প্রস্তুত বিএনপি, কী থাকছে একদফার ঘোষণায়?

ডেস্ক এডিটর এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
প্রস্তুত বিএনপি, কী থাকছে একদফার ঘোষণায়?
বিএনপির লোগো। ফাইল ছবি

জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দাবি আদায়ে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত বিএনপি। জোট ও সমমনা দলগুলোকে পাশে রেখে এবার রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে সরকারকে বিদায় দিয়ে চায় তারা। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে দলটি। আগামীকাল বুধবার ঢাকায় সমাবেশ থেকে একদফা আন্দোলনের ঘোষণা দেবে রাজপথের এই বিরোধী দল।

নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠেয় ওই সমাবেশে বিশাল শোডাউনের প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। একদফার ঘোষণার দিনই নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি জানান দিতে চান তারা। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে দল গোছানো ও নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধ সেই বার্তাও দেওয়া হবে কাল।

একই সঙ্গে নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে সৃষ্ট সংকট বিদেশিদের কাছে ফলাও করে তুলে ধরতে চায় বিএনপি। তাই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফরকালেই ব্যাপক শোডাউনের মাধ্যমে একদফার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে দলটি। সরকার পতনে ৩৬টি দল রাজপথে নেমেছে সেই বার্তাও তাদের দিতে চায়।

এদিকে একইদিন যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা দল ও জোট আলাদা আলাদা মঞ্চ থেকে সরকার পতনের একদফার ঘোষণা দেবে। তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে সমাবেশের স্থান ও সময় চূড়ান্ত করেছে। বিগত সময়ে সমমনা দলগুলো যেখানে কর্মসূচি পালন করেছে এবারও তারা প্রায় একই স্থান থেকেই একদফার ঘোষণা দেবেন। তবে জামায়াতে ইসলামী ওইদিন একদফা ঘোষণা দেবে কিনা তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। দলটির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, ওইদিন ঘোষণা না দিলেও তারা একদফাকে সমর্থন জানাবে। একইদিন না হলেও দাবি আদায়ে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে তারা।

জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী সমমনা ১১ দলীয় জোটের সমন্বয়ক এনপিপির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ গণমাধ্যমকে বলেন, বুধবার বিজয়নগর কালভার্ট রোডে সমাবেশ থেকে একদফার ঘোষণা করা হবে। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল করে কর্মসূচি শেষ করা হবে।

একদফা ঘোষণার আগে সোমবার গণতন্ত্র মঞ্চ, এলডিপি ও লেবার পার্টির সঙ্গে মতবিনিময় করেছে বিএনপি। সেখানে একদফার পাশাপাশি রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়। এরপর বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বসে একদফার কর্মসূচি চূড়ান্ত করবেন। কর্মসূচি নিয়ে দুই ধরনের মত রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, বিদেশিরা দেশে থাকতে ঘেরাওয়ের মতো বড় ধরনের কর্মসূচি দেওয়া উচিত। তবে এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে অনেকে বলছেন, শুরুতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার পর আবার বিক্ষোভ সমাবেশ কিংবা অনশন দেওয়া হলে তা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমান সংকট সমাধানের একমাত্র পথ হচ্ছে এ সরকারের পতন। সেই লক্ষ্যে কয়েকদিনের মধ্যে একদফার আন্দোলন ঘোষণা করা হবে। সাধারণ জনগণ এবার সেই আন্দোলনে অংশ নেবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বর্তমান অবৈধ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। সংসদ বিলুপ্ত করে একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকারকে জনগণ বাধ্য করবে।

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যাপক শোডাউনের মধ্য দিয়ে সরকার পতনের একদফা ঘোষণা করা হবে। সমাবেশ সফলে সংশ্লিষ্ট নেতারা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু নেতাকর্মী নয়, সাধারণ মানুষও যাতে ওই সমাবেশে যোগ দেয় সেই লক্ষ্যেও কাজ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, জনগণ যেমন সব ক্ষমতার উৎস, তেমনি গণআন্দোলনের মুখে কোনো স্বৈরাচার সরকার টিকতে পারেনি। গণআন্দোলনের মুখে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরে যাব না-ওইদিন সবাই এমন শপথই নেবেন।

সরকারের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, মামলা-হামলার প্রতিবাদে কয়েক বছর ধরে রাজপথে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি। স্থানীয় সরকার ও উপনির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে দেড় বছর ধরে সব ধরনের ভোট বর্জন করে আসছে দলটি। দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় এমনটা জানিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানিয়ে আসছে দলটি। দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়া, এমনকি তা প্রতিহতের ঘোষণা দেওয়া হয়। সরকার দাবি মেনে না নিলে রাজপথে ফয়সালার হুঁশিয়ারি দেন তারা। সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে ২০ দলীয় জোট ভেঙে দিয়ে ডান-বাম ও ইসলামপন্থি দলগুলো নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়া ও যুগপৎ আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। ২৪ ডিসেম্বর প্রথম কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে সমমনা দলগুলো। এরপর ধারাবাহিকভাবে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা। এখন পর্যন্ত ৩৬টি দল বিএনপির সঙ্গে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

প্রস্তুত বিএনপি, কী থাকছে একদফার ঘোষণায়?

প্রস্তুত বিএনপি, কী থাকছে একদফার ঘোষণায়?
বিএনপির লোগো। ফাইল ছবি

জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দাবি আদায়ে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত বিএনপি। জোট ও সমমনা দলগুলোকে পাশে রেখে এবার রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে সরকারকে বিদায় দিয়ে চায় তারা। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে দলটি। আগামীকাল বুধবার ঢাকায় সমাবেশ থেকে একদফা আন্দোলনের ঘোষণা দেবে রাজপথের এই বিরোধী দল।

নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠেয় ওই সমাবেশে বিশাল শোডাউনের প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। একদফার ঘোষণার দিনই নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি জানান দিতে চান তারা। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে দল গোছানো ও নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধ সেই বার্তাও দেওয়া হবে কাল।

একই সঙ্গে নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে সৃষ্ট সংকট বিদেশিদের কাছে ফলাও করে তুলে ধরতে চায় বিএনপি। তাই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফরকালেই ব্যাপক শোডাউনের মাধ্যমে একদফার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে দলটি। সরকার পতনে ৩৬টি দল রাজপথে নেমেছে সেই বার্তাও তাদের দিতে চায়।

এদিকে একইদিন যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা দল ও জোট আলাদা আলাদা মঞ্চ থেকে সরকার পতনের একদফার ঘোষণা দেবে। তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে সমাবেশের স্থান ও সময় চূড়ান্ত করেছে। বিগত সময়ে সমমনা দলগুলো যেখানে কর্মসূচি পালন করেছে এবারও তারা প্রায় একই স্থান থেকেই একদফার ঘোষণা দেবেন। তবে জামায়াতে ইসলামী ওইদিন একদফা ঘোষণা দেবে কিনা তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। দলটির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, ওইদিন ঘোষণা না দিলেও তারা একদফাকে সমর্থন জানাবে। একইদিন না হলেও দাবি আদায়ে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে তারা।

জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী সমমনা ১১ দলীয় জোটের সমন্বয়ক এনপিপির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ গণমাধ্যমকে বলেন, বুধবার বিজয়নগর কালভার্ট রোডে সমাবেশ থেকে একদফার ঘোষণা করা হবে। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল করে কর্মসূচি শেষ করা হবে।

একদফা ঘোষণার আগে সোমবার গণতন্ত্র মঞ্চ, এলডিপি ও লেবার পার্টির সঙ্গে মতবিনিময় করেছে বিএনপি। সেখানে একদফার পাশাপাশি রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়। এরপর বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বসে একদফার কর্মসূচি চূড়ান্ত করবেন। কর্মসূচি নিয়ে দুই ধরনের মত রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, বিদেশিরা দেশে থাকতে ঘেরাওয়ের মতো বড় ধরনের কর্মসূচি দেওয়া উচিত। তবে এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে অনেকে বলছেন, শুরুতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার পর আবার বিক্ষোভ সমাবেশ কিংবা অনশন দেওয়া হলে তা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমান সংকট সমাধানের একমাত্র পথ হচ্ছে এ সরকারের পতন। সেই লক্ষ্যে কয়েকদিনের মধ্যে একদফার আন্দোলন ঘোষণা করা হবে। সাধারণ জনগণ এবার সেই আন্দোলনে অংশ নেবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বর্তমান অবৈধ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। সংসদ বিলুপ্ত করে একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকারকে জনগণ বাধ্য করবে।

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যাপক শোডাউনের মধ্য দিয়ে সরকার পতনের একদফা ঘোষণা করা হবে। সমাবেশ সফলে সংশ্লিষ্ট নেতারা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু নেতাকর্মী নয়, সাধারণ মানুষও যাতে ওই সমাবেশে যোগ দেয় সেই লক্ষ্যেও কাজ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, জনগণ যেমন সব ক্ষমতার উৎস, তেমনি গণআন্দোলনের মুখে কোনো স্বৈরাচার সরকার টিকতে পারেনি। গণআন্দোলনের মুখে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরে যাব না-ওইদিন সবাই এমন শপথই নেবেন।

সরকারের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, মামলা-হামলার প্রতিবাদে কয়েক বছর ধরে রাজপথে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি। স্থানীয় সরকার ও উপনির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে দেড় বছর ধরে সব ধরনের ভোট বর্জন করে আসছে দলটি। দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় এমনটা জানিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানিয়ে আসছে দলটি। দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়া, এমনকি তা প্রতিহতের ঘোষণা দেওয়া হয়। সরকার দাবি মেনে না নিলে রাজপথে ফয়সালার হুঁশিয়ারি দেন তারা। সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে ২০ দলীয় জোট ভেঙে দিয়ে ডান-বাম ও ইসলামপন্থি দলগুলো নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়া ও যুগপৎ আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। ২৪ ডিসেম্বর প্রথম কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে সমমনা দলগুলো। এরপর ধারাবাহিকভাবে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা। এখন পর্যন্ত ৩৬টি দল বিএনপির সঙ্গে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত