এসেছে বর্ষা, নৌকা তৈরির ফাঁকে ভাটিয়ালি সুর

এস এম শরিফুল ইসলাম জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল
এসেছে বর্ষা, নৌকা তৈরির ফাঁকে ভাটিয়ালি সুর

প্রতি বছরের মত এসেছে বর্ষা, খাল বিলে বৃষ্টির পানি। জেলার তিনটি উপজেলায় চলছে নৌকা তৈরির কাজ। চলছে পুরনো নৌকা মেরামতের কাজও। বর্ষা মৌসুম সামনে রেখে নড়াইলের কালিয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছে নৌকার কারিগররা।দিনরাত হাতুড়ি-বাটালের ঠুকঠাক শব্দে মুখর কালিয়ার বড়নাল ও চাচুড়ীসহ বিভিন্ন এলাকা।কাজের ফাঁকে ফাঁকে গুনগুন করে গাইছেন ভাটিয়ালি গান।

এক সময় খাল ও বিল অঞ্চলে নৌকা ছিল যোগাযোগের অন্যতম বাহন। বর্তমানে শুধু বর্ষাকালে নিম্নাঞ্চল ও বন্যাকবলিত এলাকায় মানুষের পারাপার ও কৃষি কাজে নৌকা ব্যবহার হয়। বর্ষা মৌসুমে নিচু এলাকার লোকজনের যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে ওঠে নৌকা। চারদিকে বর্ষায় যখন রাস্তা ঘাট তলিয়ে যায়, তখন নৌকা, কলাগাছের ভেলা হয়ে ওঠে পারাপারের ভরসা।

এ কারণে বিভিন্ন গ্রামে নৌকা তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে। বর্ষাকালে বিল অঞ্চলের জনপদ পানিতে থৈ থৈ করে। ডুবে যায় রাস্তা ঘাট, নদী-নালা, খাল-বিল। যাতায়াত করতে হয় নৌকায়। বর্ষাকালে মৎস্যজীবীরা মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করেন ছোটবড় নৌকা। তাই বর্ষা মৌসুম আসলেই এ অঞ্চলে বেড়ে যায় নৌকার কদর।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সকালে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, কালিয়ার বড়নাল গ্রামে কারিগররা নৌকা তৈরিতে এখন বেশ ব্যস্ত। দিনরাত নৌকা তৈরির কাজ করছে। কাঠের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, আমি পেশায় কাঠ ব্যবসায়ী, আর বর্ষা এলে নৌকা বানাইয়ে বিক্রি করি। ৯ বছর ধরে এ কাজ করছি। এ সময় আমার কারিগররা দম ফেলার সময় পায় না। আমি নিজেও নৌকা তৈরি করি। জুন মাস থেকে নৌকা তৈরি কাজ শুরু হয় আগষ্ট মাসের শেষ পর্যন্ত তৈরি ও বিক্রি হয়। পানি বাড়লে বিক্রি বাড়বে। একটা নৌকা সাত- বারো হাজার টাকায় বিক্রি করি।

এবার ৮ থেকে ৯ হাত দৈর্ঘ্যরে নৌকা সাত-দশ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নৌকা বড় হলে দামও বাড়ে। গত কয়েক দিনে আমি বেশ কয়েকটি নৌকা বিক্রি করেছি। নৌকা ক্রেতা বড়নাল গ্রামের মিন্টু মিয়া জানান, বন্যায় নিচু সড়ক ডুবে যায়। বিলের ধান আনা,পরিবারের সদস্যদের পারাপার করার জন্য ৯ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে নৌকা কিনেছেন। নৌকার কারিগর কাঠমিস্ত্রি শাহাজান মোল্যা জানান, তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রী। বর্ষাকালে ৩ মাস নৌকা তৈরির কাজ করেন। বর্ষায় নৌকা আর বছরের বাকি সময়টা রাজমিস্ত্রীর কাজ করে চলে তার সংসার। একটা নৌকা তৈরি করতে একজনের ২ দিন সময় লাগে। মজুরি পাই ২ হাজার ৫শ টাকা।

নড়াইল বিসিক-এর উপব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সোলায়মান হোসেন বলেন, নৌকা তৈরির কারিগরদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা ও তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ এ শিল্পের উন্নয়নের জন্য যা যা করা দরকার, তা করা হবে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এসেছে বর্ষা, নৌকা তৈরির ফাঁকে ভাটিয়ালি সুর

এসেছে বর্ষা, নৌকা তৈরির ফাঁকে ভাটিয়ালি সুর

প্রতি বছরের মত এসেছে বর্ষা, খাল বিলে বৃষ্টির পানি। জেলার তিনটি উপজেলায় চলছে নৌকা তৈরির কাজ। চলছে পুরনো নৌকা মেরামতের কাজও। বর্ষা মৌসুম সামনে রেখে নড়াইলের কালিয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছে নৌকার কারিগররা।দিনরাত হাতুড়ি-বাটালের ঠুকঠাক শব্দে মুখর কালিয়ার বড়নাল ও চাচুড়ীসহ বিভিন্ন এলাকা।কাজের ফাঁকে ফাঁকে গুনগুন করে গাইছেন ভাটিয়ালি গান।

এক সময় খাল ও বিল অঞ্চলে নৌকা ছিল যোগাযোগের অন্যতম বাহন। বর্তমানে শুধু বর্ষাকালে নিম্নাঞ্চল ও বন্যাকবলিত এলাকায় মানুষের পারাপার ও কৃষি কাজে নৌকা ব্যবহার হয়। বর্ষা মৌসুমে নিচু এলাকার লোকজনের যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে ওঠে নৌকা। চারদিকে বর্ষায় যখন রাস্তা ঘাট তলিয়ে যায়, তখন নৌকা, কলাগাছের ভেলা হয়ে ওঠে পারাপারের ভরসা।

এ কারণে বিভিন্ন গ্রামে নৌকা তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে। বর্ষাকালে বিল অঞ্চলের জনপদ পানিতে থৈ থৈ করে। ডুবে যায় রাস্তা ঘাট, নদী-নালা, খাল-বিল। যাতায়াত করতে হয় নৌকায়। বর্ষাকালে মৎস্যজীবীরা মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করেন ছোটবড় নৌকা। তাই বর্ষা মৌসুম আসলেই এ অঞ্চলে বেড়ে যায় নৌকার কদর।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সকালে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, কালিয়ার বড়নাল গ্রামে কারিগররা নৌকা তৈরিতে এখন বেশ ব্যস্ত। দিনরাত নৌকা তৈরির কাজ করছে। কাঠের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, আমি পেশায় কাঠ ব্যবসায়ী, আর বর্ষা এলে নৌকা বানাইয়ে বিক্রি করি। ৯ বছর ধরে এ কাজ করছি। এ সময় আমার কারিগররা দম ফেলার সময় পায় না। আমি নিজেও নৌকা তৈরি করি। জুন মাস থেকে নৌকা তৈরি কাজ শুরু হয় আগষ্ট মাসের শেষ পর্যন্ত তৈরি ও বিক্রি হয়। পানি বাড়লে বিক্রি বাড়বে। একটা নৌকা সাত- বারো হাজার টাকায় বিক্রি করি।

এবার ৮ থেকে ৯ হাত দৈর্ঘ্যরে নৌকা সাত-দশ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নৌকা বড় হলে দামও বাড়ে। গত কয়েক দিনে আমি বেশ কয়েকটি নৌকা বিক্রি করেছি। নৌকা ক্রেতা বড়নাল গ্রামের মিন্টু মিয়া জানান, বন্যায় নিচু সড়ক ডুবে যায়। বিলের ধান আনা,পরিবারের সদস্যদের পারাপার করার জন্য ৯ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে নৌকা কিনেছেন। নৌকার কারিগর কাঠমিস্ত্রি শাহাজান মোল্যা জানান, তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রী। বর্ষাকালে ৩ মাস নৌকা তৈরির কাজ করেন। বর্ষায় নৌকা আর বছরের বাকি সময়টা রাজমিস্ত্রীর কাজ করে চলে তার সংসার। একটা নৌকা তৈরি করতে একজনের ২ দিন সময় লাগে। মজুরি পাই ২ হাজার ৫শ টাকা।

নড়াইল বিসিক-এর উপব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সোলায়মান হোসেন বলেন, নৌকা তৈরির কারিগরদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা ও তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ এ শিল্পের উন্নয়নের জন্য যা যা করা দরকার, তা করা হবে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত