রক্তে বেড়ে গেলে মানুষের মৃত্যুও পর্যন্ত ঘটতে পারে।

এ ছাড়া কার্বন মনোক্সাইড মস্তিস্ক, হৃদ্‌পিণ্ড সহ শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির ক্ষতি করে থাকে। ওজোন শরীরে প্রবেশ করলে ফুসফুসের প্রদাহ এবং কাশির সৃষ্টি করে। নাইট্রোজেনের বিভিন্ন অক্সাইড ফুসফুসীয় সংক্রমণের অনাক্রমতা (ইমিউনিটি) কমিয়ে দেয়। ফলে, নিউমোনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো অসুখ সহজেই শরীরে বাসা বাঁধতে পারে।

রাস্তা বের হলেই দেখা যাবে অনেক গাড়ি আছে যেগুলো কালো ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে চলাচল করে যাচ্ছে। এই কালো ধোঁয়া নাকমুখ দিয়ে প্রবেশ করছে আপনার। এসব বাস, ট্যাক্সি কিংবা সিএনজি তে চড়লে কিছুক্ষণ পর দেখা যাবে চোখ জ্বালা করতে শুরু করেছে, এমনকি বমিভাব হচ্ছে বা মাথা ধরেছে। বাসে কিছুক্ষণ বসে থাকার পর মনটা মুক্ত বাতাসের জন্য ছটফট করবে। এমনভাবে অসংখ্য নাগরিক কালো ধোঁয়ার শিকার হচ্ছেন। গাড়ির কালো ধোঁয়া বের হয় সাধারণ জ্বালানির অসম্পূর্ণ দহন থেকে। বিশেষ করে গাড়ির ইঞ্জিন পুরনো হলে জ্বালানি সম্পূর্ণ দহন করতে পারে না বলে আগে সে সব গ্যাস বের হয়ে বাতাসে মিশে যায়। গাড়ি চলার সময় যাত্রীরা গ্যাসের গন্ধ পান।

যানবাহন থেকে শতকরা ৮০ ভাগ কার্বন মনোঅক্সাইড বাতাসে মেশে। ট্রাক, ট্যাক্সি সহ অনেক বাস আছে যা পেট্রলের সঙ্গে মবিল মিশিয়ে চালানো হয় খরচ কমে বলে। তাতে করে ধোঁয়ার সৃষ্টি হয় প্রচুর। সেই ধোঁয়ায় কোনো সুস্থ মানুষ অসুস্থ না হয়ে পারে না। কালো ধোঁয়ায় বিভিন্ন উপাদান যেমন কার্বন মনোঅক্সাইড গ্যাস নিঃশ্বাসের সঙ্গে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে থাকে। রক্তের লোহিত কণিকা হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে মিশে কার্বন ফ্রি হিমোগ্লোবিন তৈরি করে। ফলে হিমোগ্লোবিনে অক্সিজেন বহন ক্ষমতা নষ্ট হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে সক্ষম হয়।

পরিশেষে, এই নীরব ঘাতক কালো ধোঁয়া রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত। কেননা এর থেকে সৃষ্টি হয় নানা রকম শারিরীক জটিলতা। এছাড়া ও এই কালো ধোঁয়া থেকে রক্ষা পেতে আমাদের উচিত মাস্ক ব্যবহার করা। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় অবশ্যই মাস্ক পরিধান করে বের হতে হবে। তবেই আপনি রক্ষা পাবেন এর থেকে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

গাড়ির কালো ধোঁয়ায় যেসব ক্ষতি হয়

গাড়ির কালো ধোঁয়ায় যেসব ক্ষতি হয়

যানবাহন বা গাড়ির কালো ধোঁয়া রাস্তায় বের হলে বর্তমানে অনেক বেশি পরিমাণে দেখা যায়। গাড়ি থেকে সৃষ্ট হওয়া এই কালো ধোঁয়া অনেকটাই অসস্তিকর পরিবেশ তৈরি করে। এই কালো ধোঁয়া সব বয়সের মানুষকে শারীরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কালো ধোঁয়ার সঙ্গে বস্তুকণা, সালফার ডাই অক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড, সিসাসহ অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান বাতাসে ছড়িয়ে পরে। এই উপাদানের ফলে বাতাস দ্রুত দূষিত হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, কালো ধোঁয়ায় থাকা বস্তুকণা ও সালফার ডাই অক্সাইডের প্রভাবে ফুসফুস, কিডনি জটিলতা ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি রয়েছে অনেক বেশি।

এছাড়াও, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড ও সিসার কারণে শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহ, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও শিশুদের বুদ্ধি বৃদ্ধি পেতে বাধা সৃষ্টি করে।

বর্তমানে বিশ্বে ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। আমাদের দেশেও এ ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে। মূলত ধূমপান, তামাক-জর্দা ও গুল ব্যবহারে এ ক্যানসার বেশি হয়। তবে এছাড়াও পরিবেশ ও বায়ুদূষণেও ফুসফুস ক্যানসার দেখা দিতে পারে। এমনকি রাস্তায় যানবাহনের থেকে যে কালো ধোঁয়া ছড়ায় তাতেও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় অনেক।

বর্তমানে গাড়ির কালো ধোঁয়ার পাওয়া যায় একটা বড় উপাদান কার্বন মনোক্সাইড। সেটা রক্তে মিশলে রক্তে কার্বোক্সি হিমোগ্লোবিন তৈরি করে। যার পরিমাণ রক্তে বেড়ে গেলে মানুষের মৃত্যুও পর্যন্ত ঘটতে পারে।

এ ছাড়া কার্বন মনোক্সাইড মস্তিস্ক, হৃদ্‌পিণ্ড সহ শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির ক্ষতি করে থাকে। ওজোন শরীরে প্রবেশ করলে ফুসফুসের প্রদাহ এবং কাশির সৃষ্টি করে। নাইট্রোজেনের বিভিন্ন অক্সাইড ফুসফুসীয় সংক্রমণের অনাক্রমতা (ইমিউনিটি) কমিয়ে দেয়। ফলে, নিউমোনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো অসুখ সহজেই শরীরে বাসা বাঁধতে পারে।

রাস্তা বের হলেই দেখা যাবে অনেক গাড়ি আছে যেগুলো কালো ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে চলাচল করে যাচ্ছে। এই কালো ধোঁয়া নাকমুখ দিয়ে প্রবেশ করছে আপনার। এসব বাস, ট্যাক্সি কিংবা সিএনজি তে চড়লে কিছুক্ষণ পর দেখা যাবে চোখ জ্বালা করতে শুরু করেছে, এমনকি বমিভাব হচ্ছে বা মাথা ধরেছে। বাসে কিছুক্ষণ বসে থাকার পর মনটা মুক্ত বাতাসের জন্য ছটফট করবে। এমনভাবে অসংখ্য নাগরিক কালো ধোঁয়ার শিকার হচ্ছেন। গাড়ির কালো ধোঁয়া বের হয় সাধারণ জ্বালানির অসম্পূর্ণ দহন থেকে। বিশেষ করে গাড়ির ইঞ্জিন পুরনো হলে জ্বালানি সম্পূর্ণ দহন করতে পারে না বলে আগে সে সব গ্যাস বের হয়ে বাতাসে মিশে যায়। গাড়ি চলার সময় যাত্রীরা গ্যাসের গন্ধ পান।

যানবাহন থেকে শতকরা ৮০ ভাগ কার্বন মনোঅক্সাইড বাতাসে মেশে। ট্রাক, ট্যাক্সি সহ অনেক বাস আছে যা পেট্রলের সঙ্গে মবিল মিশিয়ে চালানো হয় খরচ কমে বলে। তাতে করে ধোঁয়ার সৃষ্টি হয় প্রচুর। সেই ধোঁয়ায় কোনো সুস্থ মানুষ অসুস্থ না হয়ে পারে না। কালো ধোঁয়ায় বিভিন্ন উপাদান যেমন কার্বন মনোঅক্সাইড গ্যাস নিঃশ্বাসের সঙ্গে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে থাকে। রক্তের লোহিত কণিকা হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে মিশে কার্বন ফ্রি হিমোগ্লোবিন তৈরি করে। ফলে হিমোগ্লোবিনে অক্সিজেন বহন ক্ষমতা নষ্ট হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে সক্ষম হয়।

পরিশেষে, এই নীরব ঘাতক কালো ধোঁয়া রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত। কেননা এর থেকে সৃষ্টি হয় নানা রকম শারিরীক জটিলতা। এছাড়া ও এই কালো ধোঁয়া থেকে রক্ষা পেতে আমাদের উচিত মাস্ক ব্যবহার করা। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় অবশ্যই মাস্ক পরিধান করে বের হতে হবে। তবেই আপনি রক্ষা পাবেন এর থেকে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত